Select Page

আজিজুর রহমান বুলি: একজন আদর্শ পরিচালক

আজিজুর রহমান বুলি: একজন আদর্শ পরিচালক

আজিজুর রহমান বুলি ঢালিউডের বাণিজ্যিক ছবির আদর্শ একজন পরিচালক। তাঁর বেশকিছু ছবি বিগবাজেটে বিদেশে নির্মিত হয়েছিল এদিক থেকে তিনি তাঁর সময়ের থেকে এগিয়ে ছিলেন। সেসব ছবির নির্মাণ আশি/নব্বই দশকের প্রেক্ষাপটে আধুনিক ছিল।

জন্ম ১ জুলাই, ১৯৪৭। সাবেক স্ত্রী অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান, ছোটভাই নায়ক মাহমুদ কলি।

উল্লেখযোগ্য ছবি : (পরিচালক) দেশ বিদেশ, শেষ উত্তর, রঙিন প্রাণসজনী, নেপালী মেয়ে, লাভ ইন সিঙ্গাপুর, শ্বশুরবাড়ি, বন্ধু যখন শত্রু, বাপবেটা ৪২০, বাপের বেটা ও লালু সর্দার।  (প্রযোজিত) নাচের পুতুল, হিম্মতওয়ালী, মতিমহল, জুলি, সমস্যা ও শাদী মোবারক।

প্যাটের ক্ষুধায় ইচ্ছা করে গাড়ির নিচে মারি ঝাঁপ/ ক্যান যে বিদ্যাশে আইলাম বাপরে বাপ— ‘দেশ বিদেশ’ ছবির অত্যন্ত জনপ্রিয় গান। কমেডিয়ান টেলি সামাদের লিপেও জনপ্রিয় গান যেটি রেডিওতে বেশ বাজানো হত। এ ছবিতে আমেরিকাকে দেখানো হয়েছে পরিকল্পনামাফিক। গল্পের ক্ষেত্রটাই ছিল আমেরিকায় প্রবাস জীবন তুলে ধরা এবং এর মাধ্যমে সেই সময়ে সেখানকার জীবনযাপন, কর্মক্ষেত্র উঠে এসেছে। অভিনেত্রী অঞ্জনার লিপে এ গানটির কথা, সুর, গায়কী, দৃশ্যায়ন সব ছিল আধুনিকতায় ভরা – ‘আমেরিকা মাই লাভ আমেরিকা/ জীবন এখানে দ্রুতগামী/ তারই তালে তালে চলছি আমি চলি আমি।’

‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে /রইব না আর বেশিদিন তোদের মাঝারে’— এন্ড্রু কিশোরের সেরা পাঁচ গানের মধ্যে এটি একটি। ‘রঙিন প্রাণসজনী’ ছবির এ গানটি ছিল পরিচালক বুলি-র ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা অর্জন। টলিউডের তাপস পাল ছিল ছবির নায়ক বিপরীতে অঞ্জু ঘোষ ও ইন্দ্রানী হালদার।

বিদেশে চিত্রায়িত বিগ বাজেটের ছবির মধ্যে ‘দেশ বিদেশ’ পরিচালকের প্রথম ছবি এর বাইরে আরো দুটি উল্লেখযোগ্য ছবি হলো ‘লাভ ইন থাইল্যান্ড’ ও ‘নেপালী মেয়ে’। ববিতার ক্যারিয়ারেও আলোচিত দুটি ছবি ছিল।

শাবানার বিপরীতে ইলিয়াস কাঞ্চনকে একমাত্র আজিজুর রহমান বুলি-ই দেখিয়েছেন ‘শেষ উত্তর’ ছবিতে। এ ছবিটিও সুনির্মিত। ইলিয়াস কাঞ্চন ও এটিএম শামসুজ্জামানের অভিনয়ের লড়াই দেখার ছবি ছিল ‘বাপবেটা ৪২০’। কমেডি ছবি নির্মাণেও পরিচালকের দক্ষতা ছিল অসাধারণ। তাঁর ‘শ্বশুরবাড়ি’ ছবিটি ছিল ঢালিউডের কমেডি ছবির মধ্যে অন্যতম সেরা একটি ছবি। এ ছবিতে এটিএম শামসুজ্জামানকে সাধু ভাষায় কথা বলিয়ে পরিচালক ভরপুর বিনোদন দিয়েছেন। 

আশি/নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি-র ক্যারিয়ার গড়ার পেছনে আজিজুর রহমান বুলি-র অবদান আছে। মাহমুদ কলিকে তিনি রোমান্টিক, কমেডি, ফ্যামিলি ড্রামা সব ছবিতেই মানিয়ে নিতেন। এটা ছিল পরিচালকের গুণ।

আজিজুর রহমান বুলি অসুস্থ অবস্থায় ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর নির্মিত ছবিগুলো বাণিজ্যিক ছবি নির্মাণের কলাকৌশলের দিক থেকে পরবর্তী নির্মাতাদের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন