Select Page

টিভি নাটকের ২০২২

টিভি নাটকের ২০২২

হতাশা, অপ্রাপ্তি তো সব ক্ষেত্রেই বিরাজমান। খালি চোখে দেখলে ২০২২ সালের টিভি নাটকেও অনেক অপ্রাপ্তির খোঁজ মিলবে। তবে আমি আশাবাদী মানুষ। বিশ্বাস করি-যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। তাছাড়া দিনের যেমন রাত থাকে, ফুলের যেমন কাঁটা থাকে, স্বপ্ন পূরণের বিপরীতে স্বপ্নভাঙনের গল্পও থাকে। তবে আমি বিস্মিত হই এটি ভেবে, আমাদের এই ছোট্ট দেশে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীরাই তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। গানের জগতে নিয়মিত গান হচ্ছে না, সিনেমাপাড়াতেও বছরব্যাপী ব্যস্ত থাকার সুযোগ ধীরে ধীরে কমে আসছে। সে তুলনায় টিভি নাটক হোক বা টিভি স্বত্ব বিক্রি করে ইউটিউবের জন্য নাটক হোক, বছরের প্রায় প্রতিটি দিনই কাজ হচ্ছে। ভালোর পাশাপাশি মন্দ কাজ যুগে যুগে ছিল, আছে, থাকবে। তবে এখনো নাটকের প্রতি দর্শকের আস্থা, আগ্রহ আছে বলেই দুই ঈদ বা বিশেষ উৎসবে সবাই সপরিবারে টিভিতে বুঁদ হয়ে থাকতে চান।

বাংলাদেশের নাটক একটা মান ধরে রেখেছে বলেই ওপার বাংলার সিনিয়র চলচ্চিত্র অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘রোজ ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে আমি বাংলাদেশের নাটক দেখি। বাংলাদেশের নাটক অনেক সহজ-সরল, ৪০-৪২ মিনিটে একটা পুরো গল্প সহজেই দেখা যায়, বোঝা যায়’। এদিকে আমাদের জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোর ভক্ত রূপসা চ্যাটার্জি নিজের হাতে নিশোর নামে ট্যাটুও করিয়েছিলেন। সেই ভক্ত কিছুদিন আগে মারা গেছেন। মোশাররফ করিমের ভক্তরা তো প্রিয় তারকার সিনেমা দেখার জন্য সিনেমা হলে পুরো একটা শো কিনে ফেলেন। এভাবেই অপূর্ব-নিশো-চঞ্চল চৌধুরী-মোশাররফ করিম-মেহজাবীন চৌধুরী অনেকেরই একাধিক ফ্যান ক্লাব রয়েছে ওপার বাংলায়। নাটক রসাতলে গেলে নিশ্চয়ই এতটা সাফল্য আসতো না।

