Select Page

অঞ্জন দত্তর রিভিউ/ অসাধারণ একটি কনসেপ্টকে ধ্বংস করে দিয়েছে ‘হাওয়া’

অঞ্জন দত্তর রিভিউ/ অসাধারণ একটি কনসেপ্টকে ধ্বংস করে দিয়েছে ‘হাওয়া’

[ভারতীয় ওয়েব প্লাটফর্ম সনি লিভে বড় পরিসরে মুক্তি পেয়েছে মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’। সেই সূত্রে কলকাতার গায়ক-নির্মাতা বাংলাদেশির অতিপ্রশংসিত সিনেমাটি দেখেছেন। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেছেন রিভিউ। বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত তার অংশ বিশেষ এখানে তুলে ধরা হলো]

অবশেষে ‘হাওয়া’ দেখলাম। বড় বাজেট এবং প্রাণবন্ত কনসেপ্ট থাকা সত্ত্বেও মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ছবিটি আমার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। যেটা হতে পারতো পুরুষ আধিপত্যের জগৎকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার আধুনিক এবং সিনেমাটিক উপস্থাপনা, সেটা সামান্য একটা প্রতিশোধের নাটকে পরিণত হয়েছে!

‘হাওয়ার’ গল্পটি অনেকটা সমরেশ বসুর গল্প ‘উরাতীয়া’র ইস্যুতে আবর্তিত হয়েছে। তবে সেটা খেই হারিয়েছে ক্লাইম্যাক্সে।

ছবিতে একেবারে বাস্তবসম্মতভাবে তিনি (সুমন) পুরুষদের লোভ ও শক্তির দুর্দান্ত একটি জগৎ তৈরি করেছেন। আমি অপেক্ষায় ছিলাম, একজন নারীর আগমন ঘটবে এবং সে এই দুঃখী, নিঃসঙ্গ জগৎকে ধ্বংস করবে। তিনি (নারী) যথাসময়ে হাজির হয়েছেন। কিন্তু তিনি অর্থাৎ গুলতি (নাজিফা তুষি) সবচেয়ে যত্নহীনভাবে গড়া চরিত্র, তার সাদামাটা অভিনয় এবং পেছনের গল্প; যেটা বাকি সিনেমার সঙ্গে যায় না। গল্পের শক্তিকে নষ্ট না করেই তিনি রূপক হয়ে থাকতে পারতেন। তাকে সাপে রূপান্তর করা একটা উদ্ভট উপসংহার, যেটা প্রায়শ কোরিয়ান সিনেমায় দেখা যায়; এবং এটা অসাধারণ একটি কনসেপ্টকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

দুর্দান্ত চিত্রায়ণ। ‘হাওয়া’ এমন একটি সিনেমা, যেটা পুরুষদের মধ্যকার জটিলতা সুন্দর তবে ভয়ংকর এক সমুদ্রের মাঝে একটি নৌকার শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ ধারণ করেছে। ভিএফএক্স যা-ই হোক না কেন, প্রতিটা দৃশ্য দারুণ চিন্তাশীলতার প্রমাণ দেয়।

প্রত্যেক পুরুষ চরিত্রের শিল্পী দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। সূক্ষ্ম অথচ দুর্দান্ত খলনায়কের ভূমিকাটি আশ্চর্যজনকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন চঞ্চল চৌধুরী। এই পর্যন্ত এটা তার সবচেয়ে প্রশংসনীয় কাজ; অন্তত আমার দেখা মতে। আমি তার বেশ কিছু কাজ দেখেছি। হ্যাটস অফ চঞ্চল। সোহেল মণ্ডল, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসিরউদ্দিন খান, রিজভি রিজু, মাহমুদ আলম ও বাবলু বোস সবার নাম নেওয়া প্রয়োজন। প্রত্যেকে অসাধারণ! ব্রিলিয়ান্ট! তারা গল্পের প্রবাহ ধরে রেখেছেন।

‘হাওয়া’র দৈর্ঘ্য আরও কমানো যেতো। তবে দীর্ঘ হলেও ছবিটি উচ্চমানের।


Leave a reply