দারুণ এক উপহার ‘জাহান’
‘জাহান’-এর ট্রেলার দেখেই অপেক্ষায় ছিলাম, দেখার পর ভালো লাগলো। অভ্যাসবশত রিভিউ খুঁজতে যেয়ে দেখি খুব একটা কিছু নেই। বুঝলাম বরাবরের মতো নাজিয়া হক অর্ষা নামের এই চমৎকার অভিনেত্রী তার অন্যতম এক দুর্দান্ত কাজের পরও আন্ডাররেটেডই থাকলেন।
মনস্তত্বের জটিলতা নিয়ে আমাদের দেশে তো খুব একটা কাজ হয় না। আর হলেও সেটাতে গল্পের গাঁথুনির ত্রুটি থেকেই যায়। তাই স্বল্প পরিসরের কিছু কথা লিখতে আগ্রহী হলাম।
গল্পের শুরুটা হয়েছে জাহান নামের এক গৃহিণীর বাসায় পুলিশ ডেকে আনার মধ্যে দিয়ে। তিনি দাবি করেন, মাকে খুন করেছেন। যদিও পুলিশ এসে কিছুই পায় না। যাওয়ার সময় এক পুলিশ সদস্য উপদেশ দেন, ‘বাচ্চা নেন, সব ঠিক হয়ে যাবে’। এই সংলাপ দিয়ে আসলে চমৎকারভাবে আমাদের দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বিষয়টা যে কত অবহেলিত তা প্রকাশ হয়ে পড়ে।
এরপর গল্প এগিয়ে যায় জাহানের প্রেমময় স্বামীর সঙ্গে যাপিত জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে। এক দুর্ঘটনা দর্শককে অন্য এক বাস্তবতার সামনে দাঁড় করায়। কল্পনা আর বাস্তবতার সাথে তাল মেলাতে নিরন্তর যুদ্ধ করা জাহান কি আসলে অপরাধী নাকি জীবন্ত বলি; সেই হিসেব দর্শককে চিন্তায় ফেলে দেয়।
প্রথমেই বলতে হয় গল্পটি যদিও দ্রুত লয়ের নয়, কিন্তু দর্শককে একবারের জন্যও অমনোযোগী হবার সুযোগ দেবে না।
অভিনেতা-অভিনেত্রী হিসেবে প্রত্যেকেই ভালো ছিলেন। স্বপ্ন ও বাস্তবতার মাঝে দর্শক হিসেবে আতংকিত হয়ে উঠতে হচ্ছিলো পরবর্তী দৃশ্যের অপেক্ষায়। এর কৃতিত্ব তো অভিনেতা-অভিনেত্রী ও সর্বোপরি পরিচালককে দিতেই হবে। তবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানের চরিত্রকে আরেকটু বিকশিত করার সুযোগ ছিলো সম্ভবত। তাতে করে পুরো গল্পটার সাথে হয়তো দর্শক আরেকটু সংযোগ করতে পারতো।
সিনেমাটোগ্রাফি, সেট ডিজাইন সব অত্যন্ত গোছানো চিন্তার ফসল। সংলাপের ব্যাপারে কিছু বলার নেই। তবে বাজেট স্বল্পতা কিনা জানি না, গল্পের শেষটা নিয়ে আরো কাজের সুযোগ ছিল। সম্ভবত এ অংশে কিছুটা অতৃপ্তি থেকেই যাবে। তবে সেটা আরো ভালো কাজ দেখতে না পারার অতৃপ্তি ভিন্ন কিছু নয়।
সর্বোপরি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য অবশ্যই একটি ভালো কাজ। প্রধান অভিনেতা-অভিনেত্রী দুজনকেই ভবিষ্যতে আরো ভালো কাজে দেখতে পেলে ভালো লাগবে।
Review
0%
Summary