Select Page

অনন্ত জলিল যাতে শিল্পী সমিতিতে অনুদান না দেন, তাই মিশার বক্তব্য!

অনন্ত জলিল যাতে শিল্পী সমিতিতে অনুদান না দেন, তাই মিশার বক্তব্য!

অনন্ত জলিল ও তার ছবি ‘দিন দ্য ডে’ দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির কোন উপকার হয়নি— কিছুদিন আগে এমন মন্তব্য করেছিলেন মিশা সওদাগর। এ সব কথাকে আপত্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন অনন্ত। সঙ্গে এও বলেন, তিনি যেন রাগ করে শিল্পী সমিতির তহবিলে কোনো অনুদান না দেন, তাই এ সব কথা বলা হচ্ছে। গত  ১৩ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে নিজের অভিনীত ‘দিন দ্য ডে’ সম্পর্ক মিশা বলেছিলেন, ‘এই সিনেমা দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির কোনো লাভ নেই। ১২০ কোটি টাকার সিনেমা আমাদের এখানে বানানো সম্ভব নয়। এত টাকার সিনেমা চলবে কোথায়, টাকাটা উঠবে কীভাবে? কাজেই এটা নিয়ে আমার কোনো মাথা-ব্যথা নেই। এ ছাড়া এই সিনেমায় প্রফেশনাল কোনো শিল্পী নেই। উনারা সাধারণত শৌখিন শিল্পী।’

আরও বলেন, “অনন্ত ভাই একজন বড় পর্যায়ের ব্যবসায়ী। তিনি একজন সিআইপি। তার কারখানায় ১২ থেকে ১৩ হাজার লোক কাজ করে। তিনি ভালো লাগা থেকেই তার স্ত্রীকে নিয়ে সিনেমা বানান। এই সিনেমা দিয়ে আমার ইন্ডাস্ট্রির বিন্দুমাত্র লাভ নাই। ইন্ডাস্ট্রির লাভ ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’, ‘শান’, ‘গলুই’ দিয়ে। ‘দিন: দ্য ডে’ শৌখিন প্রজেক্ট, ইন্ডাস্ট্রির প্রজেক্ট না।”

এ সব মন্তব্যের জবাবে অনন্ত বলেন, ‘মিশা সওদাগর যেসব কথা বলেছেন, তা আপত্তিকর; এগুলো তার মুখে মানায় না। তার এতটুকু যোগ্যতা নাই এসব কথা বলতে পারেন। তার যোগ্যতা কী? শুধুমাত্র খলঅভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন। কোনো বিনিয়োগ করেননি। চলচ্চিত্রের জন্য ভালো কিছু করেননি। চলচ্চিত্রের যোদ্ধাদের বের করে দিয়েছেন। আমরা ৮ বছর না থেকেও এফডিসির সব অনুষ্ঠানে গিয়েছি, অর্থ দিয়ে পাশে থেকেছি। শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছি অর্থ-চিকিৎসা দিয়ে। উনি কী করেছেন?’

‘মিশা সওদাগর সাহেব একজন পুরনো শিল্পী, তিনি যেটা ভেবেছেন সেটা বলেছেন। ইন্ডাস্ট্রির তো উনার দ্বারা কোনো উপকার হয়নি। উনি একজন প্রযোজকও না, ক্রিয়েটিভ পার্সনও না; উনি একজন শিল্পী। তার দ্বারা তো আর সিনেমার উন্নতি হয় না,’—বলেন অনন্ত জলিল।

মিশা সওদাগর যখন শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন তখন প্রায় দুই শতাধিক শিল্পীর ভোটাধিকার বাতিল করা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে অনন্ত বলেন, ‘ভোটের জন্য তারা ২০০ জনের বেশি চলচ্চিত্রযোদ্ধা শিল্পীদের বঞ্চিত করেছিল। নিউজে সবসময় জায়েদ খানের নাম বলতে দেখেছি, মিশার নাম কম এসেছে। কিন্তু মিশা তো সভাপতি ছিলেন, শিল্পীদের বাদ দেওয়ার সই তো তিনিই করেছেন। চলচ্চিত্রের যোদ্ধাদেরকে এফডিসি থেকে বের করে দেওয়া হলো, পরে ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই তাদের ফিরিয়ে আনলেন। তাহলে মিশার দ্বারা চলচ্চিত্রের উন্নয়ন কীভাবে হলো?’

‘মোস্ট ওয়েলকাম’খ্যাত এই অভিনেতা দাবি করেন, ‘‘মিশা সওদাগরের প্যানেল থেকে শিল্পী সমিতির ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন এমন তিনজন শিল্পী আমাকে কল করে জানিয়েছেন, তাদেরকে মিশা বলেছেন, ‘অনন্ত ভাইয়ের বিরুদ্ধে আমার কথা বলার একমাত্র কারণ উনি যাতে রাগ হয়ে শিল্পী সমিতিতে কোনো তহবিল না দেন। ’ আমি তো রাগী মানুষ, সেজন্য আমাকে রাগাতে মিশা এসব বক্তব্য দিয়েছেন।’’

অবশ্য পাল্টা বক্তব্যও থেমে নেই। অনন্তের এ সব কথা জবাব দিয়েছেন মিশা।

চলচ্চিত্রের মানুষদের পাশে শুধু অনন্তই নয়, আরও অনেকেই দাঁড়ান উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন, তারা কিন্তু কখনও এগুলো সামনে আনেন না। আলমগীর ভাই, তিনি কত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা জানলে সবাই অবাক হবেন। কিন্তু সেটা তিনি সামনে আনতে চান না। ডিপজল সাহেব কী পরিমাণ হেল্প করেন ধারণা আছে কারও? এই তালিকায় আরও অনেকেই আছেন।

‘চলচ্চিত্রে মিশার কোনো অবদান নেই’ অনন্ত জলিলের এই মন্তব্যের জবাবে মিশা বলেন, অবদান না থাকলে তো তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতাম না। আমি নিজেও সিনেমা প্রযোজনা করেছি। তবে সেটি তেমন ব্যবসা করেনি।

এই খল-অভিনেতার ভাষ্য, ১২০ কোটি টাকায় ‘দিন: দ্য ডে’ না বানিয়ে এই বাজেটে শাহরুখ খানের রেড চিলির মতো একটা স্টুডিও বানিয়ে দিতেন। তাহলে সেই স্টুডিওতে শাকিব খান, শুভ, বাপ্পি, সাইমন ও সিয়ামদের সিনেমা বানানো যেত। অনন্ত যেহেতু শখে সিনেমা করেন, তিনিও বছরে একটা করে ভালো সিনেমা বানাতেন। আমার কথার মূল উদ্দেশ্য ছিল এটাই। কিন্তু তিনি সেটা না বুঝে কীসব বললেন।

‘দিন দ্য ডে’ ছাড়াও এর আগে একই সিনেমার জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন মিশা ও অনন্ত।


মন্তব্য করুন