যদিও এটা সত্যি, ২০২২ সালে আমাদের জনপ্রিয় তারকারা ধীরে ধীরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বা সিনেমামুখী হয়েছেন। বছরের প্রথম ভাগে হাতে গোনা কয়েকটি নাটক এবং বছরের শেষ ভাগে প্রায় অনুপস্থিত থেকেছেন আফরান নিশো। মেহজাবীন চৌধুরী অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কাজ করেছেন কম। যেসব দর্শকের কাছে একই মুখ বা একই জুটি দেখতে দেখতে ক্লান্তি চলে এসেছিল, তারা এ বছর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছেন অন্যদের কাজ দেখার। অবশ্য এতে করে যে নতুন জুটি দাঁড়িয়েছে বা আলাদাভাবে নিশো, মেহজাবীনের জনপ্রিয়তা কেউ ছাড়িয়ে যেতে পেরেছে, তাও নয়। নিশো-মেহজাবীন জুটির ‘টু বাই টু লাভ’, ‘চম্পা হাউজ’ রোজার ঈদে জনপ্রিয় হয়েছিল। তবে বছর শেষে ভিকি জাহেদের ‘পুনর্জন্ম ৩’ বাজিমাত করে দিয়েছে। দর্শক এখন দিন গুণছেন, আগামী বছর ‘পুনর্জন্ম’র শেষ পর্বে রোকেয়ার হাতে নৃশংসভাবে রাফসান হক খুন হবেন। ভিকি জাহেদের ‘প্রায়শ্চিত্ত’ নাটকে নিশো এবং ‘ঘুণ’ নাটকে মেহজাবীন মুগ্ধ করেছেন। ‘ঘুণ’ নাটকে খাইরুল বাসারও ছিলেন সপ্রতিভ, উজ্জ্বল। বহুমুখী চরিত্রে মেহজাবীনের নিজেকে ঝালাই করে নেয়ার চেষ্টা ২০২২ সালেও ছিল। বিশেষ করে ‘ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া’ কিংবা ‘অ্যাম্বুলেন্স গার্ল’ কিংবা ‘ভয়েস ক্লিপ’ নাটকের মেহজাবীনকে দর্শক অনেকদিন মনে রাখবে। শিহাব শাহীনের ‘ভয়েস ক্লিপ’ নাটকে রাস্তায় বাবার ঘ্রাণ মিস করার দৃশ্যটি বছরের সেরা দৃশ্যের একটি। জোভানের সাথে মেহজাবীনের জুটি বরাবরই দর্শক গ্রহণ করে এসেছে। ‘লাভ ভার্সেস ক্রাশ টু’ পুরোপুরি মন ভরাতে না পারলেও রাফাত মজুমদার রিংকুর ‘প্রশ্রয়’ নাটকে জোভানের পরিণত অভিনয় আর মেহজাবীনের পরিমিত সঙ্গত নাটকটিকে অন্য মাত্রা দিয়েছিল।

অপূর্ব তার নিজের জায়গায় সেরা ছিলেন গেল বছরগুলোর মতই। রোমান্টিক বা রোমান্টিক-কমেডি কাজে এবারো তিনি স্বচ্ছন্দ ছিলেন। তার জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে ছিল: উড়ো প্রেম, শুধু তুমিময়, অঘটন, আপনজন, কিচির মিচির ইত্যাদি। সঞ্জয় সমাদ্দারের ‘নিহত নক্ষত্র’ কিংবা শিহাব শাহীনের ‘বদলে যাওয়া মানুষ’ কিংবা ‘নিঃশব্দের আলো’ নাটকগুলোতে অপূর্ব অসাধারণ। খুব সম্ভবত ৬৪টি নাটকে কাজ করেছেন। বছর শেষে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ব্যস্ত হয়ে যাওয়াতে নাটক থেকে সাময়িক দূরে ছিলেন।

মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, ইন্তেখাব দিনার, জাকিয়া বারী মম, তাসনিয়া ফারিনরা টিভি নাটকে বাছাই করা কাজ করে ওটিটি বা সিনেমাতে সময় দিয়েছেন বেশি। নাটকে তৌসিফ মাহবুব, জোভান, সাবিলা নূর, তানজিন তিশা, মিশু সাব্বির, মুশফিক ফারহান, সাফা কবির, সজল, ইরফান সাজ্জাদ, মনোজ প্রামাণিক, সালহা খানম নাদিয়া, শামীম হাসান সরকার, তাসনুভা তিশা, টয়া, ইয়াশ রোহান, খায়রুল বাশার, সারিকা সাবাহ, মৌসুমী হামিদ, কেয়া পায়েল, সামিরা খান মাহি, তানিয়া বৃষ্টি, আরশ খান, নিলয় আলমগীর, জান্নাতুল হিমি, সাব্বির অর্ণব প্রমুখ শিল্পীরা ইন্ডাস্ট্রির চাকা ধরে রেখেছিলেন।

