Select Page

শাকিব খান অনির্দিষ্টকাল বয়কট

শাকিব খান অনির্দিষ্টকাল বয়কট

শাকিব খানের সঙ্গে আর কাজ করবেন না ঢালিউডের পরিচালকরা। তার সঙ্গে কোনো চলচ্চিত্রের শুটিং ও ডাবিংয়ের কাজেও অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিসহ সংশ্লিষ্টরা। শনিবার রাজধানীর এফডিসির চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অদ্য ২৯-৪-২০১৭ তারিখে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল কুশলীদের সংগঠনসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, যেহেতু চিত্রনায়ক শাকিব খান দেশের সমগ্র চলচ্চিত্র পরিচালকদের অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করে জাতীয় দৈনিকসহ  মিডিয়াতে বক্তব্য দিয়েছেন এবং বর্তমানেও একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন সেহেতু চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কুশলীরা মনে করেন, প্রকারান্তরে তিনি দেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল কুশলীকে অপমান এবং তুচ্ছজ্ঞান করছেন। কারণ পরিচালকই হলেন ‘ক্যাপ্টেন অব দ্য শিপ’। তাঁদের অপমান করা মানে কুশলীদের অপমান করা। তাই আজ থেকে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য শাকিব খানের সঙ্গে কোনো চলচ্চিত্রের শুটিং ও ডাবিংয়ের কাজে অংশগ্রহণ করবেন না। উল্লিখিত বিষয়টি সকলকে অবগত করা হলো।’

সমিতির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শাকিব খানের সঙ্গে চলচ্চিত্রের কাজ করায় রংবাজ চলচ্চিত্রের পরিচালক শামীম আহমেদ রনীর সদস্য পদ বাতিল ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিল্পী সমিতি ও প্রযোজক সমিতি ছাড়া সবাই পরিচালক সমিতির সিদ্ধান্তে একাত্মতা ঘোষণা করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের যৌথ সভার সিদ্ধান্তের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন চলচ্চিত্র পরিচালকরা। এতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ও মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, ফিল্ম এডিটরস গিল্ডের সভাপতি আবু মুসা দেবু, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র গ্রাহক সংস্থার সভাপতি রেজা লতিফ, চলচ্চিত্র ফাইট ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরমান, চলচ্চিত্র নৃত্য পরিচালক সমিতির সভাপতি মাসুম বাবুল, সিডাবের সভাপতি এস আই ফারুক, চলচ্চিত্র স্থিরচিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি জিডি পিন্টু, চলচ্চিত্র উৎপাদন ব্যবস্থাপক সমিতির সভাপতি আবদুর রউফ সরকার, চলচ্চিত্র ভাই ভাই অ্যাকশন সঞ্চয়ী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মো. রাজু আহমেদ, চলচ্চিত্র উৎপাদন সহকারী ব্যবস্থাপক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাহাদুর মিয়া, চলচ্চিত্র অঙ্গসজ্জাকর সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম, চলচ্চিত্র রূপসজ্জাকর সমিতির সভাপতি মো. সামসুল ইসলাম, চলচ্চিত্র লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সানি আলম।

বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘শাকিব খান বলেছেন, অ্যাসোসিয়েশন কী বলল না বলল তাতে আমার কিছু আসে-যায় না। শাকিব যদি স্বীকার করেন, আমার দেশের টেকনিশিয়ানরা ভালো কাজ করেন। তবেই আমরা তার সঙ্গে কাজ করব। শাকিব বলছেন, আমিই (মহাসচিব) নাকি সব করেছি। এখানে পরিচালক সমিতির মহাসচিব আমি। এখানে আমাকে সব কিছুতে সাইন করতে হবে। এটা আমার সাংবিধানিক দায়িত্ব। আমি ছাড়া ১৭ জন আছেন। সবাই এই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন। আমার ব্যক্তিগত কিছু হলে তাঁরা একমত হতেন না।’

সংবাদ সম্মেলনে একাধিক পরিচালক শাকিব খানের বিরুদ্ধে শিডিউল ঘোরানো এবং তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘শাকিব খানের নিয়ন্ত্রণে আসা দরকার। এতে তিনি নিজেও ভালো থাকবেন, আমরাও ভালো থাকব। তাঁর থেকে অনেক বড় হিট নায়ক ছিলেন রিয়াজ। কিন্তু শাকিব খানকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি সেটার মূল্যায়ন করেননি। এখন তিনি দেশের টেকনিশিয়ানদের মূল্যায়ন করছেন না। তিনি সীমার বাইরে চলে গেছেন। বলেন, দেশের এ ড্যান্স ডিরেক্টর নেব না, ইন্ডিয়ার ড্যান্স ডিরেক্টর নেব। এই এডিটর নেব না, ইন্ডিয়ার নেব। শাকিব খানকে ইন্ডিয়া তৈরি করে নাই। আমরা তৈরি করছি। তিনি কাফনের কাপড় পইরা, আমাদের নিয়া পুলিশের লাঠিপেটা খাওয়াইলেন। অথচ নিজে…। আমরা তার সুস্থ চিন্তা আশা করি।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরিচালক এফ আই মানিক তিন কোটি টাকা খরচ করে ছবি বানান। সেই ছবিটা শাকিব খান পাঁচ বছরে শেষ করেন। এফ আই মানিকের পথে বসার অবস্থা। শাকিব খান অনেক এফ আই মানিককে পথে বসিয়েছেন। আর কত এফ আই মানিককে পথে বসাবেন?

সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘শাকিব খান কলকাতার সিনেমার ছবিতে কাজ করুক, হলিউডে করুক, বলিউডে করুক আমাদের আপত্তি নাই। আপনি ওইখানে কাজ করার জন্য আমাদের অবজ্ঞা করবেন এটা হতে পারে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শাকিব খান যে পত্রিকায় বক্তব্য দিয়েছেন সেখানে ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য দিক, আমাদের কাছে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। সন্তান ক্ষমা করলে বাবা-মা তো ক্ষমা দেন।

সূত্র : এনটিভি অনলাইভ


মন্তব্য করুন