Select Page

উত্তরাধিকার জটিলতায় বন্ধ বলাকা, সমস্যা কাটলে হতে পারে সিনেপ্লেক্স

উত্তরাধিকার জটিলতায় বন্ধ বলাকা, সমস্যা কাটলে হতে পারে সিনেপ্লেক্স

আশি, নব্বই এমনকি গত দুই দশকেও নতুন বাংলা ছবির মুক্তি মানেই যেন নিউমার্কেট এলাকার বলাকার সামনে দর্শকের ভিড়। কিন্তু ২০২০ সালের ২০ মার্চ করোনার কারণে বন্ধ করে দেওয়ার পর আর খোলেনি সিনেমা হলটি। এতদিন সংস্কারের কারণ দেখালেও সারাবাংলা ডটনেটে প্রকাশিত আহমেদ জামান শিমুলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অন্য তথ্য।

জানা যায়, সিনেমা হলটির সবশেষ মালিক মোহাম্মদ হাসান ইমাম মারা যাওয়ার পর তার উত্তরাধিকারদের মধ্যে মালিকানার অংশ নির্ধারণ নিয়ে মামলা চলছে। যার নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে হলটি চালু করা যাচ্ছে না। তবে এ জটিলতা কাটলে বলাকায় হতে পারে স্টার সিনেপ্লেক্সের নতুন আউটলেট।

বলাকার প্রথম মালিক এম এ হাসান ‘হাসান মুভিজ লিমেটেড’-এর অধীনে হলটি চালু করেছিলেন। তার ছিল পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। সত্তরের দশকে মৃত্যুর পর তার ছেলে-মেয়েরা পর্যায়ক্রমে হলটি পরিচালনা করেন। সবশেষ এম এ হাসানের ছেলে মো. হাসান ইমাম কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন। তিনিও ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর মারা যান। এরপর তার দুই স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ সময় ‘হাসান মুভিজ লিমেটেড’-এর আমমোক্তার নিযুক্ত করা হয় ঢাকার আরেক ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল সনি সিনেমা হলের মালিক মোহাম্মদ হোসেনকে। ওই সময়ে কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা হাসান আলী ইমাম রেজিস্টার্ড আমমোক্তার হিসেবে মোহাম্মদ হোসেনকে নিযুক্ত করেন। এরপর থেকে ‘হাসান মুভিজ লিমিটেড’ এর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। এখানে উল্লেখ্য, সে সময়কার কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং বর্তমান এমডি হাসান আলী ইমাম সম্পর্কে মোহাম্মদ হোসেনের মেয়ের জামাতা।

মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘করোনাকালে ছয় মাসে প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে। যার কারণে আমরা তখন হলটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলাম। এখন চালু করতে পারছি না কারণ, হাসান মুভিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মারা গেছেন। তার প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে এমডি ও মেয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার ছেলেমেয়ের সঙ্গে উত্তরাধিকার ও বন্টন বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় হলটি চালু করা যাচ্ছে না।’

‘উত্তরাধিকার সনদ সামনের মাসেই পেয়ে যাব আশা করছি। কারণ ২৯ সেপ্টেম্বর আদালত এ ব্যাপারে রায় দেওয়ার কথা রয়েছে। আমরা আশা করছি উত্তরাধিকার সনদ পেয়ে গেলেই এসব মামলা আর থাকবে না। আমরা জয়েন্ট স্টকে কাগজপত্র জমা দিতে পারলেই ওয়ারিশ ছয়জনই হাসান ইমামের শেয়ারের অংশীদার হবেন। অর্থাৎ তারাও কোম্পানীর শেয়ার হোল্ডার হবেন’।

সমস্ত সমস্যা মিটে যাওয়ার পর বলাকা হলটি স্টার সিনেপ্লেক্সের অধীনে দিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে বলাকা সিনেমা হলের। মোহাম্মদ হোসেনের মেয়ের নামে প্রতিষ্ঠিত সনি সিনেমা হলটিও স্টার সিনেপ্লেক্সের অধীনে দেওয়া হয়েছে।

‘আমাদের পরিকল্পনা তিনটি স্ক্রিন চালু করার। এরইমধ্যে আমরা স্টার সিনেপ্লেক্সের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা বলে রেখেছি। আশা করছি আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে সব নিষ্পত্তি করে সিনেপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারব।’

১৯৬৪ সালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় চালু হয় বলাকা সিনেওয়ার্ল্ড। প্রথম দিকে বলাকা ও বিনাকা নামে দুটি আলাদা হল ছিল। পরবর্তীতে বিনাকা বন্ধ করে ‘বলাকা’ ও ‘বলাকা ২’ করা হয়। বছরচারেক আগে ‘বলাকা ২’ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ হওয়া ‘বলাকা’ হলটিতে ১ হাজারের উপর আসন ছিল।


মন্তব্য করুন