কাজল আরেফিন অমির ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ টিমের সদস্যরা নিজেদের জায়গায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন। এই টিমের ‘ব্যাড বাজ’, ‘গুড বাজ’, ‘দই’, ‘ব্যাচেলরস্ কোরবানী’, ‘ফিমেল টু’ প্রতিটি নাটকই ছিল জনপ্রিয়। জিয়াউল হক পলাশ তার অভিনয়ের ভার্সেটাইলিটি প্রমাণ করেছেন ‘সাদা প্রাইভেট’ নাটকে। নাটকে বটবৃক্ষ তারিক আনাম খানের সাথে তরুণ জিয়াউল হক পলাশের যুগলবন্দী অনেকদিন মনে রাখবে দর্শক। নির্মাতা আশিকুর রহমান কম কাজ করেন। তবে ‘সাদা প্রাইভেট’কে বর্ষসেরা নাটকের তালিকায় অনেকেই রাখবেন।

নতুনদের মধ্যে দুটি মুখ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়েছেন। একজন সাদিয়া আয়মান, অন্যজন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। মিজানুর রহমান আরিয়ানের দুই নাটক ‘ফুলের নামে নাম’-এ সাদিয়া, ‘সুহাসিনী’ তে তটিনী সবার নজরে এসেছিলেন। দুটি নাটকেরই নায়ক তৌসিফ-জোভানকে কৃতিত্ব দিতে হয় এ ক্ষেত্রে। নতুন নায়িকার নামে নাটকের নাম হবার পরও তারা তাদের নিজেদের অবস্থান নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। যার পুরস্কার দিয়েছেন দর্শকরা। নাটক দুটি বেশ আলোচনায় এসেছিল। ‘বাঁচিবার হলো তার সাধ’ নাটকে আফরান নিশোর বিপরীতে তটিনী এবং ‘নরসুন্দর’, ‘প্রেমকাহিনী’ নাটকগুলোতেও সাদিয়া ছিলেন সাবলীল।

অনেকে বলেন, ট্রেন্ডি গল্পের নাটক এখন বেশি চলে। ভিউ হয়। ট্রেন্ডি পরিচালক হিসেবেও অনেকে ৭/৮ জনের নাম উল্লেখ করেন। তবে দর্শক যে যুগে যুগে সবার আগে একটা ভালো গল্পের অপেক্ষায় থাকে, বাস্তবিক অনুভূতি আর মন ছুঁয়ে যাওয়া সংলাপ-অভিনয় পেলে যে দর্শক আর কিছু চায় না, তার প্রমাণ ‘একটা নির্জন দুপুর চাই’। সৈয়দ শাকিল নির্মিত অপূর্ব-তাসনিয়া ফারিন জুটির এ নাটকটি বছরের শীর্ষ জনপ্রিয় নাটকের একটি। এই জুটির অভিনীত শিহাব শাহীনের ‘বদলে যাওয়া মানুষ’ও মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। তাসনিয়া ফারিন-তাহসান জুটির ‘কমলা রঙের রোদ ২’ আগের নাটকটির জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেনি। তবে তাসনিয়া ফারিন-তৌসিফ মাহবুব জুটি অভিনীত মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘এখানে দুজনে’, ‘এখানেই শেষ নয়’, ‘শুরুটাই সুন্দর’ কিংবা জাহিদ প্রীতমের ‘মেঘে ঢাকা রোদ্দুরে’ ছিল ভীষণ সুন্দর।

তৌসিফ মাহবুব খুব সম্ভবত ২০২২ সালেই তার ক্যারিয়ারের সেরা বছর পার করেছেন। অভিনয়ে তিনি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সিরিয়াস। জনপ্রিয়তাও বেড়েছে কয়েকগুণ। জাহিদ প্রীতমের ‘লিলুয়া’, মাহমুদুর রহমান হিমি’র ‘পার্থক্য’ বা ভিকি জাহেদের ‘চোখ’, রাফাত মজুমদার রিংকুর ‘সাইলেন্স’, মুহাম্মদ মিফতাহ আনানের ‘এই অবেলায়’ প্রতিটি কাজেই নতুন তৌসিফকে খুঁজে পাওয়া গেছে। ‘চোখ’, ‘সাইলেন্স’ কিংবা ‘এই অবেলায়’ নাটকে তানজিন তিশাও নজর কেড়েছেন। মোশাররফ করিমের বিপরীতে এস আর মজুমদারের ‘ওলোট পালোট’, ‘বউয়ের বয়স ১৬’? সাগর জাহানের ‘শেষটা আমার ছিল’, মহিদুল মহিমের ‘ঘটক’ ও ‘কি করে বলবো তোকে’ তিশার জনপ্রিয় কাজ। তবে ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্র, যেমন: রাফাত মজুমদার রিংকু’র ‘রিকশা গার্ল’ কিংবা মাহমুদুর রহমান হিমি’র ‘প্রস্থান’-এ তিশা তার ভক্তদের সমর্থন পেয়েছেন।

