Select Page

শাবানা-আলমগীর জুটির রেকর্ডের ধারে-কাছেও নেই প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা

শাবানা-আলমগীর জুটির রেকর্ডের ধারে-কাছেও নেই প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা

সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে জুটি প্রথা সেই শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠিত। দর্শক বারবার তাদের প্রিয় তারকাদের একসঙ্গে দেখতে চেয়েছেন। নির্মাতারাও তাকে সায় দিয়েছেন। এভাবে জুটি হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন আমাদের শাবানাআলমগীর জুটি। কিন্তু সেই কথা অনেকেই জানেন না। যেমন পশ্চিমবঙ্গের নায়ক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

সম্প্রতি এ নায়ক জানান, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে ৫০তম সিনেমায় জুটি হতে যাচ্ছেন। এমন রেকর্ড নাকি পৃথিবীর আর কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে নেই।

দুর্গাপূজার এক অনুষ্ঠানে নতুন ছবির বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আমি আর ঋতুপর্ণা ৫০তম সিনেমায় জুটি বাঁধছি। এখনো সবার কাছে এই খবর পৌঁছায়নি। আমার মনে হয়, ভারতবর্ষ বা গোটা পৃথিবীতে কোনো নায়ক-নায়িকা একসঙ্গে ৫০টা সিনেমায় অভিনয় করেননি। আপনাদের ভালোবাসা আর আশীর্বাদের জন্যই এই পথচলাটা সফল হয়েছে।’

এর আগে নিজেদের ৪৯তম সিনেমা ‘দৃষ্টিকোন’ মুক্তির সময় প্রসেনজিৎ বলেছিলেন, আরেকটি সিনেমা করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাবেন তারা।

অথচ ঢাকাই সিনেমায় শতকের রেকর্ড গড়েছেন শাবানা-আলমগীর জুটি। এ জুটির ১০০তম সিনেমা ছিল মনোয়ার খোকন পরিচালিত ‘সংসারের সুখ-দুঃখ’। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। এর বছর তিনেক পর শাবানা সিনেমা থেকে অবসর নেন। বলা হয়ে থাকে, এ জুটির মোট ছবির সঙ্গে ১০৬ থেকে ১২৬টির মধ্যে।

শাবানা-আলমগীর জুটির প্রথম সিনেমা ‘দস্যুরাণী’, ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া পরিচালিত ছবিটি। তাদের শেষ ছবি ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’, মুক্তি পায় ২০০০ সালে। যার পরিচালক আজিজুর রহমান। এটি শুধু জুটি হিসেবেই নয় শাবানার মুক্তি পাওয়া শেষ ছবিও।

জুটি হিসেবে শাবানা-আলমগীর প্রতিষ্ঠা পান আশির দশকে। ১৯৮৩ সালে মুক্তি পায় এ জে মিন্টুর ‘মান সন্মান’। অবশ্য এর আগে ‘সাম্পানওয়ালা’, ‘মনের মানুষ’, ‘মধুমিতা’, ‘অতিথি’ ও ‘মনিহার’ হিট হয়। কিন্তু ‘মান সন্মান’ ছিল জুটি হিসেবে গ্রহণযোগ্যতার চূড়ান্ত পরীক্ষা। আশি দশকের মধ্যবর্তী থেকে নব্বই দশকের শেষ অবধি এ জুটি ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তারা ছিলেন সামাজিক সিনেমার আদর্শ উদাহরণ। 

এ জুটির উল্লেখোগ্য ছবি আজিজুর রহমানের ‘সাম্পানওয়ালা’, এ জে মিন্টুর ‘মান সম্মান’, ‘অন্যায় অত্যাচার’, ‘অশান্তি’, ‘লালু মাস্তান’, ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘সত্য মিথ্যা’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘বাংলার বধু’,   দীলিপ বিশ্বাসের ‘অস্বীকার’, ‘অপেক্ষা’, সাইফুল আজম কাশেমের ‘ধন দৌলত’, ‘স্বামীর আদেশ’, এম এ মালেকের ‘হাসান তারেক’, সুভাষ দত্তের ‘সকাল সন্ধ্যা’, আমজাদ হোসেনের ‘ভাদ দে’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, কামাল আহমেদের ‘ব্যথার দান’, ‘গরীবের বউ’, মতিন রহমানের ‘রাঙ্গা ভাবী’, আজহারুল ইসলামের ‘মরণের পরে’, আলমগীর কুমকুমের ‘মায়ের দোয়া’, কাজী মোরশেদের ‘সান্তনা’, বেলাল আহমেদের ‘বন্ধন’, জামশেদুর রহমানের ‘ননদ ভাবী’, মোতালেব হোসেনের ‘শাসন’, গাজী মাজহারুল আনোয়ারে ‘স্নেহ’, শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘ঘাতক’, ‘নর পিশাচ’, মনোয়ার খোকনের ‘সংসারের সুখ দুঃখ’, ‘একটি সংসারের গল্প’, সোহানুর রহমান সোহানের ‘বিদ্রোহী কন্যা’, ‘মা যখন বিচারক’, মালেক আফসারির ‘দুর্জয়’, নায়ক আলমগীর পরিচালিত ‘নির্মম’।

অন্যদিকে ঢাকাই সিনেমার আরেক জুটি শাকিব খান-অপু বিশ্বাস অর্ধশতকের ঘর পার করেন মাত্র কয়েক বছরে। এক সময়ের বাস্তব জীবনের এই জুটির সিনেমার সংখ্যা ৭০টির মতো। এছাড়া ব্যক্তিগত জটিলতার কারণে কয়েকটি সিনেমা অসমাপ্ত রয়ে গেছে।


মন্তব্য করুন