Select Page

অশ্লীল নাটক নির্মাতাদের নিষিদ্ধের দাবি রিয়াজের

অশ্লীল নাটক নির্মাতাদের নিষিদ্ধের দাবি রিয়াজের

এফডিসিতে সন্ধ্যার পর গেলে ভয় লাগে। এসবের পেছনে দায়ী অশ্লীলতা। এখন নাটকেও অশ্লীলতা ঢুকে গেছে। আমি সবসময় অশ্লীলতার বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছি, প্রতিবাদ মিছিল মিটিং করেছি— এসব কথা অভিনেতা ও ওটিটি প্লাটফর্ম আইস্ক্রিনের প্রকল্প পরিচালক রিয়াজের। গত ১৭ জুন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘টেলিভিশন ও ডিজিটাল মাধ্যমে নাটকে অশ্লীলতার আগ্রাসন ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অংশ নিয়ে বলেন তিনি।

অশ্লীলতা দূর করতে পরিচালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রিয়াজ বলেন, এই দায় সবার। আপনাদের সবাই মিলে এটা বন্ধ করতে হবে। সরকার বন্ধ করতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। আমরা যারা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত তাদেরই এই উদ্যোগ নিতে হবে।

রিয়াজ বলেন, নাটকে সরকারি হস্তক্ষেপের আগে পরিচালকদের হস্তক্ষেপ বেশি দরকার। যারা অশ্লীলতা ছড়ায় তাদের আটকাতে হবে। কীভাবে অশ্লীলতা ছড়ায় আমি জানি না। তবে অশ্লীলতা নিয়ন্ত্রণে দরকার হলে আমাদের কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে।

টেলিভিশন নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি অনন্ত হিরার সভাপতিত্বে এই মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আরো ছিলেন অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকী, নাট্যকার সংঘের সভাপতি হারুন রশীদ, প্রযোজক মনোয়ার পাঠান প্রমুখ।

পরে এক সাক্ষাৎকারে এই নায়ক বলেন, সিনেমা হলে যাওয়ার বিশ্বাস হারিয়েছে মানুষজন। পরিবার নিয়ে সিনেমা হলে যেতে পারে না। কেননা সিনেমা হলে গেলেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অপ্রস্তুত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যখন একটি পরিবার সিনেমা হল বিমুখ হয়ে যায় তখন সেই শিল্প টিকিয়ে রাখা যায় না।

সিনেমা হল বিমুখ পরিবার বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন নাটককে বেছে নিয়েছে। ‘নাটক ভালো চলছিল’ উল্লেখ করে রিয়াজ বলেন, আমি বেশকিছু নাটকে অনেক তৃপ্তি নিয়ে অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু সেই নাটকেও অশ্লীলতা ঢুকে গেল। এখন ইউটিউবের জন্য যে নাটক নির্মিত হচ্ছে তাতে ভয়াবহভাবে অশ্লীলতা ঢুকে গেছে। ওটিটি প্ল্যাটফরমের সিরিজে অশ্লীলতা ঢুকে গেছে। এখন পরিবারকেন্দ্রিক বিনোদন মাধ্যমও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অশ্লীলতার কারণে ড্রয়িংরুমের বিনোদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সভা সেমিনার করে এসব বন্ধ করা যাবে না। এসব পদক্ষেপ নিয়ে বন্ধ করতে হবে।

এসব কনটেন্টের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে বলেন, হয়তো, অশ্লীল নাটক বানানো হচ্ছে কারণ এক শ্রেণীর মানুষ অশ্লীলতা পছন্দ করেন। ভিউ, লাইকের কারণে প্রজন্ম অশ্লীলতার চর্চা করছে। কিন্তু এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। অশ্লীলতা দীর্ঘস্থায়ী হবে না, এইসব অশ্লীল নাটক সিরিজে অশ্লীলতা- এক সময় অরুচি তৈরি করবে; সামাজিক বন্ধন গুলোকে ভেঙে ফেলবে। দেশের সংস্কৃতিকে পঙ্গু করে ফেলবে।

এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে রিয়াজ বলেন, গতকাল এক অভিনয়শিল্পীকে (জেবা) নিষিদ্ধের কথা শুনলাম। সামাজিকভাবে সেই মেয়েটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদিও আমি জানি না তার অপরাধ কী? অশ্লীল নাটক নির্মাণ হচ্ছে, কিন্তু একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে কি এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে? ডিরেক্টর গিল্ডস এটা করতে পারল, কিন্তু যারা অশ্লীল নাটক বানাচ্ছে এমন ৫ জন পরিচালককে নিষিদ্ধ করতে পারল না? এটা করতে পারলে তো অশ্লীল নাটক বানানোর প্রতি উৎসাহ কমে যেত বাকি পরিচালকদের। অশ্লীল নাটক নির্মাণকারীদের নিষিদ্ধের ব্যবস্থা নিক সংগঠন।

আরো বলেন, যারা পরিচালনায় আসছে, তাদের নিয়ে নানা কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। তাদের নির্দেশনা বিষয়ক ডিরেক্টোরিয়াল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। যেহেতু ওয়েব মাধ্যমটা এখন বিশাল, সেন্সর করা সেভাবে সম্ভব না। সাংগঠনিকভাবে যতটুকু করা যায় সেভাবেই শুরু করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবেও সচেতন হতে হবে।

নাটকের অশ্লীলতা দূর হলেই অশ্লীলতা দূর হবে? এমন প্রশ্নে রিয়াজ বলেন, আসলে আমাদের সমন্বিতভাবে অশ্লীলতা দূর করার প্রয়াস চালাতে হবে। নাটকের অশ্লীলতা দূর করলেই যে অশ্লীলতা দূর হবে এ কথা বলা যায় না। তবে নাটকে অশ্লীলতা বন্ধ করা জরুরি। অন্যদিকে সামাজিক মাধ্যমেও অশ্লীলতা ছড়ায়। একটা সময় ফেসবুক অশ্লীল কন্টেন্ট ধরতো। রিলস চালু হওয়ার পর ফেসবুকও অশ্লীলতার ভাণ্ডার হয়ে গেছে। এসবও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নাহলে সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যম্ভাবী।

সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন ও কালের কণ্ঠ


মন্তব্য করুন