![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
সফল চলচ্চিত্রগ্রাহক থেকে প্রযোজক-পরিচালক বেবী ইসলাম
ঢাকাই সিনেমায় অন্যতম মেধাবী চলচ্চিত্রগ্রাহক বেবী ইসলাম। তার পারিবারিক নাম আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি ১৯২৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১০ সালের ২৪ মে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/05/baby_islam_bmdb_image.jpg?resize=720%2C960&ssl=1)
বেবীর পৈত্রিক বাড়ি চুয়াডাঙ্গার বেলগাছিয়া। তার বাবা আবুল হোসেন বিশ্বাস এবং মাতা মোতাহারুন নেসা ছিলেন একজন শিক্ষক। বেবী ইসলাম শিয়ালদহের একটি মিশনারি স্কুলে প্রাথমিক পড়াশুনা করেন, পরে ক্যাথেড্রাল মিশন হাই স্কুলে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৫ সালে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। কলকাতা আশুতোষ কলেজ থেকে বি.কম পাস করেন।
ভারতের প্রখ্যাত পরিচালক ও চিত্রগ্রাহক অজয় করের সাথে সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে প্রথমে কাজ শুরু করেন বেবী ইসলাম। কলকাতা, বোম্বে, মাদ্রাজের বিখ্যাত চলচ্চিত্রে তিনি সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন। সাজঘর, জিগাংসা, মেজদিদি, হারানো সুর ও বড়দি প্রভৃতি সব বিখ্যাত চলচ্চিত্রে, অজয় করের সঙ্গে চিত্রগ্রহণের কাজ করেছেন তিনি।
১৯৫৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে যোগ দেন তিনি। এছাড়াও তিনি এফডিসিতে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এফডিসি থেকে নির্মিত প্রথম চারটি চলচ্চিত্রের দুটি ‘আসিয়া’ ও ‘আকাশ আর মাটি’র প্রথম চিত্রগ্রহক ছিলেন বেবী ইসলাম; যদিও তিনি আংশিক কাজ করে ছেড়ে দেন, নিজে পরিচালক হবার জন্যে।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/05/baby_islam1_bmdb_image.jpg?resize=960%2C640&ssl=1)
তিনি আরো যেসব চলচ্চিত্রে চিত্রাগ্রাহক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেছেন তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- সূর্যস্নান, ফির মিলেঙ্গে হাম দোনো, নবাব সিরাজউদ্দৌলা, রাজা সন্ন্যাসী, সোয়ে নদীয়া জাগে পানি, চাওয়া পাওয়া, ফির মিলেঙ্গে হাম দোনো, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, ক খ গ ঘ ঙ, চরিত্রহীন, তিতাস একটি নদীর নাম, যুক্তি তক্কো গপ্পো (ভারত), রাজা সাহেব, কসাই, নয়নের আলো, প্রেমিক, সোনালী আকাশ, সালমা, দিনকাল, আমানত, একাত্তরের যীশু, ইত্যাদি।
বেবী ইসলাম দুটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। ১৯৬৪ সালে উর্দু ভাষায় ‘তানহা’ ও ১৯৭৫ সালে ‘চরিত্রহীন’।
তিনি তিনবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৭৫ সালে ‘চরিত্রহীন’, ১৯৮৪ সালে ‘নয়নের আলো’ ও ১৯৮৫ সালে ‘প্রেমিক’ চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণের জন্য শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহকের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন বেবী ইসলাম।
তিনি কয়েকটি প্রামান্যচিত্রের চিত্রগ্রহন করেছেন। বেবী ইসলাম কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন। তাঁর প্রযোজিত ছবি- ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘সালমা’, ‘আমানত’ ।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/05/baby_islam2_bmdb_image.jpg?resize=720%2C960&ssl=1)
এই গুণী চিত্রগ্রাহক ও ভালো মনের মানুষটি নিজ গ্রাম চুয়াডাঙ্গায় গড়ে তুলেছেন, মায়ের মোতাহারুন্নেসার নামে একটি হাসপাতাল।
বেবী ইসলাম একজন চলচ্চিত্র সংসদ সংগঠক ছিলেন। চিত্রগ্রাহক সমিতি এবং চলচ্চিত্রকার সংসদের অন্যতম কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্যক্তিজীবনে বেবী ইসলাম ১৯৬৬ সালের ২৯ এপ্রিল বিশিষ্ট অভিনেত্রী তন্দ্রা ইসলামের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক ছেলে জয় ও এক মেয়ে বাংলা। তন্দ্রা ইসলাম বর্তমানে ছেলে-মেয়েদের সাথে আমেরিকার মিনেসোটায় বসবাস করছেন।
তাঁর প্রযোজনায় ও পরিচালনায় যেসব চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, তা বাণিজ্যিকভাবে তেমন সাফল্য না পেলেও, আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছে সুধীমহলে। তিনি নিজেও একজন গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে হয়েছেন প্রশংসিত।
লেখা: আজাদ আবুল কাশেম, ছবি: এম ফিরোজ হাসান