Select Page

ঈদের বাছাইকৃত দশ নাটক, ভিডিও লিংকসহ

ঈদের বাছাইকৃত দশ নাটক, ভিডিও লিংকসহ

প্রতি ঈদেই টিভি চ্যানেল জুড়ে আয়োজন করা হয় নাটকের। প্রচার করা হয় অসংখ্য নাটক, সেইখান থেকেই নিজের দেখা অন্যতম সেরা দশ নাটক নিয়ে এই লেখা—

ফেরার পথ নেই : সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে এই নাটক। আপনার কাছের মানুষ বাসা থেকে বেরুনোর পর আর ফেরে না, হারিয়ে যায় যে, অপেক্ষায় থাকা প্রিয়মানুষগুলোর তার আর ফেরার পথ নেই।

ঘটনাবহুল এই ইস্যু নিয়ে আশফাক নিপুণের প্রতি নাটক বানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা। এমন নাটক বানাতে সাহস লাগে, যেটা তিনি আয়ত্ত করেছেন এবং নিজের প্রতিভা আবার প্রমান করেছেন। এখন পর্যন্ত যত নাটক দেখেছি, তার মধ্যে এটিই সেরা। অভিনয়ের দিক দিয়ে মেহজাবীন অনেক পরিণত, তার কান্নার দৃশ্য নিয়ে অনেক সময় কথা হয়, তবে এই নাটকে তিনি আপনার চোখ ভিজিয়ে দেবেন। মেহজাবীনকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন আফরান নিশো।

সব মিথ্যে সত্যি নয় : মিথ্যে সব সময় খারাপ, তবে কিছু মিথ্যে জীবনকে রঙিন করে তোলে, বাঁচতে শেখায়। মোটামুটি উচ্চবিত্ত পরিবারের গল্প এটি, তবে দিনে দিনে অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমশ কমতে থাকে। হঠাৎ করেই মায়ের অসুস্থতা বেড়ে যায়, শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না দেখে হাজির হন এক রিয়েলিটি শোতে, যেইখানে তিনি নিজে তুলে ধরেন জীবনের মিথ্যের গল্প।

জনপ্রিয় নির্মাতা শাফায়েত মনসুর রানা গোছালো গল্প, চিত্রনাট্য ও নির্মাণের মুন্সিয়ানায় নাটকটি বেশ ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অভিনয়ে জন কবির, অপর্ণা ও দিলারা জামান সবাই নিজেদের জায়গা থেকে ভালো করার চেষ্টা করেছেন।

শাড়ি : এক নিম্নমধ্যবিত্ত দম্পতির গল্প। কর্পোরেট অফিসের লিফটম্যান, একদিন বসের ফেলে যাওয়া শাড়ি নিয়ে উপস্থিত হন নিজের বাড়িতে, নব বিবাহিত স্ত্রী নিজের শাড়ি ভেবে পরে ফেলেন। লিফটম্যান স্ত্রীর খুশি দেখে আপ্লুত হন, কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ে বসের কথা। মানসিক টানাপোড়নের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যায় এই গল্প।

মাসুম শাহরিয়ারের রচনায় নির্মাণ করেছেন হিমেল আশরাফ। অভিনেতাদের মধ্যে এই ঈদে আফরান নিশো সবচেয়ে আলোচিত, অভিনয়ের দিক দিয়ে নিশোর সেরা কাজ এটি, স্ত্রীর চরিত্রে সাবিলা নূরের অভিনয়ের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। নির্মাতা হিসেবে হিমেল আশরাফ বরাবরই ভালো কিছু করার চেষ্টা করেন, তবে তিনি সেইভাবে আলোচিত হন না।

আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে : পরম স্নেহে সন্তানদের লালন করেন মা। সেই সন্তানরা যখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে যান, তখন মা বাড়তি মানুষ হয়ে আশ্রয় পায় বৃদ্ধাশ্রমে। কিন্তু মায়েরা সব সময় সন্তানদের ভালো চান, তাই জীবনের শেষদিন পর্যন্ত শুভকামনা করে যান।

আশুতোষ সুজনের কাহিনী ও নির্মাণে এই নাটকটি মন ছুঁয়ে যায়। বিশেষ করে গুণী অভিনেত্রী দিলারা জামানের দারুণ প্রত্যাবর্তন ঘটেছে, তাকে সঙ্গ দিয়েছেন তৌকীর, বিজরী, দিনার, দীপা, অপর্ণারা।

হোম টিউটর : ‘টিউশনি’ আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। ছাত্র ও হোম টিউটরের সম্পর্ক নিয়েই এই গল্প। একজন টিউটর মানেই কি বাসায় কলিং বেল টিপে নির্দিষ্ট সময় পড়িয়ে টাকা গুনে নেয়া, এর বাইরেও ছাত্রের সাথে গড়ে উঠে এক আলাদা মনোজগত, হয়ে উঠেন কাছের মানুষ। যারা যারা এই পেশায় যুক্ত তারা প্রত্যেকেই যেন নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাবেন।

নাম ভূমিকায় আফরান নিশো বেশ ভালো করেছেন, নাটকে তিনি সর্বেসর্বা। ছাত্রের ভূমিকায় শাওন দারুণ, তানজিন তিশা সঙ্গ দেবার চেষ্টা করেছেন। এই ঈদে সবচেয়ে বেশি নাটক বানিয়েছেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ, তার মধ্যে অবশ্যই সেরা কাজ এটি।

নীল গ্রহ : ভালোবেসে বিয়ে করা এক দম্পতির সম্পর্কের টানাপোড়নের গল্প এটি। তিক্ত অভিজ্ঞতায় দুইজনেই বিচ্ছেদ চান, তবুও মনের গহীন কোণে একটা টান থেকে যায়, অভিমানী মন চায় তার কাছে ফিরে আসুক ভালোবাসার মানুষ।

এই নাটক দিয়ে অনেকদিন পর জুটি বেঁধেছেন মাহফুজ আহমেদ-অপি করিম। অভিনয়ে অপি এই নাটকে নিজের প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পেয়েছেন বেশি। আলোচিত নির্মাতা সাগর জাহানের ক্যারিয়ারে আরেকটি ভালো নাটক যুক্ত হল।

কলুর বলদ : নাম নিয়ে বেশ আপত্তি থাকলেও সাজ্জাদ সুমনের এই নাটকটি বেশ ভালো কাজ। এক প্রবাসীর জীবনের নানা টানাপোড়ন, বাস্তবতা নিয়ে গল্পটি লিখেছেন মেজবাহউদ্দিন সুমন। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে অনেকদিন পর আলোচনায় এসেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ, এছাড়া ছিলেন তানিয়া আহমেদ, দিলারা জামান, মামুনুর রশীদ। প্রবাসীরা এই নাটকটি বেশ গ্রহণ করেছেন।

নাইট ওয়াচম্যান : ইশতিয়াক আহমেদের উপন্যাস ‘সিনেমা হলের গলি’ অবলম্বনে নির্মাণ করেছেন ইমেল হক। একজন পাগলাটে স্বভাবে সাধারণ নাইট ওয়াচম্যানের গল্প যথাযথ ভাবে তুলে ধরেছেন নির্মাতা। নাম ভূমিকায় আজাদ আবুল কালামের অভিনয় এক কথায় অনবদ্য।

সিনেমা জীবন : আশির দশকের শেষ ভাগ, মফস্বলে জায়গা করে নিয়েছে ভিসিআর। সিনেমা দেখে দেখে তরুণ-তরুণীরা স্বপ্নে ভাসেন। সেই স্বপ্ন দেখা দুইজনের ভালোবাসার গল্প নির্ভর এই নাটক।

নবীন নির্মাতা হাবিব শাকিলের সাবলীল উপস্থাপনায় নিশো- মেহজাবীন জুটি অভিনীত এই নাটকটি পরিচিত গল্পে উপভোগ্য। এছাড়া তানহা ভালো করেছেন।

বাবার জুতা : মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র অর্থ উপার্জনকারী বাবা। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়, জুতো ছিঁড়ে গেলেও কেনা হয় না। একদিন পরিস্থিতির চাপে সেই বাবাকেই না চেনার ভান করে আদরের ছেলে, এরপর…!

মাসুম শাহরিয়ারের রচনায় তানিয়া আহমেদের নির্মাণে নাটকটি মন ছুঁয়ে যায়। শহীদুজ্জামান সেলিম ও এলেন শুভ্রের অনবদ্য অভিনয় প্রশান্তি আনে, মোমেনা চৌধুরীও ভালো।


মন্তব্য করুন