ঈদুল ফিতর ২০২১ : সেরা দশ শর্টফিল্ম
টিক টক: অফিসের সামান্য কর্মচারী বসের ঘড়ি লোভে পড়ে চুরি করে ফেলে, ঘড়িটা নিয়ে বেশ খুশি সে। তার স্ত্রীকেও দেখায় সে। কিন্তু দাম জানার পর সে অস্থিরতায় ভুগে,সে বসের কাছে ঘড়িটা ফেরত দিতে যায়! শাফায়েত মনসুর রানার শর্টকাট সিরিজের এই শর্টফিল্মে চিত্রনাট্যে আগ্রহ ধরে রেখেছেন। অভিনয়ে সোহেল মন্ডল এককথায় অনবদ্য, এই ঈদের সেরাদের একজন। তার স্ত্রীর ভূমিকায় ফারজানা অ্যানিও দারুণ। ক্যামেরার কাজ, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ভালো লেগেছে। যদিও শেষটা মর্মান্তিক, যেটা একেবারেই আশা করিনি, তাই ধাক্কা লেগেছে। তবে এই শর্টফিল্ম দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবে।
আকাশ ভরা তারা: রাতের বাসে মাত্র তিনজন যাত্রী। দুইজন ছেলে ও একজন নারী। এক ছেলের কথাবার্তা সন্দেহজনক, নারী যাত্রীর দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায়, অপরজনের মনে ভয় জাগে। ঐ ছেলে আক্রমণ করে বসে নারীকে। তারপর! শাফায়েত মনসুর রানার শর্টকাট সিরিজের শেষ শর্টফিল্ম ‘আকাশ ভরা তারা’তেও ছক্কা হাঁকালেন। এই গল্প শুরু থেকেই একটা বিষয়বস্তুর দিকে আগালেও পরে সেটা রুপ নেয় অন্যদিকে,যেটা এই সিরিজের বৈশিষ্ট্য। নাজিম উদ দৌলার গল্প,রা নার চিত্রনাট্য, দুর্দান্ত ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক রাজু রাজের ক্যামেরা সঙ্গে মোস্তফা নূর ইসলামের অনবদ্য অভিনয় সঙ্গে ইয়াশ রোহান ও বেশ। শেষের টুইস্টের জন্য এই সিরিজ বরাবরের মতো সারপ্রাইজ।
এমন যদি হতো: সাম্প্রতিক এক আলোচিত ইস্যুর সাথে মিলে যায় তবে এটা একজন ইউটিউব ব্লগারের সত্য ঘটনার উপর নির্মিত। শর্টকাট সিরিজের এই গল্প বেছে নেয়ার জন্য শাফায়েত মনসুর রানা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, সাবিলা নূরের একক অভিনয় দারুণ।
চা খাবেন?: শাফায়েত মনসুর রানার ‘চা খাবেন?’ এর ট্রেইলার দুর্দান্ত হওয়ায় প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। সেই তুলনায় শেষটা অত দুর্দান্ত না হলেও ভালো কাজের তালিকায় নির্দ্বিধায় রাখা যায়। রানা সাহেব চিত্রনাট্যটা বেশ টানটান রেখেছেন। অভিনয়ে অপর্ণা বরাবরের মত ভালো, তবে নাজিবা বাশার যেন সব আলো কেড়ে নিয়েছে। পরিচয় দিতে গেলে স্পয়লার হয়ে যাবে,শেষের ঐ অচেনা লোকটার সংলাপ গুলো শুনে বেশ হাসি পেয়েছে।
লাশে গেলাম ফেঁসে: তানিম রহমান অংশুর গল্প গল্প খেলায় ‘লাশে গেলাম ফেঁসে’ ডাক্তারদের লোভে পড়ে তাদের কদর্য রুপ দেখানো হয় আর সাক্ষী হয়ে ফেঁসে গেল এক নবীনা ডাক্তার। ভালো কাজ, লুৎফর রহমান জর্জ দারুণ, চমকের অভিনয় প্রথম দেখলাম, ভালোই করেছে।
এক ভাই চম্পা: বোনের প্রতি ভাইয়ের টেককেয়ার, বোনের বয়ফ্রেন্ডকে শাসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যায়, এরপর ঘুরে যায় গল্প। এটার টুইস্টে খুব মজা পেয়েছি। ইরফান সাজ্জাদ বেশ ভালো করেছে সঙ্গে চমক, নেহাল। নাজিম উদ দৌলার গল্পে শাফায়েত মনসুর রানার উপভোগ্য শর্টফিল্ম।
শুটআউট: শুটিংয়ের পেছনের গল্প, শর্টফিল্ম হিসেবে দারুণ। টুইস্টটা আরো চমকপ্রদ। শাফায়েত মনসুর রানা নির্মাণের পর অভিনয়ে সামনে অনেকদিন পর, সঙ্গে তানজিকা, মনোজ প্রামানিক, ফরহাদ লিমন,রাজু রাজ, ইফতেখার ইমাজও দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন।
মায়া: একটা পরিবারের মান-অভিমানের গল্প, বাবা-ছেলের অভিমানের গল্প। গিয়াসউদ্দিন সেলিমের এই শর্টফিল্মটা পছন্দের, যদিও শেষটা সিনেমাটিক। শহীদুজ্জামান সেলিম, মুনিরা ইউসুফ মেমী, ইরফান সাজ্জাদ, টয়ারা ছিলেন অভিনয়ে।
মাথা নষ্ট: দারুণ এক থিমকে উপজীব্য করে এই শর্টফিল্ম। মিশু সাব্বির টুপি মাথায় দিলেই টুপি গরম হয়ে যায়, সে যায় টুপি বিক্রেতার কাছে। শাফায়েত মনসুর রানার এই শর্টফিল্মে মিশু সাব্বিরকে অনেকদিন বাদে পাওয়া গেল, সঙ্গে রোদসী সিদ্দিকা প্রিয় হয়ে উঠলেন।
কী একটা অবস্থা: তানিম রহমান অংশুর গল্প গল্প খেলার শেষ শর্টফিল্ম। দুইজন লিভ ইন করা মানুষের গল্প, শুরুর দিকে গতানুগতিক মনে হলেও শেষ দিকে সেটা অন্যমাত্রা পেয়েছে, সংলাপও বেশ ভালো। ইরফান সাজ্জাদ ও রোদসী সিদ্দিকার যথাযথ অভিনয়।
স্পেশাল মেনশন: মিঁয়াও, বেঈমান পাখি।