![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
আম্মা পরাণ দেখলেন না! আমি কেন দেখলাম?
পরাণ সিনেমাটা দেখলাম। ছবির নির্মাতার নাম রায়হান রাফি। শ্রেষ্ঠাংশে আছেন বিদ্যা সিনহা মিম, ইয়াশ রোহান এবং শরীফুল রাজ। আমার মতে এই ছবিতে স্পয়লার দেওয়ার কিছু নাই। ছবির কাহিনী সবাই অলরেডি জানে! ছবির কিছু খুঁটিনাটি নিয়া বিশদে কথা বলা দরকার মনে করি। এক এক কইরা বলি-
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/07/poran_bmdb_image.jpg?resize=855%2C508&ssl=1)
আমি কেন পরাণ দেখলাম?
আমার জন্য এই ছবির প্রতি একটা অন্যতম আকর্ষণের বিষয় ছিলো এর লোকেশন। ছবিটা বানানো হইছে আমার হোম টাউন মমেনসিংয়ে। শুটিং হইছে মমেনসিং এর সবচেয়ে সুন্দর সুন্দর এলাকায়- রেলব্রিজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আলেকজান্ডার ক্যাসেল, সার্কিট হাউজ- কোনটা রাইখা কোনটা বলব? সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালো। মফস্বলের পচা হলে না দেইখা কোন সিনেপ্লেক্সে দেখলে আরও ভালো লাগতো নিশ্চয়ই। শৈশব কৈশোরের মায়াময় পরিবেশ সিনেমার পর্দায় দেখতে কার না ভালো লাগে! এই সিনেমা অনেক হিট, দেশের ১১ টা জেলায় ৫৫ টা হলে দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত চলতেছে, এই সময়কালে আমি মমেনসিং এ থাকায়, এখানেই ছবিটা দেখা হইলো। সে-ও এক অভিজ্ঞতা!
লোকেশনের কথাটা আগে থাইকাই জানতাম। লোকেশন রিভিল হওয়ার জন্য ওয়েট করতেছিলাম। লোকেশন আর প্রবল পৌরুষের ধারক নায়ক রাজ একই সঙ্গে রিভিলড হইলেন। জায়গাটার নাম টিচার্স ট্রেনিং কলেজ অথবা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল। একই ক্যাম্পাসে একটা নার্সারি স্কুলও আছে, শিশু কানন।
তিনদিকে এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়া বিরাজমান এই মাঠে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে বিপুল বিক্রমে হাজির হইলেন নায়ক রাজ। কি তার সৌন্দর্য! কি তার সাহস! কি তার পৌরুষ! মুগ্ধ!
পরাণ ফিল্মটা কেমন? অ্যাজ আ মুভি?
ভালো ছবি। সিনেমা বানানোর মধ্যে মুন্সিয়ানা আছে। গল্পটা এক নারীর জবানবন্দী। পুলিশের জেরার মুখে বয়ান করা কাহিনী। বহুত পুরানা পদ্ধতি, যাকে বলে ফ্ল্যাশব্যাক। ফ্রেমগুলাও সব দেখা ফ্রেম। আজাইরা ক্যারাঞ্চি নাই বইলা আরও বেশি ভালো লাগতেছিলো। ছবির সংলাপেও দক্ষতা আছে, কোন কোন জায়গায় হলভর্তি দর্শক হাইসা উঠবে এই আশাতে সিরিয়াস পুলিশ চরিত্রকে দিয়া হাসির আলাপ করানো হইছে। মূলধারার ছবিতে এইসব লাগেই। তাছাড়া প্রত্যেকটা চরিত্র ভালো অভিনয় করছেন।মূল চরিত্ররা তো বটেই,শিশুশিল্পী, নায়িকার বান্ধবী,বড় নায়কের বন্ধু, ছোট নায়কের মা, সবাই সুনিপুণ অভিনয় করছেন। এত ভালো অ্যাকটিং ডিরেকশন খুব কম দেখা যায়!
পরাণ কি নারী-বিদ্বেষী ছবি?
হ্যাঁ। সিনেমার প্রথম দৃশ্যে নায়িকা সুইসাইড করার চেষ্টা করেন, তাকে নিয়া তার পরিবারকে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। এর মধ্যে এক পুলিশ অফিসার একটা কেসের ব্যাপারে মেয়েটাকে জেরা করতে চান। মেয়ের বাবা তখন বলেন, আপনার কি পরিবার আছে? কন্যাসন্তান আছে?
খুব হার্শ কইরা বললে, এইখানেই আমার মেজাজ খারাপ হওয়া শুরু। কী রে ভাই! আসলাম ত্রিভুজ প্রেমের সিনামা দেখতে, কোন নায়কই আসলো না, শুরু হইলো কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার কান্দন! মেয়ে মানুষ কত অবলা, এমনকি মেয়ের বাপ হওয়া কত কষ্টের, তার বয়ান দিয়া ছবির গল্প আগাইলো।
গল্প নায়িকার জবানবন্দী দিয়া শুরু হইলেও ছবির নাম ভুমিকায় আছেন নায়ক। গল্পে নায়কের নাম রোমান হইলেও তার প্রেমিকা বা প্রেমিকা সাজা মায়াবিনী কুহকিনী অনন্যা তাকে পরান বইলা ডাকে। এই ছবিতে প্রধান চরিত্র পরান বা রোমানই।
তাই বইলা পরাণ ছবিটা নারী-বিদ্বেষী ক্যামনে?
রোমান গল্পে আসার পর তার মস্তান চরিত্রের নেপথ্যে রাঘববোয়ালদের আসা শুরু হইলো। দেখা গেলো, নির্মাতা নারীকে কেবল অবলাই মনে করেন না, তাদেরও যে বল (ইংরেজি বল না, বাংলা বল) আছে, এমনটাই দেখাইতে চান। মস্তান নায়ক থাকলে তার পেছনে অবশ্যম্ভাবী যে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ থাকেন, মুম্বাইয়ের শত শত ছবিতে যে সমস্ত চরিত্র বেশিরভাগ সময়ে পুরুষ হন, দেখা গেলো ঢাকাই ছবির সেই রাজনীতিবিদ চরিত্রে আছেন একজন নারী, লিডার ডেইজি।
তা দুর্নীতিবাজ নারী রাজনীতিবিদ কি দেশে নাই! অবশ্যই আছেন, একশোবার আছেন। নারীর ক্ষমতায়নের দিক দিয়া বাংলাদেশ অনেক আগাইয়া গেছে, এত এত নারী মন্ত্রী, এমপি, কমিশনাররা আছেন। তারা কেউ কেউ কি তলে তলে মাদক ব্যবসা চালান না? নিশ্চয়ই চালান! কিন্তু তাদের মধ্যে কয়জন ধূমপান করেন! খল নারী চরিত্র মানেই ধূমপান করবেন- এই সস্তা ক্লিশে থাইকাই তো এই নির্মাতা বাইর হইতে পারেন নাই!
ভাত একটা টিপ দিয়া পুরা পাতিলের (হাড়ির) খবর বুইঝা যাওয়ার মতন আবিষ্কার করতে হইলো, এই ছবির নারী চরিত্র সবাই হয় খল নয় বোকা। লিডার ভয়াবহ খারাপ, নায়িকার মায়ের বোকামি কমিক লেভেলের। পুরুষ চরিত্রগুলাতে সেই তুলনায় বৈচিত্র্য আছে। পুলিশের চরিত্রটাকে সৎ ও কর্কশ, মস্তান নায়কের সাগরেদদের একজন ভয়ঙ্কর আরেকজন কমিক, দ্বিতীয় নায়ক মস্তান নায়কের বিপরীতে নরম সরম ভালো ছাত্র – এই সমস্ত ফর্মুলা ঠিকঠাকভাবে মানা হইছে।
তবে নায়িকা অনন্যার চরিত্র চিত্রণ যথাযথই অনন্য। সে কেবল খারাপ আর বোকাই না, লোভীও- বাপের কাছে স্মার্টফোন, প্রেমিকের কাছে ফুচকা আইসক্রিমের আবদার, বরের কাছে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, বিদেশ যাওয়ার চাহিদা – তার শুধু চাওয়া আর চাওয়া। সে খুবই বসি’ও – ক্লাসমেটদের সাথে মস্তানি করে, সে রান্না জানে না, মাকে ধমকায়, বাবার সঙ্গে বেয়াদবী করে, পরীক্ষায় নকল করে, মিথ্যা বলে। অর্থাৎ কিনা সকল প্রকার দোষ তার আছে।একমাত্র রূপের জেল্লা আর লাস্য বা ফ্লার্ট ছাড়া কোন ভালো দিক তার চরিত্রে নাই।
অন্যদিকে নায়ক রোমান মাদকাসক্ত ও রাজনৈতিক পাণ্ডা হইয়াও যাকে বলে এক কথার মানুষ। মরদকা বাত, হাতিকা দাঁত – টাইপ। প্রেমিকা রাজনীতি ছাড়তে বললে সে ছাইড়া দেয়, নেশা ছাড়তে বললে, সে বলে পারবে না। সে এতই সৎ যে প্রিয় মানুষকে স্তোক দিয়া ভুলাইয়া রাখার পাত্রই সে না। এমনকি পরে সেই অতি প্রিয় নেশাও সে ছাইড়া দেয়।
কিন্তু আবার ভিক্টোরিয়ান যুগের যৌন নৈতিকতার মায়া গল্পকথক ছাড়তে পারেন নাই। স্মার্টফোনের এই যুগেও মস্তান আর নেশাখোর নায়কের একমাত্র দাবী কলেজের নির্জন করিডোরে একটা চুমু! আই মিন, সিরিয়াসলি! হুমায়ূন আহমেদের নায়ক নায়িকাদের দেখছিলাম এরকম অ্যাসেক্সুয়াল, অলমোস্ট প্লেটোনিক প্রেম করতে, আর এদের দেখলাম। এই ছেলেই আবার প্রেমিকাকে পাশ করাইতে কলেজের শিক্ষককে তার শিশুকন্যার নিরাপত্তা হুমকি হওয়ার হুশিয়ারি দেয়! কেমনে কী!
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/07/poran1_bmdb_image.jpg?resize=851%2C588&ssl=1)
এত ক্রিটিক্যাল হইলে ক্যামনে?
হুম, আমারে কেউ জিগাইতে পারে, সব জায়গায় এইসব ফেমিনিষ্ঠতা (ফেমিনিস্ট ক্র্যাপের বাংলা আমি করছি ফেমিনিষ্ঠতা) না ফলাইলে হয় না? হয়। পরাণে হয় না।
এই ছায়াছবির নির্মাতা শুরুতেই কন্যাসন্তানের পিতা হওয়ার দুর্দশার কথা বইলা এই সত্য স্বীকার কইরা নিছেন যে এই সমাজে নারী ও পুরুষের অবস্থা ও অবস্থান সমরৈখিক না বরং বিপরীত। কিন্তু আবার সিনেমা শেষে দর্শকের সকল সহানুভূতি গিয়া পড়ে মস্তান, রাজনৈতিক পাণ্ডা, নেশাখোর রোমানের ওপর। দর্শকের সব রাগ গিয়া পড়ে ‘শিশুর মতন সরল’ রোমানের (নেশার ব্যাড়া ওঠার বিষয়টা যারা জানেন না তাদের অনেকেই রোমান চরিত্রে রাজের লাফঝাপকে শিশুসুলভ মনে করছেন, করতেই পারেন) সকল দুর্দশার জন্য দায়ী অনন্যার ওপর।
কোথাও কেউ নেই – উপন্যাস বা নাটক যারা দেখছেন বা পড়ছেন, কারো কি মনে হইছে, মুনা মামুনের সাথেও প্রেম করে আবার বাকেরকেও হাতে রাখে! মুনাই খারাপ! না, মনে হয় নাই, হইতে পারে নাই, হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস বা নাটক কোনখানেই এইটা হইতে দেন নাই। সেটার ঐতিহাসিক কারণও আছে, হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুরা’ এরকম, ‘রুপারা’ সেইরকম ইত্যাদির মতন মুনারা কখনো খারাপ হয় না’ ধরণের একটা বিষয় আছে। এই সিনেমার নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বাকের ভাই চরিত্রের একটা রিমেক করছেন, একটা আপটুডেট ভার্সন বানাইছেন। কিন্তু নারী প্রসঙ্গে তার অবস্থান ঠিক ‘কোথাও কেউ নেই’ এর কাহিনীর বিপরীত। নারীও খল হইতে পারে এবং নারী খলও হইতে পারে- এই মেসেজ দেওয়াই ছিলো তার উদ্দেশ্য, এই মেসেজ প্রতিষ্ঠিত করতে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদকেও নারী হিসাবে হাজির করছেন।
আমার আম্মা কেন পরাণ দেখেন নাই?
