![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
শাবনূরের প্রথম সিনেমা মুক্তির ২৫ বছর, কী ভাবছেন তিনি?
১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর দেশজুড়ে মুক্তি পায় ‘চাঁদনী রাতে। কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার এহতেশামের এই ছবিটি বক্স অফিসে ভালো করেনি। তবে আলাদা করে নজর কেড়েছিলেন নায়িকা শাবনূর। তৃতীয় সিনেমা জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহের বিপরীতে ‘তুমি আমার’। বাকীটুকু ইতিহাস। সময়ের পালা বদলে তিনি কেবল নিজেকেই ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন দেশের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকাদের অন্যতম।
আজ ১৫ অক্টোবর। সিনেমায় অভিনয়ের ২৫ বছর অর্থাৎ রজত জয়ন্তীতে পা দিয়েছেন শাবনূর। এ দিনে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রে এখনো যথেষ্ট সম্মান নিয়েই আছি আমি। আমার অভিনয় জীবনের পথচলায় আমার প্রত্যেক চলচ্চিত্রের নায়ক, পরিচালক, প্রযোজক, সিনেমাটোগ্রাফার, কাহিনিকার, প্রোডাকশনবয়, ট্রলিম্যান থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে আমার বোন ঝুমুরের কথা উল্লেখ করতেই হয়। সে আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। চলচ্চিত্র পরিবারও আমার সঙ্গে ছিল সব সময়। তাই চলচ্চিত্রের সবাইকে নিয়েই আমি ভালো থাকতে চাই। সবার কাছে দোয়া চাই যতদিন থাকি যেন ভালো থাকতে পারি। আমার একমাত্র ছেলে আইজানের জন্যও দোয়া করবেন।’
শাবনূরের পারিবারিক নাম কাজী শারমিন নাহিদ নুপুর। গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা এহতেশাম তার নাম বদলে রাখেন শাবনূর।
শাবনূর, দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছেন ঢালিউডে। সালমান শাহের নায়িকা হিসেবে শাবনূর পেয়ে গিয়েছিলেন অন্যরকম জনপ্রিয়তা। ঢাকাই ছবিতে সালমান-শাবনূর একটি আবেগের নাম, ভালোবাসার নাম। ১৪টি ছবিতে জুটি হয়েছিলেন তারা। যার বেশিরভাগই ছিলো সুপারহিট। তবে এ জুটির ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ছবিটিকে ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে ব্যবসা সফল সেরা পাঁচটি ছবির একটি হিসেবে মনে করা হয়।
শাবনূর ক্যারিয়ারজুড়ে সালমান ছাড়াও জুটি বেঁধে সফল হয়েছেন রিয়াজ, ফেরদৌস, শাকিল খান, বাপ্পারাজ, আমিন খান, মান্না ও শাকিব খানের সঙ্গে। তবে রিয়াজের সঙ্গে শাবনূরের জুটির আবেদন ছিলো সবার চেয়ে এগিয়ে। সালমান পরবর্তী সময়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি উপহার পেয়েছিলো রিয়াজ-শাবনূর জুটি। অসংখ্য ব্যবসা সফল ছবিতে তারা কাজ করেছেন। তারমধ্যে ‘মন মানে না’, ‘নারীর মন’, ‘বিয়ের ফুল’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিড়ে’, ‘বুক ভরা ভালোবাসা’, ‘কাজের মেয়ে’, ‘মাটির ফুল’, ‘সুন্দরী বধু’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ উল্লেখযোগ্য।
শাবনূর প্রযোজকদের কাছে ছিলেন ভরসার নাম। তাকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে সিনেমা। অনেক নতুন নায়কদের সঙ্গে কাজের ঝুঁকি তিনি নিতে পারতেন। তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছেন শাকিব খানের নায়িকা হয়ে। চলচ্চিত্রপাড়ায় এ গল্প প্রতিষ্ঠিত, দ্বিতীয় নায়ক হিসেবে অভিনয় করা শাকিব খানের রাজকীয় উত্থানের পেছনে শাবনূরের অনেক অবদানই রয়েছে।
’দুই নয়নের আলো’ ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ক্যারিয়ারের প্রথম ও একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাবনূর। তবে নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম প্রিয় ছবি হিসেবে শাবনূর উল্লেখ করেন ‘নিরন্তর’-কে। ২০০৬ সালে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘জনম জনম’ অবলম্বনে এই ছবিটি পরিচালনা করেন আবু সাইয়ীদ।
২৫ বছরের চলচ্চিত্রজীবন, পেছন ফিরে তাকালে কী দেখেন?
দেশের মানুষ এখনো ভালোবাসে, সম্মান করে—এসব কজনের ভাগ্যে জোটে। এই চলচ্চিত্র আমাকে শাবনূর বানিয়েছে। নাম, যশ, খ্যাতি, অর্থ—সবই দিয়েছে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি ১০ বার। আরও কত কত সম্মাননা যে পেয়েছি, তার হিসাব নেই। অনেক প্রিয় মানুষকে হারিয়েছি, তাঁদের অনেকের কথা মনে পড়ে। তবে ইদানীং সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে চলচ্চিত্রে বর্তমান অবস্থা দেখে। কী সুন্দর ছিল আমাদের চলচ্চিত্র। এখন নানা রেষারেষি, কত অপ্রীতিকর ঘটনা এফডিসি ঘিরে। তবে বিশ্বাস করি, এসব কেটে যাবে। চলচ্চিত্রের আকাশেও আবার ঝলমলে সূর্যের দেখা পাব।
আজ কার কথা বেশি মনে পড়ছে?
কখনো ইচ্ছে ছিল না সিনেমার নায়িকা হব। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন গুণী নির্মাতা এহতেশাম। তিনি ছিলেন আমার অভিভাবক। তাঁকে দাদু বলে ডাকতাম। আজকের এই দিনে তাঁর কথাই বেশি মনে পড়ছে। চলচ্চিত্রের কারণে দেশের মানুষ এখনো আমাকে ভালোবাসেন। ২৫ বছর আগে দাদু তা দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমার মধ্যে শাবানা আপুর প্রতিচ্ছবি আছে। একদিন আমার নামও শাবানা আপু, ববিতা আপুদের নামের সঙ্গে উচ্চারিত হবে। তা-ই তো হচ্ছে। অভিনয় দিয়ে চেষ্টা করেছি মানুষের মন জয়ের, জানি না, কতটা পেরেছি।
সূত্র : জাগো নিউজ ও প্রথম আলো।