আমি কী তুমি: তিথির অতিথি ও সবুজ আলো
কোনো এক অজানা রহস্যে অনেকদিন ধরে মেহজাবীন চৌধুরী টিভি নাটকে অনুপস্থিত, যাও একটাই এসেছেন সেটা ‘পুনর্জন্ম’ সিরিজ বলেই। বছরের শুরুতেই ভিকি জাহেদের ‘দ্য সাইলেন্স’-এর পর আবারো ভিকির ‘আমি কী তুমি’ সিরিজ। তার মানে দাঁড়ালো এই বছর একমাত্র ভিকি জাহেদই মেহজাবীনকে অভিনয়ের পর্দায় আনতে পেরেছিলেন।
ফিরে যাই ‘আমি কী তুমি’তে, সিরিজের গল্প তিথি নামক এক নায়িকার জীবনসংগ্রামকে কেন্দ্র করে, সঙ্গে পরাবাস্তবতার গল্প। পরিবারের অমতে গিয়ে কখনো এক্সট্রা আর্টিস্ট কখনো স্বল্প চরিত্রের অভিনেত্রী হয়ে খুশি থাকতে হচ্ছে। তখন তার জীবনে অতিথি হয়ে আসে সহকারী পরিচালক রাহাত, তাকে নতুন স্বপ্ন দেখানো শুরু করে, জীবনের আনন্দ খুঁজে পায়। কিন্তু এই অতিথি যেন ক্ষণিকেরই, তিথির জীবন থেকে হারিয়ে যায়। এইদিকে পৃথিবী জুড়ে সবুজ আলোর প্রভাব, আকাশ থেকে নেমে আসছে এলিয়েন, সবাই যেন তিথির জীবনের অতিথি। তিথির বাস্তব জীবন ও পরাবাস্তবতা গল্প মোড় দেয় অন্যদিকে, যেটা কেউ কখনো ভাবেনি।
ভিকি জাহেদের এই গল্প বেশ চমকপ্রদ, সোহাইল রহমানকে সঙ্গ দিয়ে খুব বিশ্লেষণ করে কাজ করেছেন বোঝা যায়। অনেক তথ্য এখানে যোগ করেছেন, যেটা সাধারণ দর্শকদের অজানা ছিল। ভিকির কিছু সংলাপ ও নিজের পুরনো কাজকে সংযুক্ত করে ভালোলাগা তৈরি করেছে। ভিকির নির্মাণে মেহজাবীন সব সময়ই ভালো করেন, ওটিটিতে নারীকেন্দ্রিক গল্প সত্যিই আশাপ্রদ।
জুনায়েদ বোগদাদির অভিনয় আগের চেয়ে আরো উন্নত হয়েছে, এমন প্রত্যাবর্তন তার প্রয়োজন ছিল। জুনায়েদ- মেহজাবীন যতক্ষণ পর্দায় ছিল, সিরিজটি সতেজ আভাস দিয়েছে। তারিক আনাম খান, ফজলুর রহমান বাবু, জলিরা যথাযথ। বিদ্রোহী দীপনের দারুণ সিনেমাটোগ্রাফি পুলক অনুভব করিয়েছে।
দারুণ গল্প, নির্মাণ, অভিনয় থাকার পরেও টানটান সিরিজ হয়নি শুধুমাত্র চিত্রনাট্যে ধীরগতির জন্য। এই স্ক্রিপ্ট কোনোভাবেই দীর্ঘ আটপর্ব দাবি করে না, দীর্ঘ করে সিরিজের যে উপযুক্ততা তা নষ্ট করেছে। বিশেষ করে প্রথম পর্ব আরো কমিয়ে এনে আকর্ষণ বাড়াতে পারতো। আব্দুল্লাহ আল সেন্টুকে এই চরিত্রে মানায়নি, শ্যামল মাওলার চরিত্রটাও আরো বিশ্লেষণ প্রয়োজন ছিল।
‘আমি কী তুমি’ নিয়ে বেশ ভালোই আলোচনা হচ্ছে, ভিন্নধর্মী এমন এমন গল্প নিয়ে আরো নির্মিত হউক।