বাংলা সিনেমার আরেকটি ব্যর্থতার বছর ২০২৪
সারা বছরে মুক্তি পেয়েছে ৪৯টি দেশি চলচ্চিত্র। যার মধ্যে মাত্র দুটি চলচ্চিত্র ব্যবসায়িকভাবে সফলতার মুখ দেখেছে। মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের মতই এই বছর শৈল্পিক ঘরানার চলচ্চিত্রগুলোও বিশেষভাবে আলোচনায় আসেনি। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের ফলে চলচ্চিত্র ব্যবসায় শোচনীয় হয়ে পড়ে। অবশ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে মুক্তি পর্যন্ত এ বছরও নির্মাতাদের গোছানো কাজের চেষ্টা দেখা যায়নি।
এক নজরে ২০২৪
বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মাত্র তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। ১৯ জানুয়ারি চয়নিকা চৌধুরীর ‘কাগজের বউ’ ও মেহেদী হাসানের ‘শেষ বাজি’ এবং ২৬ জানুয়ারি সুকুমার চন্দ্র দাসের ‘রুখে দাঁড়াও’। পরের মাসে ৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় নূরুল আলম আতিকের ‘পেয়ারার সুবাস’ ও দীন ইসলামের ‘ট্র্যাপ’; ১৬ ফেব্রুয়ারি বন্ধন বিশ্বাসের ‘ছায়াবৃক্ষ’ ও আবদুস সামাদ খোকনের ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি হাবিব খানের ‘টাল মাতাল’। এরপর মার্চে পবিত্র রমজানের জন্য কোন চলচ্চিত্র মুক্তি পায়নি।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৯ এপ্রিল চ্যানেল আইয়ে প্রিমিয়ার হয় সালাহউদ্দিন জাকীর ‘অপরাজেয়’। ঈদুল ফিতরের দিন ১১ এপ্রিল ১১টি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলো হল হিমেল আশরাফের ‘রাজকুমার’, গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’, মিশুক মনির ‘দেয়ালের দেশ’, মুহম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘ওমর’, জাহিদ হোসেনের ‘সোনার চর’, জসিম উদ্দিন জাকিরের ‘মায়া – দ্য লাভ’, ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’, ফুয়াদ চৌধুরীর ‘মেঘনা কন্যা’, রওশন আরা নিপার ‘গ্রিন কার্ড’, এবং কামরুজ্জামান রুমানের রিভেঞ্জ-থ্রিলারধর্মী ‘লিপস্টিক’ ও হররধর্মী ‘মোনা: জ্বীন ২’।
৩ মে বদরুল আনাম সৌদের ‘শ্যামা কাব্য’ ও মো. ইকবালের ‘ডেডবডি’ এবং ১০ মে সঙ্গীত পরিচালক আহমেদ হুমায়ুনের ‘পটু’, । ২৪ মে ধ্রুব হাসানের ‘ফাতিমা’, সফিকুল ইসলামের ‘সুস্বাগতম’ ও বাবু সিদ্দিকীর ‘ময়নার শেষ কথা’। ১৭ জুন ঈদুল আজহা উপলক্ষে পাঁচটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়, সেগুলো হল রায়হান রাফীর ‘তুফান’, রাশিদ পলাশের ‘ময়ূরাক্ষী’, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘ডার্ক ওয়ার্ল্ড’, সুমন ধরের ‘আগন্তুক’ ও মো. ইকবালের ‘রিভেঞ্জ’। ১২ জুলাই মুক্তি পায় শবনম ফেরদৌসীর ‘আজব কারখানা’। এরপর জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের কারণে কয়েকটি চলচ্চিত্র মুক্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়।
প্রায় দেড় মাস পর ২৩ আগস্ট মুক্তি পায় মনতাজুর রহমান আকবরের ‘অমানুষ হলো মানুষ’। অক্টোবর মাসে পাঁচটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়, তন্মধ্যে ৪ অক্টোবর মুক্তি পায় ডিপজলের ‘জিম্মি’, ১১ অক্টোবর চিত্রনায়িকা কুসুম সিকদারের ‘শরতের জবা’ ও ইভান মল্লিকের ‘বাদশা – দ্যা কিং’, ১৮ অক্টোবর মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের ‘হৈমন্তীর ইতিকথা’ ও দীন ইসলামের ‘চরিত্র’। ৮ নভেম্বর তানভীর আহসানের ‘রং ঢং’ ও