রুমানা রশীদ ঈশিতা অভিনীত প্রিয় ৫ নাটক
শিশুশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। জিতেছিলেন নতুন কুঁড়ির সেরার পুরস্কার। রুমানা রশীদ ঈশিতা নাচ-গান-অভিনয় সবক্ষেত্রেই পারদর্শী। পরে নব্বই দশকের শেষ দিকে টিভি নায়িকা হিসেবে তার অভিষেক। বেশ কিছু নাটকের কথা এখনো দর্শকের স্মৃতিতে লেগে আছে। করেছেন সিনেমাও। এখানে তুলে ধরা হলো তার অভিনীত নাটক থেকে প্রিয় পাঁচটি।
পাতা ঝরার দিন: বয়সের বার্ধক্যতায় স্মৃতি লোপ পেয়েছে বাবার, খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিজ গন্তব্যের, আর তাকে খুঁজে পেতে পথে বেরিয়েছেন তাঁর বড় মেয়ে। বাবা ও মেয়ের মধুর সম্পর্ক নিয়ে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত রেদোয়ান রনির নাটক ‘পাতা ঝরার দিন’।
বাবা চরিত্রে অভিনয় করেছেন বর্ষিয়ান অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম বড় মেয়ের চরিত্রের মধ্য দিয়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন ঈশিতা,আরো ছিলেন মৌসুমী হামিদ। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে সমালোচক শাখায় প্রথমবারের মত সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন ঈশিতা।
ইতি, মা: মধ্যবিত্ত পরিবারের এক আবেগঘন গল্প। বাবাকে হঠাৎ হারিয়ে ঋণে জর্জরিত পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী বড় মেয়ে, বড় ছেলে চাকরির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় ঢাকায়। ছোট ছেলে রাজনীতিতে জড়িয়ে গোল্লায় গেছে। এমন সময় মেয়ে জানতে পারে মায়ের এক অপূর্ণ ইচ্ছার কথা, সে জানায় বড় ভাইয়ের কাছে। তারপর দুইজনেই ঠিক করে মায়ের সেই অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করবে তার জন্য পাড়ি দিতে হয় কঠিন পথ।
আলোচিত নির্মাতা আশফাক নিপুণের টেলিফিল্ম ‘ইতি, মা’র গল্প এভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। বড় মেয়ের চরিত্রে ঈশিতার দারুণ অভিনয় এই নাটককে আরো মহিমান্বিত করেছে,একটা বিশেষ দৃশ্যে তিনি অতুলনীয়া ছিলেন,সঙ্গে ভাই আফরান নিশো ও মায়ের চরিত্রে শিল্পী সরকার অপুর মায়াভরা অভিনয়।
ভালোবাসার বৃষ্টি: ছোটবেলা থেকেই অভাবের কারণে তার ভিতর ক্ষোভ কাজ করত, জীবিকার তাগিদে অন্ধ বান্ধবীর সহকারী হিসেবে কাজ করছে। তার ভালো লেগে যায় অন্ধ বান্ধবীর ভালোবাসার মানুষকে, সে যে করেই হউক তাকে পেতে চায়, জেগে উঠে প্রতিহিংসা।
অরুণ চৌধুরীর রচনা ও পরিচালনায় ‘ভালোবাসার বৃষ্টি’ নাটকে এমনই খল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ঈশিতা, বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। ঈশিতা ছাড়াও ছিলেন ফিমা ও শাহেদ।
জনক: অরণ্য আনোয়ারের এই ধারাবাহিকে দেখা যায় শত প্রতিকূল পেরিয়ে পড়ালেখা করে যাচ্ছে ঈশিতা, কিন্তু বাবার লোভের কারণে তাকে বিয়ে করতে নিজের বয়সের দ্বিগুণ হুমায়ুন ফরীদিকে। একদিন উপস্থিত হয় সৎ ছেলে মাহফুজ আহমেদ।
বিটিভিতে প্রচারের পর এই ধারাবাহিক বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। নাটকে আরো ছিলেন ডলি জহুর,মীর সাব্বির,বিজরী।
দূরত্ব: মা হারানো ধনী বাবার একমাত্র মেয়ে, দুর্ঘটনার জন্য খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়। ভীষণ একা, তাকে খুন করবার জন্যই লোক ঠিক করে বাবা। নিজের বান্ধবীর জন্য ভালোবাসার মানুষকে ত্যাগ করে।
অরুণ চৌধুরীর এই গল্প প্রথমে ‘স্পর্শ’ নামে প্রচার হয় বিটিভিতে, অভিনয় করেছিলেন বিপাশা, শমী ও আজিজুল হাকিম। পরে অরুণ চৌধুরী নিজেই নির্মাণ করলে প্রধান ভূমিকায় বিপাশা হায়াতের চরিত্রে বেছে নেন ঈশিতাকে, সঙ্গে ছিলেন অপি করিম ও শাহেদ।
বিশেষ বিবেচনায় অদ্ভুতুড়ে: পরিবারের মেজ বউ, অন্যান্যদের থেকে আলাদা। গানে গানে কথা বলে, এই নিয়ে স্বামী বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান। আনিসুল হকের রচনায় আশরাফী মিঠুর এই ধারাবাহিক নাটকে পুরো অংশে দর্শকদের হাসিয়ে গিয়েছিলেন ঈশিতা, তিনিই ছিলেন মেজ বউয়ের চরিত্রে। ঈশিতার বিপরীতে ছিল শাহেদ।
এছাড়া ঈশিতা অভিনীত নাটকের মধ্যে লাল বেনারসী, অপরূপা, অস্তিত্ব, দিন দিন প্রতিদিন, অন্যরকম ভালোবাসা, দূরে বৃষ্টি, অথচ ভালোবাসা অন্যতম।