Select Page

‘শনিবার বিকেল’ বিতর্ক : প্রচারণা কৌশল নাকি হুজুগ?

‘শনিবার বিকেল’ বিতর্ক : প্রচারণা কৌশল নাকি হুজুগ?

# জাহিদ-তিশার গেটআট নিয়ে শুরু বিতর্ক। যদিও সিনেমায় তাদের চরিত্র সম্পর্কে জানা যায়নি
# ‘শনিবার বিকেল’ নির্মিত হয়েছে হোলি আর্টিজান ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়ে
# অবশ্য ফারুকীর সিনেমা নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রযোজনা সংস্থাকেও বিতর্ক দেওয়ার জন্য কেউ কেউ দায়ী করেন
# তবে ফারুকী বরাবর সিনেমা দেখে মন্তব্যের কথা বলে থাকেন

জাহিদ হাসানের মুখে দাড়ি, কপালে সিজদার দাগ আর হিজাব পরা নুসরাত ইমরোজ তিশা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমার এ লুক প্রকাশ হয়েছে বেশ আগেই। সিনেমাটি বিএমডিবি নির্বাচিত ‘২০১৯ সালের জন্য বিশ সিনেমা‘ তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে।

কিন্তু অদ্ভুতভাবে সিনেমাটি ছাড়পত্র পাওয়ার সাথে সাথেই সমালোচনা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও ‘শনিবার বিকেল’র গল্প নিয়ে আগেই ধারণা দেওয়া হয়েছিল।

কেউ কেউ বলছেন ধর্মকে অবমাননা করতেই জাহিদ-তিশার এমন গেটআপ। অথচ সে ঘটনা অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে- সে হোলি আর্টিজানের ঘটনায় এমন পোশাকের কোনো জঙ্গি দেখা যায়নি। তাদের গেটআপ ছিল হাল জামানার। এ ছাড়া সিনেমায় জাহিদ-তিশার ভূমিকাই অজানা। তবে?

এ নিয়ে মুখও খুললেন ফারুকী। তিনি একটি অনলাইনকে বলেন, এটার উত্তর আমার জানা নাই। আমি শুধু তাদের আহ্বান জানাবো ধৈর্য ও মমতা নিয়ে জীবনটাকে দেখুন।

ইসলাম অবমাননা বিষয়ে উল্টো প্রশ্ন তোলেন দুই-একটি স্থিল দেখে দর্শক কীভাবে নিশ্চিত হলেন ছবিটিতে ইসলাম অবমাননা করা হয়েছে।

ফারুকী ফেসবুকে লেখেন- ” সকলের অবগতির জন্য :

“শনিবার বিকেল” ছবির কিছু স্থিরচিত্র দিয়ে অনলাইনে কিছু মানুষ ভুলভাল এবং মনগড়া ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এইসব বিভ্রান্তির ব্যাপারে আমরা আমাদের দর্শকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। গল্প সম্পর্কে কিছু না জেনে, সিনেমা না দেখেই কেউ কেউ আপন কল্পনায় গল্প তৈরি করে ফেলছেন। তারা বলছেন, সন্ত্রাসীদের মুখে দাড়ি এবং মাথায় হিজাব দিয়ে কি বোঝানো হচ্ছে! আমাদের প্রশ্ন হলো, তারা জাহিদ হাসানের মুখে দাড়ি দেখেই কিভাবে বুঝে ফেললেন তিনি সন্ত্রাসী? দাড়ির সাথে সন্ত্রাসের কী সম্পর্ক ? তিনি তো পুলিশও হতে পারেন!

এখন এক দল মানুষ একেক বার একেক রকম জিনিস কল্পনা করে প্রতিবাদ শুরু করবেন, আর আমরা এসে খোলাসা করতে থাকবো “না ভাই, এটা এরকম না, এটা আসলে এইরকম”? এই করতে করতে এক সময় পুরা গল্পটাই তাদেরকে বলে দেই? কারন তারা তো অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, কষ্ট করে তো আর হলে যাবেন না সিনেমা দেখতে। তাহলে তাদের সুবিধার্থে অনলাইনেই পুরো গল্পটা লিখে দেই আমরা?

যারা এই অপপ্রচার করছেন তাদেরকে বলছি ধৈর্য্য ধারন করে ছবি দেখে তারপর কথা বললে ব্যপারটা স্বাস্থ্যকর হবে।
সকলকে ধন্যবাদ।”

এদিকে ‘শনিবার বিকেল’ নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘ছবিটি ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়েছে, ছবিটির গল্পের সঙ্গে হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনার যথেষ্ট মিল রয়েছে। তবে এ বিষয়ে পরিচালক ভালো বলতে পারবেন। কারণ পরিচালক সরাসরি হোলি আর্টিজান বিষয়ে এই সিনেমায় কিছুই বলেনি, একটি আক্রমণ বুঝিয়েছেন। তবে গল্পটা আসলে একই। কারিগরি দিক থেকে ছবিটি খুবই সমৃদ্ধ।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘এটা ঠিক যে অনেকেই বলছেন ছবিটি হোলি আর্টিজান ঘটনা নিয়ে। আমি বলব, ছবিটি হোলি আর্টিজান ঘটনার অনুপ্রেরণায় নির্মিত। হোলি আর্টিজানে ট্র্যাজেডি যেমন আছে, তেমনি আছে বীরত্বগাথা— এসব আমাদের অনুপ্রেরণা। এটা কোনোভাবেই হোলি আর্টিজান ঘটনা নিয়ে নয়। আমাদের গল্পের চরিত্রগুলোর সঙ্গে হোলি আর্টিজানের ঘটনার কোনো মিল নেই। তবে হোলি আর্টিজানের চরিত্রগুলোর আত্মত্যাগ, কোথাও কোথাও বীরত্বগাথা আছে। এই বীরত্ব এবং আত্মত্যাগ থেকে আমরা উৎসাহিত হয়েছি। আসলে আমি অন্য রকম একটা গল্প বলতে চেয়েছি।’

অবশ্য ফারুকীর সিনেমা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। এর আগে ‘ডুব’ নিয়ে ঘটেছে নানা কাণ্ড। অনেকে একে প্রচারণা স্ট্যান্ট বলে উল্লেখ করেন।

এই ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন ইরেশ যাকের, মামুনুর রশীদ, ইয়াদ হুরানি ও ভারতের কলকাতার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাবে মাস কয়েকের মধ্যেই।

সূত্র : চ্যানেল আই অনলাইন, ফেসবুক  ও প্রথম আলো


মন্তব্য করুন