Select Page

মৌসুমী : আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরীর গল্প

মৌসুমী : আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরীর গল্প

মৌসুমী বলেন, স্বপ্নে দেখেছিলাম আমার জায়গায় অন্য কেউ হয়েছে সেরা ফটোসুন্দরী …

‘আনন্দ বিচিত্রা’ নব্বই দশকের সেরা একটি বিনোদন পত্রিকা ছিল। এ পত্রিকার আয়োজনে প্রতিবছর ‘সেরা সুন্দরী’ বা ‘ফটোজেনিক’-এর আয়োজন করা হত। এ আয়োজনে তখন অনেক নতুন নতুন প্রতিভা বিনোদনজগতে এসেছিল। বলতে গেলে বিনোদন জগতে এ পত্রিকার অবদান আছে।

কোলাজ: আনন্দ বিচিত্রায় প্রকাশিত মৌসুমীর ছবি

১৯৯২ সালে এ আয়োজনে চতুর্থ ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় পাঠকের ভোটে ‘সেরা সুন্দরী’ হয়েছিল মৌসুমী। মজার বিষয় হলো আনন্দ বিচিত্রা কর্তৃপক্ষের বিচারে মৌসুমী ছিল প্রথম রানার্স-আপ কিন্তু সহস্রাধিক পাঠকের ভোটে সে স্থানের পরিবর্তন হয়ে মৌসুমী-ই সেরা সুন্দরী নির্বাচিত হয়। ফারহানা আজাদ ছন্দা নামে একজন আনন্দ বিচিত্রার বিচারে প্রথম স্থানে ছিল এবং তার প্রাপ্ত পয়েন্ট ছিল ৫৫৮০ কিন্তু পাঠকদের রায়ে মৌসুমী তার চেয়ে এগিয়ে পায় ৭২২০ পয়েন্ট। পাঠকদের এই রায়ে মৌসুমী হয়ে যায় সেরা ফটোসুন্দরী এবং ছন্দা হয়ে যায় প্রথম রানার্স-আপ। আনন্দ বিচিত্রা নিজেদের জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি পাঠকের ভোটকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তারপর ফলাফল প্রকাশ করত এবং সে বিচারে মৌসুমী-ই সেরা ফটোসুন্দরী হয়ে যায় ১৯৯২ সালের আয়োজনে।

১৯৮৮ সালে যখন প্রথমবার ফটোসুন্দরীর আয়োজন হয় তখনই কেন ছবি পাঠাতে পারেনি এ নিয়ে মৌসুমীর আফসোস ছিল। নিজেকে প্রস্তুত করে ছবি পাঠানোর কথা চিন্তা করে তারপর একটা বিজ্ঞাপন প্রচার হলে মৌসুমী মনে করেছিল এবার পাঠানো যেতে পারে। ছবি পাঠিয়ে মৌসুমীর আত্মবিশ্বাস ছিল যে আনন্দ বিচিত্রা থেকে চিঠি আসবে এবং ঠিকই এসেছিল। ফলাফল প্রকাশের আগেই মৌসুমীর ধারণা ছিল সে দ্বিতীয় হবে। ছন্দার প্রথম নির্বাচিত হবার বিষয় নিয়ে মৌসুমীর বক্তব্য ছিল-‘ছন্দা প্রকৃত অর্থেই একজন সুন্দরী মেয়ে আর তাই সবকিছু মিলিয়ে ছন্দাই বিচারকমণ্ডলীর দৃষ্টিতে সেরা সুন্দরী নির্বাচিত হয়েছেন।’ ফটোসুন্দরী হবার আগেই মৌসুমী পরিচিত হয়ে উঠেছিল বিজ্ঞাপনের সুবাদে। মেরিল স্প্রিং রেইন শ্যাম্পু ও টি পাউডারের বিজ্ঞাপনে মৌসুমী দর্শকের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠে। কিন্তু পাঠকের চাওয়া ছিল মৌসুমীই তাই সে-ই নির্বাচিত হয়েছিল সেরা হিসেবে।

মৌসুমীর ভাষ্যমতে

‘স্বপ্নে দেখেছিলাম আমার জায়গায় অন্য কেউ হয়েছে সেরা ফটোসুন্দরী। বিচারকমণ্ডলী কেন এরকম অসুন্দরী একটি মেয়েকে সেরা বেছে নিলো আমি বা তৃতীয় মেয়েটি যে খুবই সুন্দরী আমাদের যে-কোনো একজন তো অনায়াসে সেরা হতে পারতাম। এই অবিচার কিছুতেই মানা যায় না।’ কিন্তু স্বপ্নটা পুরোপুরি দেখতে পারেনি মৌসুমী। ছোটবোন ইরিন জামানই বাড়ি মাথায় তুলে ঘুম থেকে ডেকে মৌসুমীকে জানায় সে-ই হয়েছে সেরা ফটোসুন্দরী। বাড়িতে তখন ছিল উৎসবের আমেজ। মৌসুমী তখনও বিশ্বাস করেছিল সে দ্বিতীয় কিন্তু নিজের ছবি প্রচ্ছদে দেখে তার হাসি পেল।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন