Select Page

ফুল প্যাকেজ লাভ স্টোরি ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’

ফুল প্যাকেজ লাভ স্টোরি ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’

প্রিয়া আমার প্রিয়া; পরিচালকবদিউল আলম খোকন; শ্রেষ্ঠাংশেশাকিব খান, সাহারা, আফজাল শরীফ, প্রবীরমিত্র, রেহানা জলি, সাদেক বাচ্চু, মিশা সওদাগর প্রমুখ; উল্লেখযোগ্য গান – চুপি চুপি চুপি চুপি কথা বলো না, নিঃশ্বাস আমার তুমি, আমি যে তোমারই প্রেমেতে পড়েছি; মুক্তি ১৩ জুন ২০০৮

শাকিব খানের অন্যতম সেরা ব্যবসাসফল ছবি ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া।’ অনেকদিন পর্যন্ত সিনেমাহলে চলেছে। একটা প্রেমের গল্পে যা যা থাকলে সম্পূর্ণ গল্প হয়ে ওঠে সবই ছিল এ ছবিতে এবং এভাবেই হয়ে উঠেছে ফুল প্যাকেজ লাভ স্টোরি।

শাকিব খান-অপু বিশ্বাস জুটির অনেক ছবি থাকার পরেও শাকিব খান-সাহারা জুটির ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ ছবির মতো ব্যবসায়িক রেকর্ড ভাঙতে পারেনি। যে কোনো দিক থেকেই শাকিব-অপু জুটির দিক থেকে বেটার ছিল শাকিব-সাহারা জুটি।

‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ ছবির গল্পটি মৌলিক নয়। তামিল ‘দম’, তেলেগু ‘ইডিয়ট’, টলিউডি ‘হিরো’-র পর ঢালিউডে নির্মিত হয় একই গল্পের ছবি। সেসূত্রে কপি ছবি।

রোমান্স, অ্যাকশন, ড্রামা, কমেডি, ভালো ফিনিশিং সব মিলিয়ে উপভোগ্য ছবি।

‘ফার্স্ট ইয়ার ড্যাম কেয়ার’ জাতীয় কলেজ পড়ুয়া ছেলে শাকিব খানের ভবঘুরে জীবনে তেমন কোনো লক্ষ্য নেই। হাবিলদার বাবা প্রবীরমিত্র চায় ছেলে পুলিশের চাকরি করুক কিন্তু ছেলের তেমন কোনো তাড়া নেই। একদিন ঘটনাক্রমে বখাটেদের আঘাতে রক্তাক্ত হলে সাহারার সাহায্যে হাসপাতালে নেয়া হয় শাকিবকে। নিজে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচায়। শাকিব জানতে পারে একটা মেয়ে তাকে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচিয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসে তাকে দেখার পর প্রথমেই ‘আই লাভ ইউ’ বলে কিন্তু বেঁকে বসে সাহারা। মেনে নেয় না। শুরুটা এভাবেই।

রোমান্সের আগেভাগে কিছুটা ড্রামা চলে আসে। সাহারা অ্যাজ ইউজুয়্যাল শাকিবকে পরীক্ষা করে তার জন্য সে কি করতে পারে দেখার জন্য। সাহারার ইচ্ছামতো উঁচু বিল্ডিং থেকে লাফ দেবার স্টেপ নিয়ে আবার ফেরত আসে। ফিরে এসে সাহারাকে বলে-‘আমি লাফ দেয়ার পর মাঝপথে আমার মনে হলো আমি মরে গেলে তোমার কি হবে! আমি মরে গেলে তুমি তো একা হয়ে যাবে।’ কথাগুলো প্রথমে সাহারার মন গলাতে না পারলেও কিছুদূর যাবার পর শাকিবের কথাগুলো রিমাইন্ড করে। তারপর কি ভেবে পেছন ফিরে শাকিবকে জড়িয়ে ধরে। একটা ড্রামাটিক লাভ স্টোরি শুরু হয়। দর্শকের কাছে উপভোগ্য ছিল এ সিকোয়েন্সটি।

দ্বন্দ্ব না থাকলে বাণিজ্যিক ছবির কোনো আনন্দই নেই। সাহারার ভাই পুলিশ কমিশনার মিশা সওদাগরের সাথে শাকিব খানের ননস্টপ দ্বন্দ্ব লেগে থাকে। নায়িকার ভাইয়েরা নায়কের শত্রু হয়ে ওঠে যে ধারাতে সেটাই ঘটে। সাদেক বাচ্চু শাকিবের পক্ষে থাকে। শাকিব-মিশা দেশীয় চলচ্চিত্রে নায়ক-খলনায়ক রসায়নে অন্যতম জনপ্রিয়। এ ছবিতে পুরোদমে ছিল তাদের দ্বন্দ্বের রসায়ন। শাকিবকে ধরে এনে পেটানোর সময় মিশাকে ক্ষেপাতে শাকিবের ‘সমন্ধি সাহেব’ বলে মজা করাটা দারুণ ছিল। শাকিব-সাহারাকে আলাদা করতে মিশা সবরকম চেষ্টা করে। হ্যাপি এন্ডিং দিয়েই যদিও ছবি শেষ হয়।

গানগুলোর মধ্যে ‘চুপি চুপি কথা বলো না’ চমৎকার রোমান্টিক গান। ‘নিঃশ্বাস আমার তুমি’ টুটুলের কণ্ঠে জমজমাট। এছাড়া ‘আমি যে তোমারই প্রেমেতে পড়েছি’ গানটিও সুন্দর।

শাকিব খানের ক্যারিয়ারে বর্তমানে বড় বাঁক আসলেও তার সমালোচিত ছবিগুলোর ভেতর থেকে ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ একটা মানসম্মত কাজ। এ ছবিটি মূলত মানের দিক থেকে তার ছবির একটা তফাত করতে সাহায্য করে।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন