Select Page

একটি ভালো চলচ্চিত্রের প্রচেষ্টা ‘নয়া মানুষ’

একটি ভালো চলচ্চিত্রের প্রচেষ্টা ‘নয়া মানুষ’

কমার্শিয়াল মার মার কাট কাট ছবির বাইরে অন্যভাবে ছবি হলেই একশ্রেণির দর্শক সেগুলোকে বলে ‘নাটক’। তাদের কাছে ছবি মানেই নায়কের মারামারি, নায়িকার নাচ, ভিলেনের ডায়লগবাজি। গল্পে গল্পে ভালো অভিনয়ের ও নির্মাণের ছবিকে তারা অ্যাপ্রিশিয়েট করতে চায় না। এই বাস্তবতার ভেতরেই বছরের শেষে ভালো একটি চলচ্চিত্র হয়ে উঠেছে ‘নয়া মানুষ’।

‘নয়া মানুষ’ ছবির পরিচালক সোহেল রানা বয়াতির প্রথম ছবি এটি। প্রথম ছবিতেই আবহমান গ্রামীণ গল্পে তিনি ছবিটি নির্মাণ করেছেন।

ছবির গল্প খুবই সরলভাবে বলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে একজন মানুষ অন্য চরে ভেসে গিয়ে সেখানে তার নতুন বসতি হয় এবং তার জীবনে কি কি সংগ্রাম ও নতুনত্ব যোগ হয় সেটাই ছবির গল্প।

আমরা ‘হাজার বছর ধরে’ ছবিতে যে পুঁথিপাঠ করতে দেখি কিংবা হুমায়ূন আহমেদের ছবিতে যে ধরনের বৈঠকী গানের আসর দেখি সেই আবহমান লোকসংস্কৃতি ‘নয়া মানুষ’ ছবিতে আছে। এ বিষয়টি ছবির গুণগত মানকে বজায় রেখেছে।

অভিনয়ে রওনক হাসান কেন্দ্রীয় চরিত্রে ন্যাচারাল অভিনয় করেছে। তার চরিত্রের ট্রানজিশন পিরিয়ড ছবির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মৌসুমী হামিদ বরাবরের মতোই ভালো অভিনেত্রীর পরিচয় এ ছবিতেও দিয়েছে। ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্র ছিল তার। শিশুশিল্পীর চরিত্র যেমন ইমোশনাল ছিল অভিনয়ও ভালো। আশীষ খন্দকার নেগেটিভ চরিত্রে বরাবরের মতোই চমৎকার, তার চোখই যেন যথেষ্ট অভিনয়ের জন্য। অন্যান্য চরিত্রগুলো পিছিয়ে ছিল অভিনয়ে।

ছবির গানের মধ্যে বৈঠকী বাউল গানের আসরটি ছিল সেরা। এছাড়া ‘চান্দের বাত্তি’ রোমান্টিক এবং ছবির শেষের গানটি মার্ক করার মতো। সিনেমাটোগ্রাফি মোটামুটি।

ছবির সেরা সিকোয়েন্স ছিল জোছনা রাতে সপরিবারে ঘুরতে যাওয়া।

সব মিলিয়ে ভালো একটি ছবির প্রচেষ্টাই হয়ে উঠেছে ‘নয়া মানুষ’।

রেটিং – ৭/১০


About The Author

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

Leave a reply