আম্মা ঘোষণা দিছিলেন, তিনি পরাণ দেখতে যাবেন না! যেখানে বাস্তবের মিন্নি মেয়েটা এত কষ্টের মধ্যে আছে! এইটা আম্মার মতে অমানবিক। আফসোসের সুরে বললেন, মেয়েটাকে জীবন্ত থাকতেই কিংবদন্তী বানাইয়া দিলো।
আমার চট কইরা আমার নানীর কথা মনে পড়লো। রীমা হত্যাকাণ্ডের দায়ে মুনীরকে যখন ফাঁসি দেওয়া হইলো, আমার নানী আফসোসের সুরে বলছিলেন, ‘ছেলেটার মায়ের বুক খালি হইয়া গেলো!‘ আমরা তর্ক করছিলাম, আর রীমার বাপ-মা! তারা কি বাপ-মা না? নানী বললেন, ‘আহা!ছেলেটারে ফাঁসী দিলে কি মেয়েটা ফিরা আসবে?’ সেদিন নানী ছিলেন পুরা দেশবাসীর দাবীর বিপরীতে একজন মায়ের পক্ষে। আজকে দেখি আম্মা প্রায় পুরা দেশবাসীর মরাল জাজমেন্টে ভিলেইন হইয়া মরার আগেই মইরা যাওয়া একটা সন্তানের পক্ষে, একজন মানুষের পক্ষে, এক নারীর পক্ষে।
আমার ভাবতে ভালো লাগলো আমি এই নারীদের উত্তরসূরী। আমি আমার পূর্বনারীদের মতন মানবিক হইতে না পারলেও অতটা অন্ধও হই নাই যে রাজের রূপের জেল্লায় ভুইলা যাবো, এই ট্র্যাজেডিটা দিয়া কিভাবে নিউজ মিডিয়া আর সিনেমা মিডিয়া মিল্লা সমাজে নারীকে ডিমোনাইজ করার বিষয়টা জাতিকে খাওয়ায় দিলো। এটা ভুইলা যাওয়ার মতন গুরুত্বহীন ঘটনা না।
মিন্নির জীবন নিয়া কাহিনী, মিন্নিকে ডিমোনাইজ করা হবে এই আশঙ্কা তো ছিলোই মনে। তারপরও দেশ ও দশে ধন্য ধন্য করতেছে দেইখা ভাবলাম হয়তো নায়িকাকে ননজাজমেন্টাল হওয়ার মতন জায়গায় রাখছে। তার চরিত্র ডিগ ডাউন করছে, তার পার্সপেক্টিভ সামনে আসছে! কোথায় কী?
সব শেষে এইটুকু বলতে পারি, পর্দায় পৌরুষ নির্মাণ পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট কিন্তু দৃষ্টিনন্দন ছিলো। নির্মাতাকে ধন্যবাদ জেন্ডার লেন্সে ভুলভাল ছবিও ফিমেল গেজকে স্যাটিসফাই করতে পারে, এই কথা উনি প্রমাণ করলেন।রুপালী পর্দার রাজকে দেইখা রীতিমত ছড়া কাটতে, কোকাকোলা পেপসি- শরীফুল রাজ সেক্সি!
তাইলে আমার এখন বক্তব্য কী?
আম্মা যখন বললেন, উনি সিনেমাটা দেখবেন না কারণ তিনি মনে করেন এই ট্র্যাজিক কাহিনী নিয়া সিনেমা করা উচিৎ না, তাতে এই নৃশংসতাকে পুনঃনির্মাণ করা হয়, তখন আমার ফুলন দেবীর কথাও মনে পড়লো। সাংসদ থাকাকালীন সময়ে একটা সাক্ষাৎকারে তিনি বলছিলেন, সিনেমার পর্দায় ধর্ষণের মতন নৃশংসতার পুনঃনির্মাণ কাম্য না। ট্রু স্টোরি বেইজড সিনামা হইলেই ফুলন দেবীর কথা মনে করি, কতবার ধর্ষণ করছে, বিচারও করছে- পুরুষরাই, আবার তারে নিয়া সিনামাও পুরুষরাই বানায়। অবশ্য এই ফিল্মের ক্ষেত্রে কোথাও স্বীকার করা হয় নাই যে এইটা মিন্নি, রিফাত আর নয়নের কাহিনী, বলা হইছে সব চরিত্র কাল্পনিক। হলিউডে, মুম্বাইয়ে এরকম সত্যি কাহিনী নিয়া ছবি বানাইলে সেটা বইলা দেয়। যথাযথ অনুমতি নেওয়া হয় কিনা সেটা অন্য প্রসঙ্গ। এখানে স্বীকারই করা হইতেছে না, অনুমতি তো অনেক পরের কথা। কিন্তু দেশ তোলপাড় করা নিউজের হাইপটাকে কিন্তু কাজে লাগানো হইলো পুরাদমে। এইটাও কি একটা বুজরুকি না!
সিনামা বানানেওয়ালাদের মনে রাখতে হবে, পৌরুষ আর নারীত্ব সাংঘর্ষিক না। পৌরুষের ইরোটিক ইমেজ মাত্রই অ্যাগ্রেসিভ হইতে হবে এমন না! অনন্যার বর সিফাতের, ‘আমিও চেষ্টা করবো পাঞ্জাবীর বোতাম খুলে রাখতে’ – এই অনুনয় ভুল। ওর মতন নরম সরম পৌরুষও একটা রকমের পৌরুষ। এত সাদা-কালোও না এই বিষয়গুলা- নর নারী, ভালো-খারাপ, কঠিন-কোমল, পক্ষ- বিপক্ষ, দোষী- নির্দোষ – এই রকম বাইনারি অপোজিশনও না। পুরুষকে জাস্ট নারীর রক্ষাকর্তা হওয়ার দরকার নাই,মালিকও না। খাদক হওয়ারও দরকার নাই, বিচারকও না- তাইলেই হবে।
*লেখাটি দৈনিক দেশ রূপান্তরে পূর্ব প্রকাশিত