Select Page

‘বাচ্চাটার জন্যে একটু সহনশীল হতে পারতেন’, চিত্রশিকারীদের উদ্দেশে পরীমনি

‘বাচ্চাটার জন্যে একটু সহনশীল হতে পারতেন’, চিত্রশিকারীদের উদ্দেশে পরীমনি

পরীমনির উপস্থিতি মানেই অজস্র ক্যামেরার ‘ক্লিক ক্লিক’ শব্দ ও আলোর ‘ঝলকানি’। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাইছেন তিনি। সম্প্রতি ‘মা’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে সন্তানকে নিয়ে যাওয়ার পর বিপত্তিতে পড়েন তিনি।

লুৎফর হাসানের তোলা ছবির সঙ্গে কোলাজ

সেই অভিজ্ঞতা ফেসবুকে শেয়ার করেন আলোচিত নায়িকা। লেখেন, “আজ আমি একসাথে অনেক কষ্ট আর অনেক আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরলাম ‘মা’ সিনেমা দেখতে গিয়ে! কষ্ট পেয়েছি কারণ, আমার বাচ্চাটা অনেক ভয় পেয়েছে। রাজ্য যখন অনেক ছোট তখন থেকেই আমি ওকে নিয়ে হলে গিয়ে ছবি দেখেছি অনেকবার। শো শেষে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছি সবসময় সুন্দর-শৃঙ্খলা পরিবেশে।”

কিন্তু গতকাল বুধবার (৩১ মে) পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। তিনি বলেন, “আজকে এমন উছশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করলো কেউ কেউ, তাতে বাজেভাবে আমার বাচ্চাটা ভয় পেলো। কতো কাছের মানুষজনকে দাওয়াত করে একটা হ্যালোও করতে পারি নাই তাদের সাথে আমি! অথচ আমি আপনাদের সবার সাথে সিনেমা দেখবো, কথা বলবো বলেই তো গিয়েছিলাম। হল থেকে বেরোনোর সিঁড়িটার মুখে এতো এতো ক্যামেরা আর লাইট দিয়ে আটকে রাখলেন কেউ কেউ। আমি বার বার রিকোয়েস্ট করলাম বের হওয়ার পথটা ছেড়ে দেয়ার জন্যে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই বলছিলো আমাকে পথ ছেড়ে দিয়ে লবিতে ক্যামেরা সেট করার জন্যে। এই নিয়ে আপনারা নিজেদের মধ্যে ঝামেলা শুরু করলেন যেটাতে বাচ্চাটা ভয় পেয়ে গেলো। আপনারা বাচ্চাটার জন্যে একটু সহনশীল হতে পারতেন। কেন যে এমন করলেন!” অবশ্য মনে থেকে ভালোবাসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান পরী।

একই শো’তে উপস্থিত ছিলেন গায়ক-গীতিকার ও লেখক লুৎফর হাসান। তিনিও বেশ বিরক্ত। আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) ফেসবুকে লেখেন, “পরশু রাতে ভীষণ আন্তরিকতার সাথে পরীমনি তার সিনেমা দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। আমি তার আন্তরিকতা উপেক্ষা করতে পারলাম না। গতকাল সন্ধ্যায় তার কথা রাখতেই তার নতুন সিনেমা ‘মা’ দেখতে বসুন্ধরা আসলাম। সিনেমা শুরু হবার কিছুক্ষণ পর তিনি তার ছোট্ট বাচ্চাকে নিয়ে হলে আসলেন। বসলেন যে সিটে, আমি তার সামনে বসা। ভাবলাম সিনেমা শেষ করে সিনেমায় তার ভাত খাওয়ার অনিন্দ্য সুন্দর অভিনয়টা নিয়ে কথা বলব।”

‘কিন্তু…’ উল্লেখ করে ঘুড়ি-খ্যাত গায়ক লেখেন, “সিনেমা চলাকালেই এক ঝাঁক ইউটিউবার এসে তাকে ঘিরে ধরলো। ইউটিউবার এজন্য বলছি, সাংবাদিকদের সবাইকে তো চিনি। সাংবাদিকেরা ভীষণ বিব্রত ও অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন। ইউটিউবারদের মধ্যে একজনও মূল ধারার সাংবাদিক ছিল না। তারা এমন ভাব দেখাচ্ছিল যে, পরীমণি তাদের পরিচিত, এটা তারা বুঝাতে চাইছিল।

তারা ছোট্ট শিশুটার চোখেমুখে ফ্ল্যাশের পর ফ্ল্যাশ ফেলার আগে একবারও ভাবলো না, বাচ্চাটা একেবারেই অবুঝ। এইসব উপুর্যুপরি লাইটে বাচ্চাটা ভয় পাচ্ছে। তাদের দরকার কনটেন্ট। পরী যতক্ষণ ছিলেন, ইউটিউবারেরা যা করলো, সেটা চূড়ান্ত বিভীষিকা।

অনেকবার মনে হচ্ছিল, বেরিয়ে যাই। কিন্তু সিনেমাটা দেখেই যাব বলে, চুপ করে ‘খিঁচ মেরে’ বসে রইলাম। সিনেমা শেষে লাইট জ্বলে উঠতেই যে ভয়াবহ দৃশ্য, এরকম বিভীষিকার অভিজ্ঞতা আমার নাই বললেই চলে। যাহোক, পরী মণি চলে গেলেন নিজের বাচ্চাকে এদের হাত থেকে পরিত্রাণের জন্য। একজন মা হিসেবে নিশ্চয়ই তিনি বুঝতে পেরেছেন, এই তথাকথিত মানুষগুলো কোনো বাচ্চার সমস্যা বুঝতে পারবে না।

পরী চলে যাবার পর আমি সেই ইউটিউবারদের দেখলাম মনোযোগে। কী অদ্ভুত!  অবিকল মানুষের মতো দেখতে। অথচ তারা মানুষের পর্যায়ে পড়ে না।”

অবশেষে লুৎফর বলেন, “পরীর জন্য শুভকামনা। আশা রাখি তিনি এরপর কোথাও গেলে নিজের সন্তানকে এইসব কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের হাত থেকে নিরাপদে রাখবেন।”

এই গায়কের পোস্টে মন্তব্য করেন গায়িকা আঁখি আলমগীর, “ওখানে অতটুকু বাচ্চা কে নেয়া ঠিক হয়নি।” “আপু, আমরাও তো মা খালাদের কোলে বসে সিনেমা দেখে বড় হইছি”— পরে লুৎফরের মন্তব্যে জবাবে আঁখি বলেন, “এখন পরিবেশ পাল্টে গেছে। পরী মানেই মানুষ তাকে ঘিরে রাখবে। মা-খালাদের সেটা পোহাতে হতো না। পরী ভালবেসে আদর করেই নিয়েছে কিন্তু যেখানে পরিস্থিতি আপনার কন্ট্রোলে নেই সেখানে বাচ্চাকে দূরে রাখাই শ্রেয়। মা হিসেবে বলেছি, পুরনো মা তো!”


মন্তব্য করুন