
লিখে যাচ্ছেন দয়াল সাহা
দয়াল সাহা বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান চিত্রনাট্যকার, যিনি ২০১৭ সালে টেলিভিশন ও ডিজিটাল মিডিয়া জগতে তাঁর যাত্রা শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি নাট্যজগতে নিজের শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তোলেন। আজ পর্যন্ত তিনি ১৪০টিরও বেশি টেলিভিশন নাটক ও ইউটিউব নাটকের চিত্রনাট্য রচনা করেছেন, যা দর্শক মহলে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। তাঁর লেখা গল্পগুলোতে আবেগ, সম্পর্ক, সমাজের বাস্তবতা ও মানুষের মনস্তত্ত্ব নিখুঁতভাবে ফুটে ওঠে, যা দর্শকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।

দয়াল সাহার নাটকের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো তাঁর চরিত্র নির্মাণ। প্রতিটি চরিত্র যেন জীবন্ত, যেন আমাদের চারপাশের কোনো মানুষ। তিনি গল্পে এমনসব চরিত্র সৃষ্টি করেন যারা হাসায়, কাঁদায়, ভাবায়—এবং মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করতেও শেখায়। তাঁর রচনার ভেতরে থাকে জীবনের গভীরতা ও সমাজের প্রতিচ্ছবি। তিনি কখনো হাস্যরস, কখনো রোমান্স, কখনো আবার সামাজিক সংকট ও ট্র্যাজেডির মতো বিষয়গুলো দক্ষভাবে চিত্রায়ন করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়াদা, শুভ বিবাহ, মেঘ মিলন, মৎস্য কন্যা, উইন অর লুজ, স্বপ্ন দেখি আবারো, ভাইব, রিপু, কাছে আসার সময়, স্যার এর বিয়ে, গো টু হেল, এবং মেকআপ গার্ল। এই নাটকগুলো দর্শকের মাঝে যেমন বিনোদন দিয়েছে, তেমনি জীবনের নানা প্রশ্ন ও ভাবনার খোরাকও জুগিয়েছে। “ওয়াদা” নাটকে ভালোবাসা ও প্রতিশ্রুতির টানাপোড়েন যেমন দর্শকের মন ছুঁয়ে গেছে, তেমনি “স্যার এর বিয়ে” নাটকে উঠে এসেছে মজার মোড়কে সমাজের কিছু বাস্তব চিত্র।
দয়াল সাহার কাজের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তাঁর লেখার ধরণ। তিনি সংলাপে ব্যবহার করেন এমন ভাষা যা সহজ, প্রাঞ্জল এবং জীবনঘনিষ্ঠ। তাঁর সংলাপগুলোতে থাকে মাধুর্য, বাস্তবতা ও কখনো কখনো বিদ্রুপের ছোঁয়া। এটাই তাঁর নাটকগুলোকে আলাদা করে তোলে।
বর্তমানে তিনি শুধু টেলিভিশনে নয়, ইউটিউব প্ল্যাটফর্মেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। নতুন প্রজন্মের অনেক দর্শক তাঁর নাটকের মাধ্যমে বাংলা নাট্যজগতের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে তিনি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন এবং ভিন্নধর্মী কনটেন্ট তৈরি করে দর্শকদের মন জয় করছেন।
দয়াল সাহা একজন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। তাঁর সৃষ্টিশীলতা, কর্মনিষ্ঠা ও দর্শকপ্রিয়তা তাঁকে বাংলাদেশি বিনোদন জগতে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। তাঁর লেখনীতে যে আবেগ ও অন্তর্দৃষ্টি মিশে থাকে, তা ভবিষ্যতেও বাংলা নাট্যজগতকে সমৃদ্ধ করে যাবে—এমনটাই প্রত্যাশা করেন দর্শক ও সহকর্মীরা।