রেজাউর রহমানের ’৩৬-২৪-৩৬’, ১৫ নভেম্বর অনন্য মামুনের ‘দরদ’, ২৯ নভেম্বর বিপ্লব হায়দারের ‘ভয়াল’। ৬ ডিসেম্বর সাইফ চন্দনের ‘দুনিয়া’ ও সোহেল রানা বয়াতির ‘নয়া মানুষ’, ১৩ ডিসেম্বর বেলাল সানির ‘ডেঞ্জার জোন’, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘৮৪০’ ও শবনম পারভীনের ‘হুরমতি’, ২০ ডিসেম্বর শঙ্খ দাশগুপ্তের ‘প্রিয় মালতী’ ও আকাশ আচার্য্যের ‘মাকড়সার জাল’। বছরের শেষ সপ্তাহে ২৭ ডিসেম্বর মুক্তি পায় আকরাম খানের ‘নকশী কাঁথার জমিন’।
আলোচিত ও ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র
বছরের মাত্র দুটি ব্যবসায়িকভাবে সফলতার মুখ দেখেছে, সেগুলো হলো তুফান ও রাজকুমার। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে একজন গ্যাংস্টারের উত্থান ও একজন স্ট্রাগলিং অ্যাক্টরের সমান্তরাল গল্প ‘তুফান’। মূলধারার বাণিজ্যিক ঘরানায় অ্যাকশন, রোমান্সের সাথে শাকিব খানের দ্বৈত চরিত্র ছবিটিতে অনন্য মাত্রা যোগ করে। ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি দেশের মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গেল স্ক্রিনগুলোতে সাফল্যের মুখ দেখে। মাল্টিপ্লেক্সে হলিউড-বলিউড ছবির রেকর্ড ভেঙ্গে দেয় এবং সিঙ্গেল স্ক্রিনে টানা দুই মাস ধরে চলে। তবে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের কারণে এর প্রদর্শনী হঠাৎ করেই কমে যায়। পরবর্তীকালে এটি ভারতসহ বিশ্বের আরও ১৪টি দেশে মুক্তি পায়। অন্যদিকে ঈদুল ফিতরে দেশের ১২৭টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘রাজকুমার’। ছেলেবেলায় মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এক যুবকের তার মায়ের সাথে পুনরায় দেখা করার লালিত স্বপ্ন নিয়ে আবর্তিত হয় এই ছবির গল্প। ‘প্রিয়তমা’ ছবির সাফল্যের পর হিমেল আশরাফ-শাকিব খানের যুগলবন্দীতে এ ছবিটি মোটামুটি মানের ব্যবসাসফল হয়।
ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘দেয়ালের দেশ’, ‘ওমর’, ‘কাজলরেখা’, ‘লিপস্টিক’, ‘মোনা – জ্বীন-২’ আলোচিত হয়েছে। তরুণ পরিচালক মিশুক মনির ‘দেয়ালের দেশ’ একজন ডোম ও তার প্রেমিকার লাশের মধ্য দিয়ে এক অন্যরকম প্রেমকাহিনির বয়ান করে। ছবিটির টিজার প্রকাশের পর রাজ-বুবলির রসায়ন, বুবলির মৃত্যু ও রাজের শূন্য দৃষ্টিতে তার লাশের দিকে তাকিয়ে থাকা নিয়ে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। থ্রিলার ঘরানার ‘ওমর’ হত্যা ও প্রতিশোধের পুরনো গল্পেও নতুনত্বের স্বাদ দিয়েছে, বিশেষ করে গল্পের শেষের টুইস্টের মধ্য দিয়ে। রাজ ও নাসির উদ্দিন খানের অভিনয় দর্শককে মূল গল্পে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। মৈমনসিংহ গীতিকার বহুলপাঠ্য লোককথা অবলম্বনে গল্প ও অভিনয়সমৃদ্ধ ‘কাজলরেখা’ দেখতে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ভিড় করেছেন। তবে পূর্বেকার লোককথানির্ভর গল্পে নির্মিত চলচ্চিত্র তথা ‘রূপবান’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘মহুয়া’, বা ‘বেহুলা’দের মত আবেগকে ছুঁয়ে যেতে পারেনি। গল্পে কাজলরেখার কষ্টের যে বয়ান, তা এই চলচ্চিত্রে ওঠে আসেনি। বরং তাকে দাসী অবস্থায়ও রানীর চেয়ে সুতনু ও শ্রীমণ্ডিত দেখানো হয়েছে।