Select Page

সোনিয়ার কথা

সোনিয়ার কথা

নব্বই দশকের উল্লেখযোগ্য নায়িকা সোনিয়া। মিষ্টি দেখতে। অভিনয়ও চমৎকার। তার সময়ের ব্যস্ত নায়কদের সাথেই ছবি করেছে। নায়িকা হবার জন্য পারফেক্ট লুক, ফিগার তার ছিল। ভয়েসটা চাইল্ডিশ শোনালেও শুনতে ভালোই লাগত।

শিশুশিল্পী হয়ে চলচ্চিত্রে আসে সোনিয়া। বেশকিছু ছবিতে নায়িকার ছোটবেলার অভিনয় করেছে। ‘মাস্তান রাজা’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম অভিনয় করেছিল। শাবানার ছোটবেলার ভূমিকায় ছিল।

‘বাংলার নায়ক’ ছবিতে রিয়াজের বিপরীতে ছিল। দুজনেরই অভিষেক ঘটে এ ছবি দিয়ে। প্রথমদিকে রিয়াজ-সোনিয়া জুটি দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তাদের ‘মিথ্যার মৃত্যু, অজান্তে’ ছবিগুলো উল্লেখযোগ্য ছিল।

‘নীল সাগর পার হয়ে তোমার কাছে এসেছি,

ভালোবাসো নাই বা বাসো তোমায় ভালোবেসেছি’

‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ছবির অসাধারণ গান। সোনিয়ার নাচ দেখার মতো ছিল গানটিতে। এ ছবিতে অমর নায়ক সালমান শাহ-র সাথে অভিনয়ের সৌভাগ্য হয়েছিল সোনিয়ার। গানে সালমানের শিস ফুঁকানোর শটগুলো অনবদ্য। গানটা হিন্দি গানের কপি তবে বাংলাটিও অসাধারণ লাগে। এ ছবিতে সালমানের বিপরীতে সোনিয়ার ‘তুমি আমার জীবনের শুরু’ গানটিও কালজয়ী। ছবিতে শাবনূর মূল নায়িকা ছিল তারপরেও সোনিয়ার সাথে দুটি গান ভীষণ জনপ্রিয়।

জসিমের বোনের চরিত্রে যারা অভিনয় করেছে তাদের মধ্যে সোনিয়া একজন। ‘কালিয়া’ ছবিতে জসিমের বোন ছিল। সোনিয়ার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জসিমের কালিয়া হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

‘শত জনমের প্রেম’ ছবিতে মেহেদির সাথে ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে’ গানটিতে অসাধারণ ছিল সোনিয়া। মিতালি মুখার্জি ও ভুপিন্দর সিং-এর বহুল জনপ্রিয় এ গানটি এই ছবিতে ব্যবহার হয়েছিল। মেহেদির বিপরীতে ‘পরাণ কোকিলা’ ছবিটিও ভালো ছিল।

‘চাকরানী, ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ ছবিতে নেগেটিভ রোলেও নিজেকে প্রমাণ করেছে সোনিয়া।

‘মধুর মিলন’ ছবিতে স্যাক্রিফাইসিং ক্যারেক্টারে ছিল ‘স্বপ্নের ঠিকানা’-র মতোই। বিপরীতে ছিল ওমর সানী।

সণ্ঞ্জয় খানের সাথে ‘ভয়ঙ্কর সাতদিন’ ছবিতে সোনিয়া ছিল ফোকাসে। ছবিতে ইলিয়াস কাঞ্চন-দিতি থাকার পরেও সোনিয়া ও সঞ্জয়ই মূল আকর্ষণ ছিল। ছবিতে ইভটিজিং করা সঞ্জয়কে সোনিয়া জুতাপেটা করার পর ছবির গল্প অন্যদিকে মোড় নেয়। একসময় সোনিয়া বিষ খেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলে সঞ্জয় তাকে বিয়ে করতে চায়। তাদের পালিয়ে যাওয়ার পর ছবির ঘটনা বাড়তে থাকে। তাদের দুজনকে বেশ মানিয়ে ছিল। ‘বডিগার্ড’ ছবিতেও তারা দুজন জুটি ছিল। এ ছবির ‘সত্যমিথ্যা জানি না নিন্দুকেরা কয়’ গানটিও জনপ্রিয়।

ভালো ইমেজের এ নায়িকা অশ্লীল সময়ে ‘জিরো জিরো সেভেন, ঘুম হারাম, মেয়েরাও মাস্তান’-এর মতো ছবিতেও অভিনয় করেছে যা হতাশাজনক ছিল। তবে এর পেছনে অশ্লীল সময়ের সিন্ডিকেট প্রধানভাবে দায়ী। 

বর্তমানে সোনিয়া লন্ডন প্রবাসী।

সোনিয়া দেশীয় চলচ্চিত্রে একটা পার্ট হয়েই থাকবে।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন