Select Page

অবশেষে সফল হিন্দিপক্ষ: পেল সরকারি অনুমতি

অবশেষে সফল হিন্দিপক্ষ: পেল সরকারি অনুমতি

‌‘দেশের সিনেমা ও প্রেক্ষাগৃহ বাঁচানোর’ নামের অনেক দিন ধরে হিন্দি সিনেমা আমদানির দাবি জানিয়ে আসছে একটি পক্ষ। কয়েক বছর ধরে নানান বাধার মুখে পড়লেও এবার তারা প্রায় সব পক্ষকে ম্যানেজ করে ফেলেছেন। আইনি জটিলতার কারণে এতদিন অনুমোদন না পেলেও এবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে হিন্দি সিনেমা, যদিও কাগজে-কলমে সেটা ‘উপমহাদেশীয় ভাষার’ সিনেমা।

কয়েক মাস ধরে চলছিল হিন্দি সিনেমা মুক্তির তোড়জোর। ছাপানো হয়েছিল প্রচারণা উপকরণও

গতকাল সোমবার (১০ এপ্রিল) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এই মর্মে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সংশ্লিষ্টদের বরাবর। উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই অনুমতিপত্রে জানানো হলো, সাফটাভুক্ত দেশ থেকে উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত ১০টি ছবি বছরে আমদানি করা যাবে। বিপরীতে সমান সংখ্যক বাংলাদেশি ছবি রফতানি করতে হবে।

আপাতত দুই বছরের জন্য পরীক্ষামূলক অনুমতি দেওয়া হলো। যা আমদানি ও রফতানি করতে পারবেন বাংলাদেশের ‌‘বৈধ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশকগণ’।

অফিস আদেশে বলা হয়, উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানি সংক্রান্ত সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক মতামতের ভিত্তিতে বিদ্যমান আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪-এর ২৫ (৩৬) (গ) উপ-অনুচ্ছেদের শর্ত প্রতিপালনপূর্বক বাংলাদেশী চলচ্চিত্র রফতানির বিপরীতে সাফটাভুক্ত দেশ হতে উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানি করার জন্য শর্ত সাপেক্ষে পরীক্ষামূলকভাবে নির্দেশক্রমে অনুমতি প্রদান করা হলো।

যে পাঁচ শর্তে আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে –

ক. বাংলাদেশের বৈধ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশকগণ উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানি করার সুযোগ পাবেন;

খ. উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র বাংলা সাবটাইটেলসহ পরীক্ষামূলকভাবে শুধু দুই বছরের জন্য রফতানির বিপরীতে আমদানি করার সুযোগ থাকবে;

গ. প্রথম বছর দশটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র রফতানির বিপরীতে সমান সংখ্যক চলচ্চিত্র আমদানি করতে পারবে:

ঘ. আমদানিকৃত উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পূর্বে অবশ্যই বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের সনদ গ্রহণ করতে হবে; এবং

ঙ. বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও দূর্গাপুজার সপ্তাহে এই আদেশবলে আমদানিকৃত চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না।

গত ফেব্রুয়ারিতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের কাছে উপমহাদেশের সিনেমা আমদানিসহ চারটি প্রস্তাব উত্থাপন করে চলচ্চিত্রের ১৯ সংগঠনের মোর্চা সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ। উপমহাদেশীয় সিনেমা আমদানি না করলে সিনেমা হল বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয় হল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।

এর আগে জানুয়ারিতে মাসে সাফটা চুক্তির আওতায় শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ আমদানি করতে আবেদন করে ঢাকার পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট। সেই ‘পাঠান’ ছবির মাধ্যমেই দেশীয় সিনেমা শিল্পের নতুন এই মেরুকরণের যাত্রা হতে যাচ্ছে।

এর আগে ভারতীয় বাংলা ছবির ক্ষেত্রে এই বিনিময় প্রথা প্রচলিত ছিল। যা শুরু থেকেই মুখ থুবড়ে পড়ে। টলিউডের একটি ছবিও চলেনি ঢালিউডের প্রেক্ষাগৃহে, অন্যদিকে টলিউডও স্থান দেয়নি ঢালিউডকে। এমনকি হাতেগোনা কয়েকটি ছবি ছাড়া ‘যৌথ প্রতারণা’ নামে কুখ্যাত ‘যৌথ প্রযোজনা’ও ততটা সফল হয়নি। এবার দেখার পালা বলিউডের ছবি কতটা হজম করতে পারে ঢালিউড।

এর আগে ২০১৫ সালে হিন্দি সিনেমা ‘ওয়ান্টেড’ আমদানির বিপক্ষে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ঢালিউডের শীর্ষ তারকারা। সে সময় কাফনের কাপড় পরে রাজপথে নেমে মিছিল পর্যন্ত করেছিলেন শাকিব খান, মিশা সওদাগর, ওমর সানী, পরীমণিসহ প্রথম সারির নির্মাতা-শিল্পীরা। এবার সে তারকাদের সবাই চুপ ছিলেন।


মন্তব্য করুন