সাবিলা নূর-ও গল্প সমৃদ্ধ নাটকে নিজের মেধার স্ফূরণ দেখিয়েছেন ২০২২ সালে। বিশেষ করে মাহমুদুর রহমান হিমি’র ‘রিদিকা’ নাটকে সাবিলার অভিনয় দর্শক অনেকদিন মনে রাখবে। অপূর্ব’র সাথে অঘটন, কাগজের বিয়ে, তুমি আমি পাশাপাশি, বিপদ সংকেত, বাক্স বদল, এক্সচেঞ্জ রিটার্নস, প্রিয়জন, লাস্ট ফাইভ আওয়ার্স সাবিলার জনপ্রিয় ধারার কাজ। শিহাব শাহীনের ‘নিঃশব্দের আলো’ অপূর্ব-সাবিলা জুটির আরেকটি ভালো কাজ। সাফায়েত মনসুর রানা’র হট প্যাটিস নাটকেও সাবিলা ছিলেন ভীষণ সাবলীল। একই পরিচালকের ভ্যালেন্টাইনস ডে’র জন্য নির্মিত অপ্রকাশিত (ফারিন-ইরফান সাজ্জাদ), ব্ল্যাক বক্স (সামিরা খান মাহি-ইয়াশ রোহান) ছিল প্রশংসিত ও জনপ্রিয় নাটক।

ভ্যালেন্টাইনস্ ডে তে বরাবরের মত এবারও ‘ক্লোজআপ’ ব্র্যান্ডের নাটক ছিল। নাইস টু মিট ইউ নাটকে টয়া-তামিম মৃধা, আর থেকো না দূরে নাটকে সুনেরাহ-ইরফান সাজ্জাদও ভালো করেছেন। তবে এবার অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘ফাগুন থেকে ফাগুনে’ তুলনামূলক বেশি জনপ্রিয়তা পায়। নাটকে সাফা কবির ও সুদীপ বিশ্বাস দীপের কাজ দর্শক পছন্দ করে।

সাফা কবিরের অন্যান্য জনপ্রিয় কাজের মধ্যে রয়েছে জাপানি বউ, ওরা ৩জন, গুডবাজ, ব্যাডবাজ, প্রেম ২০২২, আরেকবার ভালোবাসি, টাচ, গোল্ডেন গোল ইত্যাদি। ‘নয়নতারার গল্পকথা’ নাটকে সাফা-খাইরুল বাসারের অভিনয় মন ছুঁয়ে গেছে। ‘গোল্ডেন গোল’ নাটকে সাফার নায়ক ছিলেন জোভান। জোভান এ সময়ের নির্ভরযোগ্য নায়ক-অভিনেতাদের মধ্যে একজন। জোভান এ বছর ‘প্রশ্রয়’, ‘বাবা তোমার জন্য’, ‘ও আমার বোন না’, ‘হাঙ্গর’, ‘ব্যবধান’ নাটকে যেমন পরিণত অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসাধন্য হয়েছেন, তেমনি আমজনতার সমর্থন পেয়েছেন লাভ ভার্সেস ক্রাশ ২, কি করে বলবো তোকে, বিয়ে পাশ, গার্লফ্রেন্ড যখন ভাবী, লাভ ট্রিপ, টোনাটুনি রিসোর্ট, গ্রেট গার্লফ্রেন্ড, টাচ ইত্যাদি নাটকে।

