সেরা কাজটি এখনো করা হয়নি: মাহফুজুর রহমান খান
চলচ্চিত্রকার হিসেবে ১০ বার জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছেন চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান। হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা‘র জন্য আবারও পেলেন এই সম্মান। এ প্রসঙ্গে তার সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’এ। বিএমডিবি পাঠকদের জন্য সাক্ষাতকারটি হুবহু তুলে দেয়া হলো-
সর্বোচ্চ ১০ বার জাতীয় সম্মান প্রাপ্তির অনুভূতি কেমন?
এটি আমার পরম সৌভাগ্য। সৃষ্টিকর্তার কৃপা আর নির্মাতা এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা। সবার ভালোবাসা না পেলে হয়তো এ অর্জন সম্ভব হতো না। তাই সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এতে প্রতিবারই আমার দায়িত্ব ও উৎসাহ কয়েক ধাপ বেড়েছে।
চিত্রগ্রাহক হিসেবে আপনার পথপরিক্রমা কত দিনের?
তা তো ৪০ বছরের বেশি হবে। ১৯৭২ সালে আবুল বাশার চুন্নুর ‘কাঁচের স্বর্গ’ চলচ্চিত্র দিয়ে আমার যাত্রা শুরু। এ পর্যন্ত শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছি।
হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্রে সর্বাধিকবার জাতীয় সম্মান পেলেন, এটি কিভাবে সম্ভব হলো?
হ্যাঁ, তার ছয়টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। এর মধ্যে চারটিতেই জাতীয় পুরস্কার পেলাম। এগুলো হচ্ছে_ ‘শ্রাবণ মেঘের দিন‘, ‘দুই দুয়ারী‘, ‘আমার আছে জল‘ এবং ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। আসলে হুমায়ূন আহমেদ অনেক উঁচুমাপের একজন নির্মাতা ছিলেন, যা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। তিনি যখন গল্প শোনাতেন তখন কাজটা সহজেই চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ভেসে উঠত। প্রতিটি শর্ট অত্যন্ত যত্ন নিয়ে তিনি দেখতেন। বিশেষ করে ‘ঘেটুপুত্র কমলা’য় তিনি যেন পরম মমতায় বাড়তি যত্ন নিয়ে কাজ করেছেন। শুটিংয়ের আগে ও পরে রীতিমতো চলচ্চিত্রের প্রতিটি নির্মাণ কাজ নিয়ে গবেষণা করতেন। তার এই অক্লান্ত ও নিবিড় পরিচর্যায় ইউনিটের সবাই ভালো কিছু করার উৎসাহ পেত এবং ভালো কাজের অংশীদার হতো। হুমায়ূন আহমেদের একটি গ্রেট টিম ছিল। সেখানে তার স্ত্রী শাওন, সহকারী জুয়েলসহ প্রত্যেকেই কাজের প্রতি অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন।
বেশ কিছু চলচ্চিত্রে আপনি নায়ক ছিলেন, নায়ক হিসেবে যাত্রা অব্যাহত রাখলেন না কেন?
কারণ ফটোগ্রাফি ছিল আমার প্রধান শখ। পরে এটিকে পেশা হিসেবে নিলাম। ফটোগ্রাফি হচ্ছে নিজের কাছে পৃথিবীর সেরা আনন্দের কাজ। তাছাড়া মনে হতো শিল্পী হওয়াটা বড্ড কঠিন। তার চেয়ে ফটোগ্রাফার হওয়া ঢের সহজ। তাই ফটোগ্রাফিকেই প্রাধান্য দিয়েছি এবং সফল হয়েছি।
আপনার নিজের কাছে নিজের সেরা কাজ কোনটি?
আমার জীবনে সেরা কাজটি এখনো করা হয়নি। এর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি এবং কাজটি করে যেতে পারব বলে আশাবাদী। আমাদের এই সুজলা, সুফলা সোনার বাংলার অপরূপ রূপ তুলে ধরে ক্যামেরায় এমন কিছু কাজ করে যেতে চাই যা মৃত্যুর পরও আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে।
নতুনদের জন্য কি বলবেন?
তাদের জন্য উপদেশ নয়, আমার সাজেশন হচ্ছে ক্যামেরার প্রতিটি শর্টকে শেষ শর্ট মনে করে কাজ করতে হবে। এতে কাজের মান বাড়বে। কাজটি সহজেই সফল হবে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন