Select Page

নায়িকার নাম কবিতা

নায়িকার নাম কবিতা

স্বল্পদিনের ক্যারিয়ারে প্রথম সারির বেশ কয়েকজন নায়কের সঙ্গে অভিনয় করেও নায়িকা কবিতার শেষটা ছিল বেশ করুণ। তবে মিষ্টি-মায়াবতী চেহারার সেই অভিনেত্রীকে আজও স্মরণ করেন সোনালী দিনের দর্শকেরা।

কবিতার আসল নাম কাজী জোবেদা খাতুন। তিনি ১৯৫২ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ছিল পাবনা জেলার মাসুমদিয়া গ্রামে।

তিনি ‘পাপিয়া’ নামে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন ‘কাঞ্চন মালা’ ও ‘মহুয়া’ ছবিতে। পরে হন পূর্ণ নায়িকা হন কবিতা নামে।

নায়িকা কবিতা অভিনীত ছবিসমূহের মধ্যে অন্যতম— আলোমতি, রূপ কুমারী, সাইফুল মুলুক বদিউজ্জামাল, চাঁদ আউর চাঁদনী, অধিকার, চম্পাকলি, মলুয়া, বাহরাম বাদশা, জংলী মেয়ে, বাঘা বাঙ্গালী, শপথ নিলাম, স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা, তীর ভাঙা ঢেউ, ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে, জেহাদ, কে আসল কে নকল, বাংলার ২৪ বছর, ভাড়াটে বাড়ি, নকল মানুষ, হাসিকান্না, হাবা হাসমত, হীরা, পিঞ্জর, দুশমন ও ধন্যিমেয়ে।

দেখতে সুন্দর, মিষ্টি-মায়াবতী চেহারার অধিকারী ছিলেন নায়িকা কবিতা। দর্শক দৃষ্টি আকর্ষণ করার মত যথেষ্ট আকর্ষণ ছিলো তার চোখে-মুখে। নাচে-অভিনয়েও ছিলেন পারঙ্গম। তিনি অনেক ছবিতেই তাঁর অভিনয় প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। তখনকার সব নামি-দামি নায়কদের সাথে অভিনয় করে গেছেন স্বাছন্দে। জনপ্রিয়তা ও প্রতিষ্ঠাও পেয়েছিলেন অনায়াসে।

কবিতা চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের সুবর্ণসময়ে হঠাৎ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, চলচ্চিত্র প্রদর্শক-প্রযোজক গোলাম কবিরের সাথে। বিয়ের পর এ অঙ্গণ থেকে দূরে সরে যান।

একসময় এই স্বামীর সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তখন তিনি আবার চলচ্চিত্র জগতে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু চলচ্চিত্র জগতে তার আর ফিরে আসা হয়ে ওঠেনি।

জানা যায় কবিতা এরপর আবারও বিয়ে করেছিলেন। সেই বিয়েও বেশীদিন টিকেনি।

পরবর্তীতে চরম দুঃখ-কষ্টে জীবন-যাপন করে আসছিলেন নায়িকা কবিতা। মৃত্যুর আগে বিভিন্ন স্থানে মানবেতর জীবন কাটিয়েছেন অনেক দিন। বলা চলে একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় ঢাকায় পল্লবীর রূপনগরে, টিনশেড ভাড়া বাসায় অভাব অনটনের মধ্যে, খুবই করুণ অবস্থায় রোগে-শোকে ভুগে, নিরবে নিভৃতে চলে যান এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে।

২০১২ সালের ৮ জুন ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন কবিতা।

কবিতা নাম দেখে অনেকে ভুল বুঝতে পারেন। এ নামে আরেকজন নায়িকা ছিলেন, যাকে ১৯৯০ এর দশকে রুবেলের বিপরীতে একাধিক সিনেমায় দেখা গেছে। তিনি বর্তমানে প্রবাসে রয়েছে।

তথ্য ও ছবি: আজাদ আবুল কাশেম


মন্তব্য করুন