দেবাশীষের কারণে সিনেমা প্রযোজনা থেকে সরে দাঁড়াতে পারে আরটিভি
সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘চলো পালাই’ নিয়ে প্রযোজকের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাসের। এবার ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ এর প্রযোজনা সংস্থা অভিযোগ আনল।
জানা গেছে, আরটিভির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে ছবি জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা রক্ষা করতে পারেননি দেবাশীষ। ওই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনার এসব আচরণের কারণে আরটিভি হয়তো আর সিনেমায় লগ্নিই করবে না।’
এ নিয়ে প্রযোজনা সংস্থা বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়ার প্রতিনিধি সুজন আহমেদ স্যোশাল মিডিয়ায় লেখেন, “দেবাশীষ বিশ্বাস, দোহাই লাগে আপনি আর কুমিরের বাচ্চা দেখাবেন না। ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ নির্মাণের জন্য আরটিভির সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে ছবি জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা আপনি রক্ষা করেননি। বরং চুক্তি অনুযায়ী সময় মতো সকল অর্থ আপনি আরটিভির কাছ থেকে নিয়েছেন। জমা দেয়ার সময় ৬ মাসের জায়গায় ১ বছর ৮ মাস অর্থাৎ ২০ মাস চলছে। সোস্যাল মিডিয়াতে এসব ছবি আপলোড করে আপনি কি প্রমাণ করতে চান? কার কাছে ভালো সাজতে চান? শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-২ এর মাস্টার কপি তো দূরের কথা আপনি একটি লাইনআপও জমা দিতে পারেননি। একের পর এক বিভিন্ন অজুহাত এবং জমা দেয়ার ডেট দিয়ে যাচ্ছেন। আপনার নামে প্রচুর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও আপনার বারবার অনুরোধ আর আপনার বাবা দিলীপ বিশ্বাস এর প্রতি সম্মান রেখে আরটিভি আপনাকে এই ছবি করার সুযোগ দিয়েছে কিন্তু আমরা এখন হয়রানির শিকার।”
তিনি আরও লেখেন, “গত ১৮ মে ২০১৯ তারিখে পরিচালক সমিতিতে বসে পরদিন ১৯ তারিখে ছবির একটি কপি আরটিভিতে আপনি নিজে এসে জমা দেয়ার কথা হয়েছিল কিন্তু আপনি সেকথাও রাখেননি। পরিচালক সমিতিতেও আপনি আর দেখাও দেননি। আপনার এসব আচরণের কারণে আরটিভি হয়তো আর সিনেমায় লগ্নিই করবে না। ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ এবং আরটিভিকে শো করে নিজের কাটতি বাড়ানো এবং এর-ওর সাথে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ এর নাম দিয়ে পোস্ট দেয়া বন্ধ করে ছবির কাজ শেষ করে দ্রুত জমা দিয়ে আমাদের বাঁচান, সিনেমাও বাঁচুক।”
এদিকে দেবাশীষ বিশ্বাস দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘তাদের অভিযোগ সম্পর্কে জেনেছি। এটা ঠিক, তাদেরকে আমি ছবিটি এখনো জমা দিইনি। তারা যেসব অভিযোগ করেছেন তার কিছুটা ঠিক আবার কিছুটা ঠিক না। কারণ তারা ৬ মাসের জায়গায় ২০ মাস ধরে বিরতি নিয়ে টাকা দিলে আমার ছবি বানাতে তো ২০ মাসই লাগবে। আর আমি এখনো আরটিভির কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা পাই। সে টাকা না নিয়ে তো আমি ছবিটা দিতে পারি না। তারা যেদিন এই টাকাটা আমাকে দেবে সেদিনই তাদের ছবিটা শেষ করে দেব।’
তবে সংবাদমাধ্যমটিকে আরটিভি কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘টাকার বিষয়ে তার অভিযোগ সঠিক নয়, কারণ টাকা পরিশোধের তারিখ ও তার স্বাক্ষর একাউন্স বিভাগে রয়েছে। সকল টাকা পরিশোধের পরও এখন যে টাকার কথা বলছে এটা তার অপরাধকে আড়াল করা এবং নতুন ভাবে টাকা দাবি করার কৌশল মাত্র। আর সিনেমার নায়ক-নায়িকা টাকা পাননি বলে যে অভিযোগ প্রযোজকের নিকট করেছে তা তাকে জানিয়ে প্রযোজক তাকে বারবার ডাকলেও সে সাড়া দেয়নি। অপু বিশ্বাস এবং বাপ্পী তখন বলেছে যে তারা প্রযোজকের নিকট থেকে তাদের পাওনা নিতে চাচ্ছে। এবং সে চুক্তির পর টাকা নেওয়ার সময় ছবিতে দৃশ্যায়িত করার জন্য আমাদের কাছে ৫টি অডিও গান জমা দিয়েছিল কিন্তু এখন বলছে গান ৩টি করেছি। তা ছাড়া বারবার চাওয়ার পরও যতটুকুই নির্মাণ হয়েছে বলে সে দাবি করছে সেটারও কোনো লাইনআপ সে জমা দেয়নি। এই প্রথম সে ৯৫% কাজ শেষ হয়েছে বলে স্বীকার করেছে। সুতরাং সে ছবির ৯৫% ভাগ কাজ করেছে কিনা- এটা মৌখিক বাক্য ছাড়া বাস্তব কোনো ভিত্তি নেই আমাদের কাছে। প্রতিটি বিষয়ের চুক্তিপত্র, দলিল এবং ভিডিও ফুটেজ ও সিসিটিভি ফুটেজ আরটিভির নিকট রয়েছে।”