চলচ্চিত্র আন্দোলনের প্রাণপুরুষ মুহম্মদ খসরু আর নেই
বাংলাদেশের বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র আন্দোলনের প্রাণপুরুষ মুহম্মদ খসরু আর নেই। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর ইব্রাহিক কার্ডিয়াক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, অ্যাজমার সমস্যায় অনেক দিন ধরেই ভুগছিলেন মুহম্মদ খসরু। গত মাসে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কেরানীগঞ্জের রোহিতপুরের বাড়ি থেকে ঢাকায় আনা হয়। ভর্তি করা হয় ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে।
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তার মরদেহে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের ইচ্ছা থাকলেও একুশে ফেব্রুয়ারির জন্য তা সম্ভব না। এ কারণে ২০ ফেব্রুয়ারি, বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা কিংবা টিএসসিতে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নেওয়া হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর পর তার মরদেহ সমাহিত করা হবে কেরানীগঞ্জের রোহিতপুরের মোহনপুরে।
মুহম্মদ খসরু চলচ্চিত্র বিষয়ক কালজয়ী পত্রিকা ধ্রুপদীর সম্পাদক হিসেবে চলচ্চিত্র মহলে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের এই পথিকৃত গত প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন।
তার উদ্যোগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ফিল্ম স্টাডি সেন্টার। কেরালার চিত্রলেখা ও ওডেসা ফিল্ম কো-অপারেটিভের অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশ ফিল্ম সোসাইটির উদ্যোগে যে ফিল্ম কো-অপারেটিভ গঠিত হয়েছিল, তার মাধ্যমেই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি নির্মাণ শুরু হয়, সেখানেও মুহম্মদ খসরুর অবদান অনবদ্য।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদের আন্দোলনের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ এবং জাতীয় ফিল্ম আর্কাইভ, যার তাত্ত্বিক নেতাও এই মুহম্মদ খসরু। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেছেন।
চলচ্চিত্র আন্দোলনের এই পুরোধা ব্যক্তিত্ব অনেক দিন ধরেই কেরানীগঞ্জের রোহিতপুরের মোহনপুর গ্রামে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন।