Select Page

‘আমার আব্বা কোথায়?’

‘আমার আব্বা কোথায়?’

ভারতের মুম্বাইয়ে এ মাসের শেষ দিকে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে নির্মিতব্য ‘বঙ্গবন্ধু’ সিনেমার শুটিং শুরু হচ্ছে। এর আগে শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে তার বাসভাবনে যান সিনেমাটির কয়েকজন অভিনয়শিল্পী।

ভারতীয় নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় এ সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করবেন আরিফিন শুভ। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দু-আড়াই ঘণ্টা ছিলাম। ওই সময়ে তার সঙ্গের স্মৃতি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনুপ্রেরণীয় কিছু স্মৃতি থাকবে। উনি একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মানুষ। কিন্তু ওনার সঙ্গে আলাপ করলে বুঝা যায় কতটা সহজ-সরল।’

‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তো ওনার প্রজ্ঞা, জ্ঞান অতুলনীয়। কিন্তু এর বাইরে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেও ওনার রসবোধ, ব্যবহার অসাধারণ। সত্যিই আমি মুগ্ধ।’

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে শুভ বলেন, ‘ওনাদের সঙ্গে এবারের আলাপটা অনেকটা পারিবারিক আবহে হয়েছে। তারা দুজন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক স্মৃতিচারণ করেছেন। বই পড়ে কিংবা অন্যের মুখে শুনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক কিছু জানলেও ওনার সন্তানের (শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা) মুখে শোনা—এ অনুভূতি অন্যরকম।’

বিকেল ৩টা থেকে আড়াই ঘণ্টা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে শুভ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নুসরাত ফারিয়া, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ ২০ জন শিল্পী।

সাক্ষাৎ শেষে সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে কথা বলছিলেন। তখন শুভ একটু দূরে ছিলেন। তখন প্রধানমন্ত্রী তাকে ডাক দেন। এ নিয়ে শুভ বলেন, করোনার কারণে আমি ভিড়ে এড়াতে দূরে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন তিনি বলেন, ‘আমার আব্বা কোথায়?’ এমন একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের এধরণে সেন্স অব হিউমার সত্যিই অতুলনীয়।

আরও উপস্থিত ছিলেন প্রার্থনা ফারদিন দিঘী। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করবেন। শিশুশিল্পী বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এ তারকা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভীষণ খুশি হয়েছেন এটা জেনে যে আমি তার মায়ের ছোট বেলার চরিত্রে অভিনয় করছি। ব্যক্তিগতভাবে যখন কথা হয়েছিল তখন মূলত তার কাছ থেকে তার মায়ের কাহিনীই শোনা হয়েছে। তার মা যখন ছোট তখন তো তার জন্ম হয়নি। তারপরও দাদীর মুখে মায়ের সম্পর্কে যা শুনেছিলেন সেটাই বলেছেন আমাকে। তার মার কেমন ব্যক্তিত্ব, কীভাবে কথা বলতো সেগুলোও বললেন।’

প্রধানমন্ত্রী দিঘীকে এসব কথা বলার পাশাপাশি চরিত্রটি ভালোভাবে উপস্থাপন কারার কথা পরামর্শ দেন।

‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিং শুরু হবে ২৫ জানুয়ারি থেকে ভারতের মুম্বাইয়ে। এর আগে ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পীদের একটা অংশ ভারত যাবেন।

এ দিকে প্রস্তুতি সম্পর্কে শুভ জানান, ভারতে গিয়ে ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি তারা শেষ পর্যায়ের ওয়ার্কশপে অংশ নিবেন। এর আগে দেশে বসে তিনি বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা বিভিন্ন বই, আর্কাইভে থাকা ওনার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও ওনাকে কাছ থেকে দেখেছেন এমন মানুষদের সাক্ষাৎকার দেখছেন। মোটামুটি এভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করছেন ‘বঙ্গবন্ধু’ চরিত্রের জন্য।

প্রথমে বাংলাদেশে ছবিটির শুটিং করার কথা ছিল। তবে করোনায় সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। গত ১৭ মার্চ এফডিসিতে আয়োজন করা হয়েছিল মহরত। করোনার কারণে দ্রুত তা বাতিল করতে হয়।

মুম্বাইয়ে প্রথম লটের শুটিং চলবে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় লটের জন্য কিছু দিনের বিরতি থাকবে। তারপর বাংলাদেশে শুটিং হওয়ার কথা রয়েছে।

ছবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবেলার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া ও বড়বেলার চরিত্রে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। এছাড়া তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে ফেরদৌস আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করবেন নুসরাত ইমরোজ তিশা।

অন্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোয় দেখা যাবে খায়রুল আলম সবুজ (লুৎফর রহমান), দিলারা জামান (সাহেরা খাতুন), সায়েম সামাদ (সৈয়দ নজরুল ইসলাম), শহীদুল আলম সাচ্চু (এ কে ফজলুল হক), প্রার্থনা দীঘি (ছোট রেনু), রাইসুল ইসলাম আসাদ (আবদুল হামিদ খান ভাসানী), গাজী রাকায়েত (আবদুল হামিদ), তৌকীর আহমেদ (সোহরাওয়ার্দী), সিয়াম আহমেদ (শওকত মিয়া) ও মিশা সওদাগর (জেনারেল আইয়ুব খান)।

ছবিটি ২০২১ সালেই মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা বাংলাদেশ ও ভারতের।

সূত্র: সারাবাংলা ও মানবজমিন


মন্তব্য করুন