আবদুল্লাহ জহির বাবুর রিভিউ: ‘তালাশ’ একটি গেম চেঞ্জার মুভি
প্রথাগত চলচ্চিত্রের ধারণার বাইরে গিয়ে অসম্ভব সুন্দর একটা সাইকো থ্রিলার রোমান্টিক ছায়াছবি উপহার দেবার জন্য নির্মাতা সৈকত নাসির কে ধন্যবাদ। স্বস্ত্রীক গতকাল “তালাশ” দেখতে গিয়েছিলাম। স্টার সিনেপ্লেক্স এর দুটো পাঁচ এর শো দেখলাম। কেমন লাগলো ? বলছি –
ছায়াছবির অভিনেতা অভিনেত্রী নির্বাচন এক কথায় অসাধারণ। ছোট খাট চরিত্র থেকে নিয়ে নায়ক নায়িকা পর্যন্ত শিল্পী নির্বাচন খুব যুক্তিযুক্ত। আদর আজাদ এর কাছ থেকে পরিচালক তার শতভাগ আদায় করে নিয়েছেন। ড্রাগ এডিক্টেড একজন ব্যার্থ ব্যান্ড শিল্পীর চরিত্রে আদর এক কথায় অসাধারণ। মনেই হয় নি চলচ্চিত্রে এই ছেলেটা নবীন। তার অভিনয় ক্ষমতা মুগ্ধ করেছে আমাকে। ছোট খাট এক্টিং ডিটেইলিং দারুণ! সৈকত নাসির প্রমান করছেন তিনি নবীন কে দিয়েও প্রবীণের পরিপক্কতা আদায় করে নিতে জানেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের পর্দায় এই ধরনের চরিত্র এর আগে কখনো আসেনি। আমি নিশ্চিত আদরের অভিনয়ের পরিমিত বোধ তাকে অনেকদুর নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নির্দিধায় আদরের ওপর ভরসা করতে পারে। আদর দর্শকদের হলমুখী করার ক্ষমতা রাখে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এরপর আসি বুবলির কথায়। বাজী ধরতে পারি ছায়াছবি দেখে দর্শক প্রেমে পরে যাবেন চিত্রনায়িকা বুবলির। দুর্দান্ত গ্ল্যামার, পোষাক পরিচ্ছেদ, মেক আপ, গেট আপ – এক কথায় সুন্দর। কঠিন একটা চরিত্রে তার সাবলীল অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে। মানসিক দ্বন্দ, নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ এই ধরণের সুক্ষ অনুভুতি গুলো তার চরিত্রে অসাধারণ ভাবে তিনি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। She is Just a makers delight. “তালাশ” এর অথার ব্যাকিং চরিত্র তিনি।
আর আসিফ, বাংলাদেশ এর চলচ্চিত্রের রূপালী পর্দায় তার মত হ্যান্ডসাম নায়ক সম্ভবত এখন আর নেই। তার পর্দার উপস্থিতি ছিল প্রাণবন্ত, চরিত্র উপযোগী। দীপক সুমন সিআইডি পুলিশের চরিত্রে খুব ভাল অভিনয় করছেন। গানের সুর, গানের কথা, গানের উপস্থাপন খুব ভাল। ক্যামেরার কাজ ভাল। সম্পাদনা, কালার কারেকশন অন্যান্য টেকনিক্যাল সাইডে কোন ভুল চোখে পড়েনি। ননলিনিয়ার স্ক্রীনপ্লে এবং সংলাপে আসাদজামান দারুণ। তার আগের তিনটা ছায়াছবির থেকে এই ছায়াছবি সম্পূর্ণ ভিন্ন, আধুনিক এবং ব্যাতিক্রমি। পরিচালক এবং লেখকের কম্বিনেশন ভাল হলে কত সুন্দর ছায়াছবি হতে পারে তার প্রমান “তালাশ”। অনেকদিন পর একজন পরিপক্ক নির্মাতার সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মী সুর্নিমিত সিনেমা দেখে কিছুটা শান্তি পেয়েছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে “তালাশ” একটা গেম চেঞ্জার মুভি হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। প্রশংসা বন্দনা বেশী হচ্ছে ভাবছেন? আমার অনুভূতি গুলো আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম – বাকি ভুল ত্রুটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব দর্শকের।
★ চিত্রনাট্যকার আবদুল্লাহ জহির বাবুর ফেসবুক থেকে নেওয়া