অভিনয়ের কারণে বেশি ভালো লাগবে ‘ফ্রাইডে’
আমাদের চারপাশে প্রতিদিন নানা ভয়ংকর ঘটনা ঘটে। কিছু আমরা জানতে পারি পত্রিকার মারফত, কিছু জানতেই পারি না। আর যেগুলো জানি সেগুলোর নেপথ্যে থাকে আরও অনেক গল্প।
কখনও পত্রিকার ফলো আপ স্টোরি বা টিভি চ্যানেলের রিপোর্ট সেগুলো আমাদের সামনে আনে। এই ধরনের সত্য ঘটনা অবলম্বনে পৃথিবীর নানা দেশেই নির্মিত হয় সিনেমা, সিরিজ। আমাদের দেশে এককালে হয়েছে, মাঝে কমে গিয়েছিল। এখন ওটিটি আসার পর আবার শুরু হয়েছে। এমনই সত্য ঘটনা অবলম্বনে রায়হান রাফী নির্মাণ করেছেন ‘ফ্রাইডে’।
একটি জন্মদিন কেমন করে বিভীষিকা হয়ে ওঠে সেটি দেখানোর পাশাপাশি এর পেছনের ঘটনাও দেখিয়েছেন।
এ ওয়েব ফিল্মের গল্পটি মুনার। সে চরিত্রে অভিনয় করেছেন তমা মীর্জা। আসলে ফিল্মটি গল্প কেন্দ্রিক না, চরিত্র কেন্দ্রিক। এখানে গল্পটা বেশ স্ট্রং কিন্তু গল্পের সঙ্গে মুনা এতোটা জড়িয়ে আছে যে তাকেই বেশি করে ফোকাস করে হয়েছে কেননা গল্পটা তো তার। এই কারণে চিত্রনাট্য সাজানো হয়েছে মুনাকে কেন্দ্র করে।
পুলিশের ইন্টাররোগেশন রুমে বসে সে পরিবারের মানুষদের সঙ্গে কথা বলে। আসলে সে এই কথাগুলো ভাবে। বাবা, মা, বোন ও স্বামীকে হত্যা করেছে সে। পাশাপাশি হত্যা করেছে এক ‘চাচা’কে। মুনার কথার মধ্য দিয়ে একটু একটু করে সেই গল্পে ঢুকে পরে ফ্রাইডে।
ফিল্মের গল্প মূলত নির্যাতনের। মুনা ছেলেবেলা থেকে নানাভাবে নির্যাতিত হয়। কথায় আছে মেয়েদের সবচেয়ে বড় আশ্রয় তার মা। কিন্তু মুনার গল্পে সে মায়ের কাছ থেকেই প্রথম নির্যাতনের শিকার। এরপর একে একে কথিত চাচা এরপর স্বামীর লাম্পট্যের শিকার হয়েছে সে। আমাদের সমাজে এমন ঘটনা অনেকই ঘটে। সেই ঘটনার প্রতিফলন রায়হান রাফীর ‘ফ্রাইডে’।
চিত্রনাট্য যেভাবে সাজানো হয়েছে তা নতুন না। এমন করে আগেও অনেক গল্প বলা হয়েছে। তবে এখানে বিষয়টি গল্পের জন্য প্রয়োজন ছিল। চিত্রনাট্য বা সিনেম্যাটোগ্রাফির চেয়ে ফ্রাইডে অভিনয়ের কারণে দর্শকের ভালো লাগার কথা।
তমা যথাসম্ভব ভালো অভিনয় করেছে। ফারজানা ছবিতে দেখে ভালো লাগল। তার অসহায়ত্ব এবং লোভ দুটো জায়গাতেই তিনি ভালো করেছেন। এই ফিল্মে নাসির উদ্দিন খানের অভিনয়ের জায়গা ছিল অনেকটা আর তিনি শুরু থেকেই নিজের চরিত্রটি চমৎকার তুলে ধরেছেন। অবস্থা এমন যে অ্যালেন স্বপনের পাশাপাশি এখন তাকে পকাত ডাকা শুরু হয়ে গেছে।
ভায়োলেন্স নিয়ে অনেকের অনেক আপত্তি ছিল। ফিল্ম দেখতে গিয়ে দেখলাম তেমন কিছু দেখানো হয়নি। ক্ষতে ব্লার করা দেখে মনে হলো এটা পরে করা। এমনকি কাটাকুটির দৃশ্যগুলো এমভাবে দেখানো হয়েছে যে কাটাকুটি দেখা যায় না। সেটাও পরে করা কিনা জানি না। সব মিলিয়ে ট্রেলারে যে ভায়োলেন্স দেখা যাবে বলে মনে হয়েছিল ফিল্মে তা নেই। ওয়েব ফিল্ম হিসেবে ভালোই হয়েছে ফ্রাইডে তবে দৈর্ঘ্য আরেকটু কমতে পারত।