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ঈদের বাইরে মুক্তি পায় শাকিব খান অভিনীত ‘দরদ’। দুলু মিয়ার রোমান্স ও তার সাইকো চরিত্রে অভিনয়, বলিউডের নায়িকা সোনাল চৌহান ও বেনারসসহ ভারতের চমৎকার লোকেশনে চিত্রায়ন এই ছবির মূল আকর্ষণ ছিল। দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও সিনেপ্লেক্সের হিসাব অনুসারে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে তাদের শীর্ষ দশটি ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের একটি ‘দরদ’। বছরের শেষভাগে ডিসেম্বর মাসে রাজনৈতিক ব্যঙ্গধর্মী ‘৮৪০’ ও লড়াকু এক নারীর গল্প ‘প্রিয় মালতী’ আলোচনায় ওঠে আসে। ‘৮৪০’ মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর বিপুল জনপ্রিয় ও আলোচিত ‘৪২০’ টিভি ধারাবাহিকের ডাবলআপ। ‘প্রিয় মালতী’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে টিভি ও ওটিটির জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর। প্রথম ছবিতে বাজিমাৎ করেছেন একজন নারী সামাজিক ও মানসিক সংগ্রামের চিত্রায়নে তার অনবদ্য অভিনয় দিয়ে ও দর্শক-সমালোচকদের প্রিয় মালতী হয়ে। একইভাবে ফাতিমা হয়ে পর্দায় ধরা দেন আরেক টিভি অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ‘ফাতিমা’ ছবিতে অভিনয় করে ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে থেকে ফারিণ ক্রিস্টাল সিমার্গ পুরস্কার জিতে নেন।
এছাড়া ভিন্নধর্মী ও শৈল্পিক ঘরানার ‘পেয়ারার সুবাস’, চা শ্রমিকদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত ‘ছায়াবৃক্ষ’, মনস্তাত্ত্বিক ধারার ‘শ্যামাকাব্য’, রাশিদ পলাশের ‘ময়ূরাক্ষী’, চিত্রনায়িকা কুসুম সিকদারের ‘অজাগতিক ছায়া’ গল্প অবলম্বনে একজন নারীর রহস্যময় জীবন নিয়ে নির্মিত ‘শরতের জবা’, হাসান আজিজুল হকের ‘বিধবাদের কথা’ অবলম্বনে নির্মিত ‘নকশী কাঁথার জমিন’ নিয়ে আলোচনা করা যায়।
আরও পড়ুন
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০২৩
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০২২
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০২১
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০২০
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৯
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৮
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৭
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৬
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৫
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৪
বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৩
যাদের হারিয়েছি
৭ ফেব্রুয়ারি ‘পেয়ারার সুবাস’ চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার শোতে আসার পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান অভিনেতা আহমেদ রুবেল। দীর্ঘদেহী ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরসম্পন্ন এই অভিনেতা ১৯৯৩ সালে ‘আখেরী হামলা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রূপালি পর্দায় পা রাখেন। পরবর্তীতে তিনি অভিনয় করেছেন- ‘চন্দ্রকথা, ‘ব্যাচেলর, ‘শ্যামল ছায়া, ‘গেরিলা’, ‘দ্য লাস্ট ঠাকুর, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি, ‘অলাতচক্র, ‘চিরঞ্জীব মুজিব, ‘দেশান্তর, ‘পেয়ারার সুবাস’ চলচ্চিত্রে।
প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার শিল্পী চক্রবর্তী ৭ মার্চ মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে ইহকাল ত্যাগ করেন। তিনি ‘বিনি সুতার মালা’, ‘রঙ্গীন উজান ভাটি, ‘আমার আদালত, ‘তোমার জন্য পাগল, ‘সবার অজান্তে, ‘চরমপত্র, ‘মীমাংসার মতো অনেক সফল চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। তিনি প্রয়াত আজিজুর রহমানের সহকারি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে সিবি জামানের সহকারি হিসেবেও কাজ করেন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও বরেণ্য সুরকার সুজেয় শ্যাম ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ‘হাসন রাজা’, ‘জয়যাত্রা’, ‘অবুঝ বউ’ ও ‘যৈবতী কন্যার মন’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি চারবার শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। তার সুরকৃত উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই, ‘আহা ধন্য আমার জন্মভূমি, ‘আয় রে চাষি মজুর কুলি, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম, ‘শোন রে তোরা শোন’ প্রভৃতি।
‘কী ছিলে আমার/বলো না তুমি’ গানের গীতিকার ও সঙ্গীতশিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ ২০২৪ সালের ১৯ অক্টোবর শনিবার রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারও চার-পাঁচদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করে পুলিশ। রেডিও-টিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হলেও অল্প সংখ্যক গান গেয়েছেন নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই শিল্পী। মূলত অডিওতে চুটিয়ে কাজ করেছেন। তার একটি উল্লেখযোগ্য অ্যালবাম হল ‘যদি ভালবেসে ভুল করে থাকি’। তার গাওয়া কয়েকটি শ্রোতাপ্রিয় গান হল ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য, ‘মুখে বলো ভালোবাসি, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’।
বরেণ্য অভিনেতা মাসুদ আলী খান ৩১ অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সাদেক খানের ‘নদী ও নারী’ দিয়ে তার বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে। মূলত টেলিভিশন নাটকে তাকে বেশি দেখা গেলেও পর্দায় তিনি ‘আয়না ও অবশিষ্ট’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘মোল্লা বাড়ীর বউ’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক এবং মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।
বর্ষীয়ান পরিচালক ও অভিনেতা সি বি জামান ২০ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি নির্মাণ করেছেন ‘ঝড়ের পাখি, ‘উজান ভাটি, ‘পুরস্কার’সহ বেশ কয়েকটি প্রশংসিত চলচ্চিত্র। ‘পুরস্কার’ ১৯৮৩ সালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ পাঁচটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল।
এছাড়া চলতি বছরের উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা হলো; দেশে প্রথমবারের মতো গঠিত হয়েছে বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড। এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করা কমিটি কয়েকটি সিনেমাকে প্রাপ্তবয়স্ক উপযোগী হিসেবে সনদ দিয়েছে।
মোটা দাগে বলা যায়, ঢাকাই চলচ্চিত্রের জন্য আরেকটি বছর ব্যর্থতার সাথে পার হয়েছে। মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের পাশাপাশিও গভীরভাবে মনে দাগ কেটে যাওয়া শৈল্পিক চলচ্চিত্রের অভাব দেখা যায়। চলচ্চিত্র শিল্পে নবীনদের আগমন ও নতুন ধারার কাজের প্রতি আগ্রহ দেখা গেলেও সর্বোপরি তা সফলতার মুখ দেখেনি।