মোশাররফ করিম মুগ্ধ করেছিলেন শহীদ-উন-নবী’র ‘অ্যাম্বুলেন্স’ নাটকে। সোহেল হাসানের ‘উত্তরাধিকারী’ নাটকে মোশাররফ করিম-তারিন পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন। ‘বাবা তোমার জন্য’ এ বছরের প্রশংসিত কাজের একটি। এই নাটকে কেয়া পায়েলের অভিনয়ও দর্শকরা পছন্দ করেছেন। ‘লিলুয়া’, ‘নসীব’, ‘ভুলো না আমায়’, ‘একজন মধ্যবিত্ত বলছি’, ‘জান কোরবান’, ‘পিশাচ’, ‘কিচির মিচির’ কেয়া পায়েলের সফল কাজ। ‘নসীব’, ‘হাঙ্গর’ ‘ভুলো না আমায়’, ‘একজন মধ্যবিত্ত বলছি’, ‘শাদী মোবারক’, ‘ওয়েডিং ক্রাশ’, ‘প্রেম অল্প স্বল্প’, ‘ডিয়ার লাভ’, ‘দরদ’, ‘পিশাচ’ ইত্যাদি নাটকগুলোর প্রধান অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান এ বছরও তার মত কাজ করে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। শামীম হাসান সরকার-ও চাহিদাসম্পন্ন অভিনেতা। শামীম হাসানের সাথে অহনার জুটির ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ‘খেলা হবে’, ‘ভালোবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া’, ‘শ্বশুরবাড়ি নোয়াখালি’, ‘গুড লাক’ নাটকে অহনার বিপরীতে এবং ‘জুতা চোর’, ‘গ্যারেজ বয়’, ‘ভালো থেকো রেনু’ ইত্যাদি ছিল শামীম হাসান সরকারের জনপ্রিয় নাটক।

রওনক হাসান একই সাথে গুণী নাট্যকার, পরিচালক, অভিনেতা। তার নাটক ‘মাছ’ অনেক দর্শকের কাছে ২০২২ সালের সেরা নাটক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। নাটকে মৌসুমী হামিদও যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন।

চঞ্চল চৌধুরী, শাহনাজ খুশি ‘পাল বাড়ি’, ‘সুশিল ফ্যামিলি’, ‘পিকচারম্যান’, ‘চরিত্র সনদ’ নাটকে প্রশংসিত হয়েছেন। বছরের অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘পিতা বনাম পুত্র গং’-এও অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। অনলাইন অফলাইন, শারীরিক শিক্ষা, ফ্যামিলি ক্রাইসিস রিলোডেড, চিরকুমার চিকু সংঘ, মা বাবা ভাই বোন এ বছরের আলোচিত ধারাবাহিক নাটক। যদিও কাজল আরেফিন অমি’র ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ এ বছরও সবচেয়ে বেশি দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছে।

সব মিলিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার দেখা হয়েছে যেসব নাটকের নামই এসেছে এই প্রতিবেদনে। এর বাইরেও হয়তো অনেক ভালো কাজ হয়েছে। হাজারো সীমাবদ্ধতার মাঝে এখনো যে আমাদের নির্মাতারা নাটক নির্মাণ করেন, তার কারণ আমাদের দর্শক। বাংলা নাটকের এখনো বিপুল দর্শক রয়েছে। তার প্রমাণ: বাংলা নাটক নিয়ে আলোচনা করার জন্য অসংখ্য গ্রুপ রয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে। খুব বেশি চাওয়া নেই। ২০২৩ যেন ২০২২ সালের ভালোর আলোটুকু ছাড়িয়ে যেতে পারে, এটুকুই প্রত্যাশা।

*লেখাটি সারাবাংলা ডটনেটে প্রকাশিত


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

নাট্যকার, চিত্রনাট্যকার, চলচ্চিত্র সমালোচক ও উপস্থাপক। মাছরাঙা টেলিভিশনে ক্রিয়েটিভ হেড হিসেবে কর্মরত।

মন্তব্য করুন