Select Page

জলপথে রহস্যের ‘হাওয়া’

জলপথে রহস্যের ‘হাওয়া’

তিনি তো আরো আগেই এলে পারতেন চলচ্চিত্রে। এলেনই যখন চলচ্চিত্রের পালে নতুন হাওয়া নিয়েই এলেন। এ হাওয়া তার নিজস্ব

রেটিং: ৮.৫/১০

একটা জলপথ। সমুদ্রের জলপথ। একটা বোট। মাছ ধরছে জেলেরা। অনেক আনন্দ। জলের ঢেউয়ে এগিয়ে চলেছে বোট। ঢেউ আছড়ে পড়ছে বোটের গায়ে। দেখতে লাগে ভালো।

হাওয়া। কীসের হাওয়া? একেবারে দুই রকমের হাওয়া। এক সামুদ্রিক হাওয়া দুই রহস্যের হাওয়া। একটা রহস্য শুরু হয়েছে। এর কিনারা কোথায়?

অন্য সব বোটে অনেক মাছ ধরা পড়ছে কিন্তু এ বোটে কেন ধরা পড়ছে না! তবে কি মাছেরা এ বোটের সাথে আড়ি পেতেছে নাকি অন্য কোনো কারণ আছে?

বোটের মধ্যে একটা নতুন হাওয়া লেগেছে। কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে কেউ বুঝতে পাচ্ছে না। একবার এই বিপদ তো ঐ বিপদ কিন্তু বিপদের কান্ডারি কে?

বোটের মালিকের মাথা গরম। একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে এবার। কিন্তু তাতে কি শাপে বর হবে নাকি শিরে সংক্রান্তি!

জলপথে কি প্রেম হয়? মানুষ যেহেতু বাস করে জলপথে প্রেম তো হতেই পারে। জল সাক্ষী, হাওয়া সাক্ষী, আকাশটা সাক্ষী কিন্তু প্রেমের ধরনটা কেমন! বলে দেবো? না, ছবি দেখে জানাই কি ভালো না!

সমুদ্রের জল জোয়ার-ভাটায় আচরণ করে থাকে। ভাটার পর জোয়ারের উত্তাল হাওয়া শুরু হলে যেমন ভয়ের কারণ থাকে বোটের ভেতরেও ভয়ের পরিবেশ আসতে থাকে। একটার পর একটা বদ হাওয়া, বোটের মালিকের ভাষায় ‘কালা জাদু’।

‘ভয় পাচ্ছিস?’ বোটের মালিকের কথায় বিপরীতে থাকা অভিনয়শিল্পীই কী ভয় পাচ্ছে, মনে তো হবে আপনিও ভয় পাচ্ছেন দর্শক। এই না হলে অভিনয়!

ছবির শেষটা কী ছিল মশাই? এ তো অলৌকিক হাওয়া। যা মাথায় আসবেই না কোনোভাবে সেই ঘটনা ঘটে গেল! যে হাস্যরসে ছবির অর্ধেকটাই মেতে থাকবে দর্শক শেষে এসে আচমকা ধাক্কায় নীরব করে দেবে। ছবির বাঁক তো এমনই হবার কথা।

গালি দেয় সবাই ছবিতে। আপত্তির কিছু নেই। যারা যেভাবে কথা বলে তারা তো সেভাবেই বলবে। ওটাই তাদের ভাষা।

অভিনয়! কেউ কারো কম না। কী চঞ্চল চৌধুরী, কী শরিফুল রাজ, কী নাজিফা তুষি, কী নাসির উদ্দিন, কী সোহেল মণ্ডল, কী সুমন আনোয়ার! সবাই নিজেদের জাত চেনাল। ছবি হয়ে গেল সম্মিলিত জাত অভিনয়ের।

ক্যামেরা! সূর্যরশ্মির সাথে সমুদ্রের জলের ওঠানামার তরঙ্গ, জোছনা রাতে সমুদ্রের কাব্যিকতা, জলের ভেতর তিমির অবগাহন সব খেলে বেড়াচ্ছে ছবি জুড়ে। আহা! যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা।

‘সাদা সাদা কালা কালা’ তো এখন জনগনের গান। ওটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।

মেজবাউর রহমান সুমন?

তিনি তো আরো আগেই এলে পারতেন চলচ্চিত্রে। এলেনই যখন চলচ্চিত্রের পালে নতুন হাওয়া নিয়েই এলেন। এ হাওয়া তার নিজস্ব।

চোখের শান্তি পেতে ‘হাওয়া’ দেখে ফেলুন তবে।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন