Select Page

ইস্পাহানি আরিফ জাহান সমগ্র

ইস্পাহানি আরিফ জাহান সমগ্র

ইস্পাহানি আরিফ জাহান দুজনকে অনেক দর্শক হয়তো একজন মনে করে কিন্তু আসলে তারা দুজন। সম্পর্কে কাজিন এবং একসাথে ছবি পরিচালনা করত।

ঢালিউডে বাণিজ্যিক ছবির উল্লেখযোগ্য নির্মাতা তারা। বাণিজ্যিক ছবির ভাষা বুঝে নির্মাণ করেছেন উপভোগ্য সব ছবি। নব্বই দশক থেকে শুরু করে ২০০০ পরবর্তী চলচ্চিত্রেও তারা যুক্ত ছিলেন নির্মাতা হয়ে।

তাদের ছবিগুলো – বিদ্রোহী বধূ (১৯৯৪), সুখের স্বর্গ (১৯৯৬), লাট সাহেবের মেয়ে (১৯৯৭), তুমি সুন্দর (১৯৯৮), মোস্তফা ভাই (১৯৯৯), শত্রু ধ্বংস (১৯৯৯), গোলাম (২০০০), শিকারী (২০০১), আমার বউ (২০০১), ভিলেন (২০০৩), আমাদের সন্তান (২০০৪), সন্ত্রাসী মুন্না (২০০৫), আসলাম ভাই (২০০৮), এক বুক ভালোবাসা (২০০৮), গুণ্ডা দ্য টেরোরিস্ট (২০১৫) ও নায়ক (২০১৮)।

প্রথমদিকে মৌসুমী-ওমর সানী জুটিকে নিয়ে ইস্পাহানি আরিফ জাহান নিয়মিত ছবি নির্মাণ করেছেন। এ জুটির ‘সুখের স্বর্গ, লাট সাহেবের মেয়ে, তুমি সুন্দর’ ছবিগুলো বাণিজ্যিক ছবির মধ্যে উপভোগ্য। শাবানা-আলমগীর জুটিকেও দেখা গেছে তাঁদের ছবিতে। যেমন – বিদ্রোহী বধূ, সুখের স্বর্গ। ‘বিদ্রোহী বধূ’ ছবিটি তাঁদের প্রথম ছবি হিশাবে প্রশংসনীয় ছিল। ছবিতে মৌসুমীকে লেডি অ্যাকশন ঘরানায় অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন তাঁরা। ছবির প্রতিশোধপর্বগুলো উপভোগ্য ছিল।

মান্নাকে নিয়ে ‘ভিলেন, মোস্তফা ভাই, আমাদের সন্তান, আসলাম ভাই, সন্ত্রাসী মুন্না’ ছবিগুলো নির্মাণ করেন তাঁরা। এর মধ্যে ‘আমাদের সন্তান’ ও ‘ভিলেন’ ছবি দুটি উল্লেখযোগ্য।

২০০০ পরবর্তী ছবিতে মান্নার অপ্রতিদ্বন্দ্বী ইমেজ তুলে ধরতে ছবিগুলোর ভূমিকা আছে।

শাবনূর-শাকিব খান জুটিকে ‘গোলাম’ ছবিতে প্রথমবার দেখা যায়। ঢালিউডে তখন এ জুটির খুব দরকার ছিল। শাকিবের ‘শিকারী, সন্ত্রাসী মুন্না’ ছবি দুটিও তাদের পরিচালনায়। ‘শিকারী’ নামে শাকিবের আরো একটি ছবি আছে তবে প্রথমটা ইস্পাহানি আরিফ জাহানের।

‘শত্রু ধ্বংস’ ছবিটিতে শাকিল খানের বিপরীতে দেখা গেছে বলিউডি নায়িকা ভাগ্যশ্রীকে। ইলিয়াস কাঞ্চনও ছিল।

‘আমার বউ’ ছবিটি ছিল শাকিল খান-পপি জুটির। অপেক্ষাকৃত দুর্বল নির্মাণ ছিল। ‘এক বুক ভালোবাসা’ ছবিটি অপু বিশ্বাস-ইমনের। এটিও দুর্বল নির্মাণ। তাঁদের নির্মাণে প্রথমদিকের প্রতাপটা শেষের দিকে আর থাকেনি। বাপ্পীকে নিয়ে ‘গুণ্ডা দ্য টেরোরিস্ট’ ও ‘নায়ক’ ছবির মান তাদের পূর্বের ছবিগুলোর সাথে তুলনার যোগ্য হয়নি।

তাঁদের ছবির জনপ্রিয় গানও আছে। যেমন -বুকে ধরে রাখব ছবি আঁকব – বিদ্রোহী বধূ; চাঁদে আছে মধুর জোছনা – লাট সাহেবের মেয়ে; যেও না যেও না সাথী যেও না – লাট সাহেবের মেয়ে; প্রেমেরও গীত হয়ে এলো রে – তুমি সুন্দর; চাঁদিনী এই রাতে চাঁদ হয়ে এলে তুমি – তুমি সুন্দর ও এসো না গো আরো কাছে সরে – শত্রু ধ্বংস।

ইস্পাহানি আরিফ জাহান-রা দুই ভাই মিলে ঢালিউডের বাণিজ্যিক ছবিতে নিজেদের মতো অবদান রেখেছেন। তাঁদের ছবিগুলো উপভোগ্য। এ সময়ের বাণিজ্যিক ছবির নির্মাতাদের অবশ্যই শেখার আছে তাঁদের কাছে।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন